somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষণের শাস্তি মানুষ এবং ইসলাম কি বলে।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রথমতো পর্দা সম্পর্কে আমি কিছু কথা বলবো। যেহেতু পর্দাহীনতার কারণেই নাকি নারীরা ধর্ষণে শিকার। তাই পর্দার কথাটি আগে তুলে ধরি। মহান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন। ’দু’ধরনের এক নারী অন্য পুরুষ। নারী এবং পুরুষ এরা উভয় মানুষ তবে এদের আলাদা আলাদ নাম হওয়ার কারণ হলো- তাদের দেখতে আলাদা, তাদের আছে শাররীক ভাবে পার্থক্য, মানসিক ভাবে পার্থক্য, প্রকৃতিক ভাবে পার্থক্য, এবং তাদের ভূমিকাও আলাদ। আর এই সব পার্থক্য কারণেই তারা মানুষ থেকে হয়েছে নারী পুরুষ, তাছাড়া তারা উভয় মানুষ।

এবার আসি পর্দার বিধান নিয়ে। মহান আল্লাহ তার পবিত্র কোরআনে কি বিধান দিয়েছেন পর্দা সম্পর্কে। সূরা নূর অধ্যয় ২৪, আয়াত ৩০- “বিশ্বাসী পুরুষদের বলো তারা যেনো তাদের দৃষ্টিকে শালীন রাখে, লজ্জাস্থান ঢেকে রাখে, এবং যৌনকাঙ্কাকে সংযত রাখে এতে তাদের শুদ্ধাচারী করে তুলবে। তারা যা করে আল্লাহ সে-সম্পর্কে সম্পুর্ণ ওয়াকিবহাল।” সূরা নূর অধ্যয় ২৪, আয়াত-৩১, “ বিশ্বাসী নারীদের বলো- তারা যেনো তাদের দৃষ্টিকে শালীন রাখে, লজ্জাস্থানসমূহ ঢেকে চলে, এবং যৌনাকাঙ্কাকে সংযত রাখে। সাধারণ ভাবে যা প্রকাশমান, তা ছাড়া যেনো তাদের সৌন্দর্য ও মাধুর্য যেন জনসমক্ষে প্রকাশ না করে। তাদের ঘাড় ও বুক যেন মাথার ওড়না দ্বারা ঢাকা থাকে।

মহান আল্লাহ পর্দার বিধান সকলকেই দিয়েছেন। এতে কেউ যদি নিজেদের গায়ের জোড়ে বলে পুরুষদের পর্দার বিধান নেই শুধু নারীদের আছে সেটা তারা ভুল বলল। নারীরা সমাজ, পরিবার, পরিবেশ বুঝে বেপর্দা হয়ে যায়, আমি বলবো এটা তাদের ঠিক হয় না। এটা তারা ভুল করে। ঠিক তেমনি আমি পুরুষদেরও বলবো- শুধু নারীর পর্দা না দেখে নিজেদেরও একটু পর্দার মধ্যে রাখুন বা রাখতে শিখুন। পাশ দিয়ে বা রাস্তা দিয়ে কোন মেয়ে হেটে গেলেই ডেব ডেব করে না তাকিয়ে, হাতের একটু স্পর্শ না দিয়ে, অশ্লীন কথাবার্তা না বলে নিজেদের আগে শুধরাতে হবে। এতে আমি সব পুরুষদের বলবো না, বলবো ১০০% এর মধ্যে ৯৫ % পুরুষদের আছে এরকম সভাব। নারীরাও আছে ১০০% মধ্যে ৯৫% বর্তমান নারীরা বিশৃঙ্খল। তাই পর্দার সাথে ধর্ষণের কোন সম্পর্ক নাই এবং থাকতে পারে না। এটা হলো কিছু নোংরা পুরুষদের আচারণ। আর এই ধরণের নোংরা মন-মাসনিকতার পুরুষগুলোকে বের করতে হলে সবার আগে মানতে হবে আইন আর কোরআনের বিধান অনুসারে শাস্তি।

