চিঠির লেখা গুলো কে ছোঁয়া যায়, আর তার সাথে অনুভব করা যায় চিঠি দেয়ার মানুষটার অনুভূতিগুলোকে। রুদ্র মুহম্মদ যেমন আকাশের ঠিকানায় চিঠি দিতে বলেছিলেন, আমার বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার পথে যেই পোষ্ট অফিস পরে, মাঝে মাঝে ইচ্ছে করত ওই পোষ্ট বক্সে আকাশের ঠিকানায় একটা চিঠি ফেলে দিয়ে আসি। অজানায় কোন এক ঠিকানায় হয়ত পৌঁছে যাবে আমার এই চিঠি। চিঠিতে যেমন অতি সহজে অনেক কিছুর আবদার করা যায় আবার কিছু মিষ্টি অভিমান ও করা যায়। একটা চিঠি দিয়ে কি ক্ষমা চাওয়া যাবেনা?
চিঠির যে জিনিস টি আমার সবচেয়ে প্রিয় তা হছে ইতি তে নাম লেখা। ইতি শব্দটা চিঠি শব্দের চেয়েও মধুর। একটা আদুরে ভাব মেশানো থাকে ইতি শব্দটি জুড়ে। ইতি তে কখনো লেখা থাকবে বিহন, কখনো বা থাকবে নীলাঞ্জনা। কখন টুনটুনি পাখি হয়ে বাড়ির পিছনের শিমুল গাছটাকে চিঠি লিখব। কখনো ওয়ারী স্ট্রীট এর নাহার ভিল্লা থেকে চিঠি লিখব নয়ত শান্তিনিকেতনে বসে লিখব। কখনো শুভ কামনা দিয়ে আকাশে চিঠির ঘুড়ি উড়াবো আর বেলা শেষে সেই চিঠি যেয়ে পড়বে কোন এক নীরব মানুষের উঠোনে। কখন জোছনা দেখার আহবান জানিয়ে লিখব নয়ত গোপনে বিদায় নেবার সময় টেবিলের কোণায় রেখে যাব। যদি ফিরিয়ে দেয়ার ভয় থাকে তাহলে ছদ্ম নামে লিখব। আমি হব বনলতা সেন, আর চিঠি লিখব জীবনানন্দ দাস কে। কুসুম কুমারী হয়ে নীল শার্ট পড়া ছেলেটাকে লিখলেও মন্দ হয় না। আমি কখনো বিহন হয়ে আমার ঘর থেকে তোমাকে লিখব নয়ত ইতি তে শুধুই লেখা থাকবে " নীরবতা "।
বহু আগে থেকেই ভাবছি লেখার অ্যালবাম টা সাজিয়ে ফেলব কিন্তু সময়ের অভাবে কিংবা লেখার মত পরিবেশের কারনে সাজানো হইনি হয়নি। জীবন তো সাদা কাগজের মত, এর মধ্যে কেও কেও কেউ কেউ লিখে যেতে পারে। কলমের কালি ফুরোনোর আগেই রাত্রি নেমে আসলে চিঠির ইতি ঘটানো যায় না। আমি আমার জীবনের চিহ্ন গুলোকে স্মৃতির পাতায় আটকে রাখব।
ইতি,
~ নিরবতা ~