somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি কালজয়ী মুভি রিভিউ থেকে বাণিজ্যিক ছবির চরম একটি গল্পের জন্ম

০৪ ঠা মার্চ, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


উৎসর্গ- 'সামু' ব্লগে গত সপ্তাহে প্রকাশিত কালজয়ী সিনেমা রিভিউ " আমার চলচ্চিত্র দর্শন লালটিপ'' এর রচয়িতা ব্লগার 'দুর্যোধন' কে উৎসর্গ করিলাম ।
আমাকে ধরণীতে পাঠাইবার সময় বিধাতা আমার মাঝে শুধুই সৃষ্টিশীল নতুন নতুন কিছু করিবার চিন্তার খোরাক উপহার স্বরূপ দিয়াছিলেন যাহার সৎব্যবহার আমি আমার পেশায় মাঝে মাঝে কিঞ্চিত করিয়া থাকি আর বাকিগুলো সুযোগ এর অভাবে অযত্নে অবহেলায় হারিয়ে যায় বলিয়া মনে মনে বিধাতার নিকট বড়ই লজ্জিত !!!!!!!!

গত সপ্তাহে দুর্যোধন ভাইয়ের ''লাল টিপ'' নামক বাংলা ছিঃনেমার রিভিউ পড়ার পর থেকে মাথায় একটা চরম আইডিয়া আসিলো, ''লালটিপ্পনী''থুক্কু 'লাল টিপ'' ছবির এই রিভিউর গল্প নিয়া একটি প্যাকেজ নাটক বানানোর ইচ্ছা জাগিলো। কারন , তবে যদি কোন সহৃদয় ব্যক্তি ১০ কোটি টাকা দেয় তাহলে সেই প্যাকেজ নাটক কে পুরোদমে সিনেমা বানাইয়া ফেলিবো।
যেথায় "দুর্যোধন" ভাই কে ঢাকার নিজ বাসা হইতে বাহির হইয়া বসুন্ধরার সিনেপ্লেক্সে ছবি দেখিয়া বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উনার অবদানের করুন চিত্র বাদ দিয়া উনার দেশপ্রেম আরও দুর্দান্ত ভাবে ফুটিয়া তোলার চেষ্টা করা হবে।


