এইতো দু’দিন আগেই মাননীয় মডারেটর “কাল্পনিক_ভালোবাসা” ব্লগারদের কপিরাইটিং স্কিল দেখতে চাইলেন। গ্যাসের চুলোর বদলে কাঠের চুলোয় মজার রান্নার লোভ দেখিয়ে ব্লগারদের আমন্ত্রন জানালেন কিছু লেখার জন্যে।
“কাল্পনিক_ভালোবাসা”র সেই পোস্টের মন্তব্যে লিখেছিলুম – “নিজেকে নিয়ে কিম্বা বিশ্বের তাবৎ বিষয় নিয়ে ভাবার জন্যে আপনার একখানা মন আছে। সে ভাবনাকে প্রকাশের জন্যে আপনার একখানা মুখ আছে। আর শক্তিশালী যেটা আছে সেটা আপনার লেখার হাত।
আপনার এসব ভাবনা প্রকাশের জন্যে আপনার যদি চুলকানী ওঠে তবে ধারনা করি, সম্ভাব্য সকল উপায়ে আপনি চুলকোতে চাইবেন। লেখাই হলো সে চুলকানীর সেরা অস্ত্র। আর ব্লগ হলো আপনার লেখার সেই শ্লেটখানি।“
অবশ্য “কাল্পনিক_ভালোবাসা”র এই “চুলকানী” শব্দটিতে আপত্তি আছে।
অথচ লেখার চুলকানী বাড়াতে “রাজীব নুর” বাংলা একাডেমী সহ অনেককে তো বলেই বসলেন, বছরান্তে সেরা ব্লগারকে পুরস্কৃত করতে। ভাবতে পারেন বাংলা একাডেমীর পুরস্কার! এ সুযোগ হাতছাড়া করবে কোন পাগলে?
“গেঁয়ো ভূত” আবার আমাদের চমৎকার সুন্দর সব চিন্তা-ভাবনা গুলো বাংলা ভাষার সেরা ডিজিটাল মাধ্যমে একদম বিনা খরচে প্রকাশ করতে চাইলে, পরামর্শ দিলেন ব্লগে লিখতে।
তাহলে তো লিখতেই হয়! কিন্তু লিখতে গিয়ে লতা মুঙ্গেশকরের একখানা গান মনে পড়লো। উনি গেয়েছেন – “কি লিখি তোমায়….”
থেমে গেলুম। আসলেই তো! কি লিখি ?
লেখা তো অনেক কিছু নিয়েই লেখা যায়। এখনকার গরম টপিক, হিরো আলমের অদম্য কাহিনী নিয়ে লেখা যায়! লেখা যায়, খেলা হওয়া নিয়ে! উন্নয়নের কথাও লেখা যায়! লেখা যায় ঋন খেলাপী আর টাকা পাচারকারীদের নিয়ে, এমনকি দ্রব্যমূল্যের উল্লম্ফন নিয়ে আম পাবলিকের জান লবেজান হওয়ার কথা নিয়েও।এসব নিয়ে তো সবাই-ই কমবেশী এখানে সেখানে লিখছেনই! আমি এসব নিয়ে নতুন আর কি লিখবো ? ব্লগে লেখা কী অতো সহজ? ব্লগ তো আর ফেসবুক নয় যে দু’লাইন লিখে দিলুম – “সাজুগুজু করার জন্যে এইমাত্র বাসা থেকে পার্লারে রওয়ানা দিয়েছি।আসছি একটু পরে!” তাতেই লাইক আর লাইক।
কিম্বা অন্যের খানাপিনার পুরোনো কোন্ ছবি দিয়ে লিখে দিলুম “হাই ফ্রেন্ডস! বনানীর অমুক রেস্তোরায় খেতে এসেছি!” এখানেও লাইক আর লাইক।
ব্লগে লিখতে হয় ভেবেচিন্তে। জানতে হয় অনেক কিছু।
তাই ভেবেচিন্তে দেখলুম, “অন্নপূর্ণা মিষ্টান্ন ভান্ডার” নিয়ে কিছু লেখা যায় কিনা! দেবী দূর্গার মতো দশ হাত দিয়ে মিষ্টান্ন ভান্ডার থেকে আম পাবলিককে মিষ্টি বিতরন করার গল্প। নতুবা “উন্মোচনে-উল্লম্ফনে- উচ্চাসনে প্রত্যাশিত নিম্নপতন” নিয়েও লেখা যায়। কিন্তু ব্লগার “সোনাগাজী” প্রায়ই বলেন, সমাজ – রাজনীতি- দেশ নিয়ে সমসাময়িক ভাবনা-চিন্তার কথা লিখতে যা মানুষের উপকারে আসবে। আমি ঐসব নিয়ে লিখলে কি মানুষের বা দেশ ও দশের কোনও উপকারে আসবে? মানুষ কেবল তাতে রম্য খুঁজে পেয়ে হাসতেই পারবেন। অবশ্য “হাসি” নাকি একটি ধন্বন্তরী ঔষধ যার দমকে শরীরের হরমোনগুলি সুসমন্বিত হয় এবং শরীর-মন তাজা হয়ে ওঠে। আমার লেখাতে এটুকু উপকারই মাত্র হতে পারে দেশের, থুড়ি……. ব্লগারদের!
ব্লগার “সাড়ে চুয়াত্তর” সকল শ্রেনীর ব্লগারদের বলেছেন, দু’মাস ঘন ঘন পোস্ট দিতে যাতে পাঠকরা মৌমাছির মতো সে মধুতে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন। তাই কিছু একটা লেখা লিখতেই পারা যায়! তাই লিখতে বসলুম।
অথচ আমার লেখার হাত যে তালা মারা। সেই গত বছরে শেষ লেখাটি লিখেছিলুম, আর লেখা হয়নি। অথচ ব্লগার “কাজী ফাতেমা ছবি” বলেছেন – তালা খুলতে।
চাবি দিয়ে তালা খুলতেই “আচুউক্কা পক্ষীর ছাও” বা “ আচমকা পাখির ছানা”র মতো আসল লেখাটিই আচমকা উড়ে গেলো কোন ফাঁকে ……………
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:২২