ধর্ষণের শাস্তি মানুষ এবং ইসলাম কি বলে।

মানুষ সে যে ধর্মেরই হোক, হতে পারে মুসলিম, হতে পারে হিন্দু, হতে পারে খ্রিস্টান। এদের মনে নতুন নতুন ভাবে অনেক কিছু জন্ম নেয়। হঠাৎ করেই শুনি অনেকেই বলে- যে ইসলাম নাকি ধর্ষেণের কোন শাস্তির বিধান দেয়নি। অনেকে বলে যে কোন নারী যদি ভিটকিম হয় তবে তার জন্য চারজন সাক্ষি দরকার। হাস্যকার,, আর এরকম হাস্যকর কথা ইসলাম তাও আবার আল্লাহ তার বান্ধাদের এরকম বিধান দিবেন। কোরআন কোন ভন্ডামি শিক্ষা গ্রন্থ নয়। আমি হাদিস বাদ দিলাম কারণ হাদিস আমাদের রাসূলের জীবন থেকে নেওয়া ও মানুষে হাতের লেখা, মানুষের বলা কথা। এমনকি হাদিস আমাদের রসূল (সাঃ) ও লেখে যাননি। হাদিস সহি হলেও কিছু হাদিস সেকালের একালের মানুষের হাত আছে, যে হাত ব্যবহার করেছেন ভুল লেখার জন্য। তাই আল্লাহ কোরআনে বলেছেন-

সূরা বাকারাহ অধ্যয় নং-২ আয়াত নং- ৭৮ অশিক্ষিতদের আরেকটি দল আছে, যারা কিতাবের কোন ইলম রাখে না। তারা শুধু ভিত্তিহীন আশা-ভরসা নিয়ে বসে আছে আর অমূলক ধারণা-বিশ্বাস নিয়ে চলে। আয়াত নং - ৭৯, তাদের জন্যই ধ্বংস, যারা নিজেদের হাতে শরীআতের বিধান রচনা করে। তারপর লোকদের বলে যে, এসব আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে, যাতে ওরা এর বদলে সমান্য কিছু মূল্য পেতে পারে। তাদের হাতের এ লেখাও তাদের ধ্বংসের কারণ এবং তাদের রোজগারও তাদের ধ্বংসের বাহন।

এবার আসি ইসলাম কি শাস্তির বিধান দিয়েছেন ধর্ষকদের।
সূরা নূর অধ্যায়-২৪ আয়াত-২-“প্রতেক ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিনীকে একশত বেত মারবে। আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী হয়ে থাকলে এ বিধান কার্যকর করতে গিয়ে আবেগ বা দয়া যেন তোমাদের প্রভাবিত না করে। আর ওদের শাস্তির দেওয়ার সময় যেনো বিশ্বাসীদের একটি দল উপস্থিত থাকে।”

সূরা নূর অধ্যায়-২৪ আয়াত-৪, “কোন পুতচরিত্রা নারীর বিরুদ্ধে কেউ অপবাদ দিয়ে যদি চার জন্য সাক্ষী উপস্থিত করতে ব্যর্থ হয়, তবে অপবাদ রটনাকারীকে শাস্তি হিসেবে ৮০ বেত মারবে। আর কোন দিন তার সাক্ষ গ্রহন করবে না। এরা সত্যত্যগী।”

সূরা নূর অধ্যায়-২৪ আয়াত-৬-৭“যদি কেউ নিজের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অপবাদ দেয় এবং তার পক্ষে যদি কোন সাক্ষী না থাকে তাহলে সে আল্লাহর নামে চার বার শপথ করে বলবে যে, যে সত্য বলছে। আর পঞ্চম বার শপথ করে বলবে যে তার অভিযোগ মিথ্যা হলে তার উপর আল্লাহ গজব নেমে আসবে।”