ছবিটির গল্প হইবে এরূপ- আমেরিকায় বসবাসরত বঙ্গসন্তান আমাদের ''দুর্যোধন '' ভাই আমেরিকার রাস্তাঘাটে কর্মহীন অবস্থায় কর্মের খুঁজে ঘুরিয়া বেড়াইতেছেন । একদিন নিউইয়র্ক এর রাস্তায় প্রেসিডেন্ট ওবামা সাহেব কে খতম করিবার জন্য কিছু দুষ্কৃতিকারী হামলা চালাইলে 'নায়ক ''দুর্যোধন'' সাহেব তাহার জীবনের ঝুঁকি নিয়া ওবামা সাহেবের জীবন রক্ষা করিলেন। ইহার কারনে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সাহেব 'দুর্যোধন' কে পুরস্কার স্বরূপ ''এফবিআই'' এ নিয়োগ দিলেন। একদিন ওবামা সাহেব ''দুর্যোধন'' কে ''লালটিপ'' নামক ছিঃনেমার কিছু অংশ দেখাইয়া বলিলেন "দুর্যোধন দেখো এখানে কিভাবে বারবার প্যারিস নগরী দেখাইয়াছে তাহাতে আমার মনে একটি সদেহ ঢুকিয়াছে যে ফ্রান্সের কুদৃষ্টি বাংলাদেশের উপর পড়িল কিনা তাহা নিয়া আমি বেশ চিন্তিত হইয়া পড়িয়াছি । তাই তোমাকে একটা বিশেষ কর্ম দিয়া বাংলাদেশে পাঠানোর ইচ্ছা করিয়াছি। ফ্রান্স কি বাংলাদেশে তাদের কোন ঘাটি করার পরিকল্পনা করিয়াছে কিনা? করিলে তাহারা কি কি উদ্যোগ নিয়াছে ? সেই ধরনের কোন কুমতলব তথ্য যদি পাইয়া থাকো তাহলে আমাকে সাথে সাথেই জানাইবে। মনে রেখো তুমি বীরবঙ্গের বীরসন্তান , তোমার দেশকে রক্ষা করিবার জন্য তোমাকেই এগিয়ে আসতে হবে। আমি তোমাকে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করিবো। " (ছবির শুরুতেই একটু থ্রিলার এর গন্ধ দর্শকদের নাকে শুকাবো! ) ।
এই বিশেষ দায়িত্ব পাইয়া 'দুর্যোধন' নাচতে নাচতে বাংলাদেশে আসিয়া তাহার বিশেষ করমে নামিয়া গেলো। আমাদের দুর্যোধন ভাই প্রথমেই লাল টিপ ছবি দেখিতে সিনেপ্লেক্সে যাইবে যেথায় হলের দর্শকের মধ্য এক সহজ সাধারণ বঙ্গসাজে বঙ্গ তরুণীর সাথে চোখাচখি হইবে (নায়িকা) যে কিনা সিনেপ্লেক্সেরই এক টিকেট চেকার এর আদুরের একমাত্র গরীব কন্যা (ধনী -গরীবের প্রেমের টানাপোড়ন) । সিনেমা দেখিবার পর চরম আলোচিত ও জনপ্রিয় রিভিউ লিখাটি পরিচালক স্বপন চোপড়ার (ছবির ভিলেন) চোখে পড়িলে উনি দুর্যোধন ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করিয়া উনাকে জেলে পাঠাইবার চক্রান্ত করেন । শুরু হয়ে যায় স্বপন চোপড়া সাহেবের সাথে দ্বন্দ্ব। স্বপন চোপড়ার লোকজন রাস্তায় 'দুর্যোধনের'' উপর হামলা চালালে শুরু হয় জমজমাট অ্যাকশন যেথায় স্বপন চোপড়ার একে ৪৭- নিয়া আসা লোকজনের ছোড়া সকল বুলেট দুর্যোধন বীরত্বের সাথে প্রতিহত করিয়া তাদের কুপোকাত করিয়া ফেলে।
আক্রমণে ব্যর্থ হইয়া এবার স্বপন চোপড়া থানায় দুর্যোধন এর নামে ডাকাতি মামলা করিলে পুলিশের ঘুসখোর এসআই (যিনি স্বপন চোপড়ার কাছ হইতে মাসোহারা পাইয়া থাকেন) আসিয়া দুর্যোধন কে প্যাঁদানি দিতে দিতে সসম্মানে থানায় ভরিয়া রাখে। দুর্যোধন থানায় থাকাকালীন অবস্থায় স্বপন চোপড়ার লোকজন দুর্যোধনের বাসায় হামলা চালাইয়া বাবা, মা, ছোট ভাই ,ছোট বোন সহ সবাইকে হত্যা করিয়া "রান্নাঘরের দেয়ালে ছোট ছিদ্র" দিয়া পালাইয়া যায়। দুর্যোধন কে যে থানায় আটক করিয়া রাখা আছে সেই থানার ওসি সাহেব হইলেন এই যুগের বিরল প্রজাতির সৎ ব্যক্তি। যিনি স্বপন চোপড়ার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বিভিন্ন ভাবে পূর্ব থেকেই অবগত আছেন । তাই তিনি বুঝিতে পারিলেন 'দুর্যোধন' সাহেব বেশ বড় গ্যাঁড়াকলে পড়িয়াছেন। ওসি সাহেব দুর্যোধন এর দেশপ্রেম চিত্ত দেখিয়া উহাকে থানা থেকে মুক্তো করিয়া দেন।
দুর্যোধন বাসায় ফিরিয়া সবাইকে মৃত দেখিয়া চিৎকার করিয়া কাঁদিতে থাকেন যাহা দেখিয়া হলের সকল দর্শক হাসিতে হাসিতে চক্ষু দিয়া জল ফেলিবেন।
এইরূপ নিঃসঙ্গ অবস্থায় থাকাকালীন সময়ে সিনেপ্লেক্সে চোখাচখি হওয়া সেই সুন্দরির সাথে দুর্যোধনের পুনরায় সাক্ষাত হইবে। দুর্যোধনের জীবনে ঘটে যাওয়া সকল কাহিনী শুনিয়া সুন্দরী দুর্যোধন কে ভালবেসিয়া ফেলিবে এবং পরবর্তী ২০ মিনিট শুধু দুর্যোধন ও সুন্দরীর প্রেম দর্শক দেখিতে পাইবে সঙ্গে ২ টা গান সাথে ফ্রি নৃত্য নামক ( স্কুলের সকাল বেলার পিটি শো) দেখিতে পাইবে যেথায় সবগুলি দৃশ্য আমেরিকার লাস ভেগাস সহ বিভিন্ন নগরীর মনোরম পরিবেশে চিত্রায়িত হইবে।
এবার ফ্রান্সের অপরাধ জগতের ডন খ্যাত স্বপন চোপড়া র বড় ভাই বপন চোপড়া দুর্যোধন কে শায়েস্তা করিবার জন্য দুর্যোধনের প্রেমিকাকে অপহরণ করিয়া ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ার এর নিকট অবস্থিত একটি বাংলা মদের কারখানার গুদামে আটকে রাখিয়া দুর্যোধন কে ফোনে তাহার প্রিয়তমা হুবু স্ত্রী কে উদ্ধার করিয়া নেয়ার জন্য ফ্রান্সে আসার আমন্ত্রণ জানাইবে। খবর পাইয়া দুর্যোধন এক মিনিটের মধ্য ফ্রান্সে পৌঁছাইবে। পৌঁছানোর পর প্যারিসের রাস্তায় লরেন নামক এক হতভাগা ফরাসির সাক্ষাত পাইবে যিনি ''লালটিপ'' ছবিতে একজন লুল ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হইয়াছিলেন। যাহার স্ত্রী ''লালটিপ'' ছবি দেখিবার পর লরেন সাহব কে দুশ্চরিত্র ভাবিয়া ২৫ বছরের সুখের সংসার ত্যাগ করিয়া আলাদা বসবাস করা শুরু করেন। ইহার পর থেকেই ''স্বপন চোপড়া'কে ও লরেন সাহেব খতম করিবার জন্য হন্য হইয়া খুঁজিয়া ফিরিতেছেন। দুর্যোধন কে পাইয়া লরেন সাহেব যেন প্রতিশোধ নেয়ার শক্তি ও সাহস পাইয়াছেন। ওদিকে দুর্যোধন ও লরেন সাহেব লুল ভাবিয়া যেরূপে 'লালটিপ'' ছিঃনেমার রিভিউতে তুলে ধরিয়াছিলেন তাহার জন্য তিনি লরেন সাহেবের নিকট ক্ষমা চাহিয়া বন্ধুত্তের হাত বাড়াইলেন।

