কোন সময়ে কোন বয়সে ঠিক কী ধরনের পদ্ধতির মাধ্যমে জন্মনিয়ন্ত্রণ করা উচিত তা নিয়ে অনেকের মনেই রয়েছে প্রশ্ন।কোনো কোনো পদ্ধতির রয়েছে সুনির্দিষ্ট কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া,কোনো কোনোটি আবার কারও জন্য আলাদা সুফল আনতে পারে।তাই যে কোনো পদ্ধতি ব্যবহারের আগে এর উপকারিতা ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ভালো করে জেনে নিন,এটাই আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত কি-না তা বুঝে নিন।
নতুন সংসার বা নতুন শিশু
নতুন দম্পতিদের জন্য স্বল্পমাত্রার জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বেশ ভালো একটি পদ্ধতি।নতুন প্রজন্মের স্বল্পমাত্রার বড়িতে আগের অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া,যেমন মুটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা কম।প্রতিরোধক বা কনডম খুবই স্বাস্থ্যকর,বিশেষ করে যদি কারও সংক্রামক ব্যাধি থেকে থাকে।তবে ঠিকমতো ব্যবহার না করতে পারলে এর ব্যর্থতার হার ১২ শতাংশ।অল্পবয়সী ও নববিবাহিত মেয়েদের আইইউসিডি বা কপারটি ব্যবহার না করাই ভালো।আবার নতুন মা হওয়ার পর বুকের দুধ নিয়মিত খাওয়ালে তিন মাস পর থেকে এবং অনিয়মিত খাওয়ালে তিন সপ্তাহ পর থেকেই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত।কেননা দুটি সন্তানের জন্মের মধ্যে কমপক্ষে দুই বছর ব্যবধান থাকা স্বাস্থ্যসম্মত।ইস্ট্রোজেন হরমোনযুক্ত বড়ি বুকের দুধের পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে।তাই এসময় প্রজেস্টেরন-সমৃদ্ধ মিনিপিল খাওয়া উচিত।
তিন মাস পরপর হরমোন ইনজেকশন বা আইইউসিডি সবই এসময় ব্যবহারযোগ্য।কারও গর্ভপাত হলে পিল বা আইইউসিডি তার পরপরই ব্যবহার করতে বাঁধা নেই।
মধ্যবয়স ও নানা রোগবালাই
বয়স ৩৫-এর ওপর হলে সন্তান ধারণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।এ সময় দীর্ঘমেয়াদি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নেয়াই ভালো।যেমন আইইউসিডি।দুটি সন্তান হওয়ার পর বা আর কোনো সন্তান না চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো লাইগেশনও করিয়ে নেয়া যায়।এই বয়সে উচ্চরক্তচাপ,ডায়াবেটিস,রক্তে চর্বির আধ্যিক ইত্যাদি সমস্যাও বিরল নয়।তাই মধ্যবয়সে বড়ি খাওয়া খানিকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।বিশেষ করে মাসিক বন্ধ হওয়া বা মেনোপজের আগের সময়ে অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।এসময় গর্ভধারণ করা মা ও শিশু দুজনের জন্যই বিপদ ডেকে আনতে পারে।তাই এসময় প্রজেস্টেরনযুক্ত মিনিপিল,আইইউসিডি ব্যবহার করা উচিত।
বয়স ৪০ বছরের ঊর্ধ্ব নারীদের পিল ব্যবহার না করাই ভালো।এছাড়া ধূমপান,হৃদয়রোগ,যকৃতের সমস্যা,রক্তে অনিয়ন্ত্রিত শর্করা বা চর্বি,রক্ত জমাটবাঁধার সমস্যা,স্তন ক্যান্সার ইত্যাদি থেকে থাকলে পিল খাওয়া নিষেধ।এছাড়া সারাবিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ও নিরাপদ পদ্ধতি হলো জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি;যা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে ব্যর্থতার হার মাত্র ০.১ শতাংশ।
যক্ষ্মা বা ছত্রাকনাশক ওষুধ খেলে বড়ির কার্যকারিতা কমে যায়,এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মাত্রা বাড়িয়ে নিতে হয়।