বাঙালি সম্ভবত একমাত্র জাতি যারা নিজেদের গালি দেয়ার জন্য একটা গালি আবিষ্কার করেছে। "হুজুগে বাঙালি জাতি" তকমা দেয়ার আগে নিজেরা কোনো গোষ্ঠী বা জাতি সেটা পরিষ্কার করা উচিত। প্যারিসের ঘটনায় সারা বিশ্বের টনক নড়েছে আর আমাদের তর্ক করার নতুন একটা বিষয় যোগাড় হয়েছে। অন্যের মতামত কে সম্মান দেখানতো দূর, তাদের হুজুকে মাতাল, আবাল, ছাগু উপাধি দিতে পারলেই কাজ সারা।
অনেক বলছেন যখন রানা প্লাজায়, ফিলিস্তিনি, ইরাকে মানুষ মড়ে তখন তোমাদের চেতনা কোথায় থাকে? আচ্ছা কিছুদিন যাবৎ এল-ক্লাসিকো উপলক্ষ্যে বার্সা-রিয়ালের পতাকা উড়াচ্ছে, কই তখন তো কেউ বলছে না যে আমার দেশের আবাহনী-মোহামেডানের খবর নাই কেন স্পেইনের ক্লাব নিয়ে কেন মাতামাতি করব?
অন্য দেশের মানুষ কি করেছিল তা জানি না কিন্তু ইরাকে হামলার পর সব থেকে মনে কষ্ট পেয়েছিল বাঙালিরা। ফিলিস্তিনে হামলার সময় সবাই #Save_Gaza লিখে পোষ্ট করেছিল, প্রোফাইল পিকচারও বদলেছিল। আর রানা প্লাজায় নিজের জীবন বিপন্ন করে মানুষের কাজ করেছিল। চেতনা বা আবেগ কখনই চুপ ছিল না।
তবে একথাও সত্য নিছক ফ্যাশন মনে করেও অনেকেই নির্বোধের পরিচয় দেয়। ঘটনা না বুঝেই লাফায়। একথাও সত্য গরীবের রক্তের মূল্য অনেক সস্ত্যা। রাজার আত্নীয় মারা গেলে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে আর চাষার পুরো পরিবার মারা গেলেও কারো গায়ে বাঁধবে না।
মধ্যপ্রাচ্যের আর প্যারিসের ঘটনার ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য।
এখন কথা হচ্ছে আমারা যতই প্রোফাইলে পতাকা উড়াই, স্ট্যাটাস প্রসব করি তাতে কি কোন হমালার, কোন মৃতের পরিবারের দু'পয়সা লাভ হবে? বা ঘটনাগুলো বন্ধ হয়ে যাবে? হামলাটা সব সময় নিরীহ মানুষের উপরই হয় তা প্যারিসে হোক, বাগদাদে হোক বা গাজায় হোক। আর সবার রক্তই লাল।
দোষ হয়ত রাজনৈতিক নেতাদের কিন্তু মরতে হয় সাধারণ মানুষকেই। কিন্তু আমাদের মধ্যে হাজার মাইল দুরের ঘটনা নিয়ে এত দ্বন্দ্ব, আমরা কীভাবে দেশের উন্নয়নে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব?
সব থেকে খারাপ হচ্ছে পশ্চিমা মিডিয়া। তারা সম্ভবত আইএস জঙ্গিদের থেকেও নিকৃষ্টতম। তাদের মেহেরবানীতেই আজ শান্তির ধর্ম ইসলামকে সন্ত্রাসের প্রতীক ভাবা হয়। সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম নেই।
সামান্যও যদি ইংরেজি পড়তে জানেন তবে লেখাটা পড়ে নিবেন।
Troll Football পেজ থেকে নেয়া ছবিটা
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৫