ছবির শেষ দৃশ্য বপন চোপড়া ও স্বপন চোপড়া দুর্যোধন কে খতম করিবার জন্য তাহার প্রাণপ্রিয় হবু স্ত্রী কে আইফেল টাওয়ার এর নিচে একেবারে টাওয়ারের মাঝখানের উম্মুক্ত অংসে দুই হাত ছড়াইয়া বাধিয়া রাখিয়া উদ্ধার করিয়া নেয়ার জন্য দুর্যোধন কে খবর পাঠাইবে। উহা শুনিয়া দুর্যোধন তেলে বেগুনে জ্বলিয়া উঠিবে এবং লরেন সাহেব কে নিয়া টাওয়ার এর উদ্দেশ্য রওয়ানা হইবে। অভিযানের আগে দুর্যোধন এবার আমেরিকার ওবামা সাহবে কে সব তথ্য জানাইবে যাহা শুনিয়া ওবামা সাহেব 'পেন্টাগন' এর একটি বিশেষ দল কে ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ারে গিয়া দুর্যোধন কে সাহায্য করিবার জন্য নির্দেশ দিবে। নির্দেশ পাইয়া বিশেষ হেলিকাপটার ও যুদ্ধ বিমান নিয়া 'পেন্টাগন' এর সবচেয়ে সাহসী ও বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দলটি ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ারের উদ্দেশ্য রওয়ানা হইবে।
শেষ পর্যন্ত একটি দুর্দান্ত সংঘর্ষের পর দুর্যোধন ও উনার সুন্দরী প্রেমিকা মিলন ঘটিবে এবং 'সমাপ্ত' নামক বাংলা শব্দটি পর্দায় ভাসিয়া উঠিবে ।
প্রিয় বন্ধুরা যাহারা উপরের বাণিজ্যিক ছবিটির গল্প পড়িয়া সময় নষ্ট করিয়াছেন তাহাদের জন্য উপরের গল্পের সূত্রটি নিচে দিয়া আরও সময় নষ্ট করিবার জন্য অনুরোধ করিতেছি।
দুর্যোধনের কালজয়ী ''লালটিপ'' ছবিটির রিভিউ
একটি শিক্ষিত রেডিওর গান শুনুন ও দেখুন
২৩টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×