somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিঠি

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এখন সন্ধ্যা হবে। মানে বিকেলের শেষ সময় চলছে। সূর্যের আলো লালচে থেকে পাকা আমের মত রং করতে করতে এক সময় টুপ করে ডুবে যাবে। শীতের মৌসুমের শেষ সময় চলছে, সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগে, তবে তা গরম কাপড় পড়বার মত নয়। এই সময় তেলে ভাজা গরম গরম লালচে বেগুনি থেকে ভারী মজা লাগে। দুটি বেগুনি, দুটো আলুর চপ, আর তারপর কম চিনি দেয়া একটা দুধ চায়ে চুমুক দিতেই হোসেনের চিঠি লিখবার ইচ্ছে মাথায় আসল। চিঠি লিখবে।

চিঠি! এই যুগে কেউ চিঠি লেখে?

নিজেকেই যেন প্রশ্ন করে হোসেন। রাস্তায় হাটতে হাটতে যে কয়টা ওই লাল রংয়ের চিঠির বাক্স দেখেছে প্রায় সব কয়টিই অচল, কিছু ভাংগা, কিছুতে তালা ঝুলছে। হৃদয় নিংড়ানো অক্ষরে বোনা চিঠি পোস্ট করবার জায়গা আর নেই তেমন। অথচ খুব বেশি দিন কি আগের কথা, যখন চিঠি ছিল রাগ, অনুরাগ, ভালোবাসার এক অদ্বিতীয় মাধ্যম? লুকিয়ে ঝুকিয়ে না বলা কথা বলা হোক আর পরিবারের খোজ দেয়া নেয়া হোক, সামনা সামনি যে কথা গুলি বুকের মাঝে জমে থাকত কিন্তু মুখ দিয়ে আর প্রকাশ হোতো না কি অবলীলায় না চিঠিতে বলা হোত। যেন চিঠি যেন শুধু মাত্র মন, কাগজ, আর কলম ই না, যেন পরম বন্ধু। কথা বলবার যে জড়তা, যে সংকোচ, যে আড়স্টতা, কলমের হাত ধরে কাগজের সেই সরল সাদা বুকে, অক্ষরের পর অক্ষর সাজিয়ে, যেন যাকে লিখছি সে সাদা পৃসঠার ঠিক ওপারে, যেন তার মুখ দেখা যাচ্ছে যেভাবে মন দেখতে চায় মুখখানি সেভাবেই, কোনো বক্তব্যহীন, শুধু অভিব্যাক্তি নিয়ে চেয়ে আছে। না বলা কথা গুলি যেন অন্তর থেকে বেরিয়ে এসে কলমের কালিতে সেই সাদা পৃসঠায় লেখা নামে রুপ নেয়। আহা কি আবেগ জড়ানো সেই লেখা।

কখনও আব্দারে ভরপুর তো কখনো অভিমানে কখনো প্রচন্ড হতাশায়, কখনো পরম পাবার আশায়, কখনো তীব্র আকাংখায়, কখনো শেষ ভরসায়, কখনো বা তা প্রথম চিঠি কখনো বা শেষ চিঠি। কখনো তা বহুল আদান প্রদানে এক ইতিহাস, অথবা কোন কিছুর দলিল। কি লিখব কি লিখব, কিভাবে লিখব, কি ভাবে শুরু করব, কি নামে লিখব, কোন শব্দটা যুতসই, বানান ভুল হোলো না তো? বেশি ছোট হয়ে গেল না তো আবার বেশি বড় হয়ে গেল না তো? কত আশংকায় পৃসঠা ছিড়ে ছিড়ে ফেলা, অনেক সাধনার পর মন মত একটা চিঠি লিখে ফেলা। প্রিয়জনের হাত পর্যন্ত পৌছানোর এক্টা বুক দূরুদুরু ভাব এরপর উত্তরের আশায় দিন গুনতে থাকা। চিঠি পেয়ে কি ভাবল, কি উত্তর আসবে, আদৌ উত্তর কি দেবে? এ আরেক উত্তেজনা। যখন চিঠির প্রতিউত্তরে চিঠি আসে, কখনো এক নিমিষেই পড়ে ফেলা, অথবা সযত্নে রেখে একাকী করে নিজেকে ধীরে ধীরে পড়ে ফেলা, বিশাল ব্যাপার। এ শুধু চিঠি লেখা লিখিই নয়, এর সাথে আদ্যোপান্ত যে কত কিছু আছে তা প্রদান আর আদানকারী ই জানে৷ বড্ড ইচ্ছে করছে, চিঠি লিখবে হোসেন।

প্রাপক নেই কেউ ই, তবু লিখবে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫৫
১২টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×