সূরা নূর অধ্যায়-২৪ আয়াত-৮-৯, “ আর এর বিপক্ষে স্ত্রী যদি চার বার আল্লাহর নামে শপথ করে বলে যে,তার স্বামী মিথ্যা বলছে এবং পঞ্চম বার শপথ করে বলে যে, তার স্বামী সত্য বলে থাকলে তার নিজের ওপর আল্লাহর গজম নেমে আসবে, তখন কিন্তু স্ত্রীকে কোন প্রকারের শাস্তি দেওয়া যাবে না।

এই সূরার ৪, ৬-৭নং এবং ৮-৯ নং আয়াত দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে- কোন নারীর নামে যদি কেউ মিথ্যে অপবাদ দেয় তাহলে যে অপবাদ দিয়েছে সে স্বামী হোক বা অন্য কেউ হোক তার পক্ষে চারজন সাক্ষীদাতা লাগবে। এটা যাচাই করতে যে সত্যিই সে ব্যভিচার করেছে কি না। অপবাদ রটনাকারী যে একজন নির্দোষ নারীর নামে মিথ্যে অপবাদ দিলো তার কি কোন প্রমান আছে। সেটা তাকে দেখাতে হবে। যদি না থাকে তবে তাকে আল্লাহর নামে শপথ করতে হবে চারবার, পঞ্চম বারে বলতে হবে তার উপর যেনে আল্লাহর গজব নেমে আসে। কোন প্রমান না দেখিয়ে যে একজন নারীর নামে মিথ্যে অপবাদ দিবে সেটা তো কেউ মেনে নিতে পারবে না। আর সেই জন্যই চারজন সাক্ষির কথা বলা হয়েছে। ঠিক সেই ভাবেই কোন নারীর যদি কোন সাক্ষি না পায় তাহলে তাকেও তার মিথ্যা অপবাদ থেকে বাচার জন্য তাকে শপথ করতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী।

এখন মানুষ এই আয়াতের একটা ভুল ধারণা দেয় যে- তারা বলে কোন নারীকে কেউ যদি ধর্ষণ করে তাবে সেখানে চারজন সাক্ষীর দরকার। এটা একেবারেই ভুল কথা। এগুলো বলা হয়েছে অন্য ভাবে।

এছাড়াও আল্লাহ ধর্ষণকারীর শাস্তির বিধান দিয়েছেন- সূরা মায়েদা অধ্যায়-৫, আয়াত নং ৩৩, “যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং পৃথীবীতে অশান্তি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদের প্রাপ্য শাস্তি হচ্ছে, হত্যা বা শূলে চড়ানো অথবা হাত পা কেটে ফেলা বা নির্বাসিত করা। পৃথিবীতে এ লঞ্ছনার পরও পরকালে ওদের জন্য অপেক্ষা করছে কঠিনতম শাস্তি।”

আল্লাহ তায়লা পবিত্র কোরআনে শাস্তির বিধান আরো ভালো ভালো আয়াত নাজিল করেছেন। সেখানে এমন বলা হয়েছে যে- যে, তোমরা অন্যায়কারীদের শাস্তি দিবে সে যেভাবে তোমার সাথে অন্যয় করেছে ঠিক সেই ভাবে। রক্তের বদলে রক্ত, মাইরের বদলে মাইর, হত্যার বদলে হত্যা। বাংলাদেশে একটা মেয়েকে ধর্ষণ তো করেই সেই সাথে মেয়েটাকে হত্যাও করে তাহলে এদের বিচারও তো সেই রকম হওয়া কথা। কিন্তু হচ্ছে না!!! কেনো হচ্ছে না? দেশে আইন নেই?, নাকি মানুষ নেই? যারা আছে তারা কি পশু? নাকি অমানুষ?

বিদ্রপ- কমেন্টকারীরা বুঝে পড়ে তারপর কমেন্ট করবেন। যুক্তি দিয়ে কথা বলবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:২৯
১৩টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×