somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

:::: শুভ জন্মদিন, মেঘ! ::::

১৬ ই জুন, ২০১২ বিকাল ৩:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আজ মেঘ- এর জন্মদিন। মনে আছে মেঘ কে?? এই মেঘের বসবাস আকাশে নয়। আপনার আমার মতোই এই পৃথিবীতেই, এ দেশেই ওর বসবাস। ওর বয়স আজ ৬ বছর হল।

বলা যায়, সবে মাতৃদুধ পান করা ছেড়েছে। সবে কথা বলতে শিখেছে। কিংবা যুক্তবর্ণ দেয়া শব্দগুলো ঠিকমতো উচ্চারণও করতে পারে না!! এ বয়সের আর দশটা শিশুর মতোই বাবা- মায়ের চোখের মনি ও। পরিবারের একমাত্র সন্তান শুধু সে ঘরের আলোই থাকে না, পুরো পরিবাররের অন্য সব স্বজনদেরও নয়নের মনি থাকে। তাদের একটা জগত থাকে। নানারকম প্রশ্ন থাকে। সবার নাভিশ্বাস উঠে যায় আজগুবি আজগুবি প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে। এ ঘর থেকে ও ঘর, এই আবদার থেকে ও আবদার। কারণে অকারণে হাসি, কান্না কিংবা অভিমান!! ওরা পরিবারের সামর্থ্য বোঝে না, সামাজিক শ্রেণী বোঝে না, বোঝে না বাবা মায়ের ব্যস্ততা!! নিজেদের ভাবে আমিই এই পরিবারের সব!!


তাদের জন্মদিন কে কেন্দ্র করে পরিবারে একটা উৎসব উৎসব থাকে। প্রতিটি পরিবার যে যার সামর্থ্য, সামাজিক- পারিবারিক শ্রেণী অনুযায়ী জন্মদিনটি উৎযাপন করে।
কেও নিভৃতে বাবা মাকে নিয়ে কেক কাটে, কেও সব স্বজন বন্ধুদের নিয়ে, কেও শিশু পার্কে, চিড়িয়াখানার গিয়ে দস্যি পনা করে। জন্মদিনকে ঘিরে চলতে থাকে তাদের নানারকম চিন্তা ভাবনা।



কি কি করবে? বাসায় থাকবো, নাকি বাবা মাকে নিয়ে ফ্যান্টাসি ওয়ার্ল্ডে যাব?? কাকে কাকে দাওয়াত দেবে?? বাসার সামনের রাস্তায় প্রায় সময় তার বয়সী কিছু ছেলে মেয়ে দেখে, মা বলে ওরা গরীব বলে, ঠিক মতো খেতে পায়না। এবার ওদের কেও আমি দাওয়াত দেব। তার কেকটা কেমন হবে? চকলেট নাকি ভ্যানিলা? বেন টেন নাকি পোকেমন- নাকি রেসিং কারের আদলে হবে এবারের কেকটি?! এবার কি পোশাক পরবে?? সুপারম্যান নাকি ব্যাটমান? নাকি আব্বুর মতো স্যুট টাই পরবে?? কে তাকে এবার কি উপহার দিতে পারে? নানু হয়তো সাইকেল দেব, কিংবা দিদা একটা রেসিং কার দেবে!! প্লে স্কুলের বন্ধুরা হয়তো অনেক অনেক চকলেট আনবে!!



যাই থাকুক তাদের ভাবনা- চিন্তা। প্রতিটি ভাবনার সাথেই তারা একটি জিনিসকে সাথে রাখে। ওটা ছাড়া কিছু কল্পনা করার বয়স ওটা না। তাদের সর্বোত্রই তাকে তাদের বাবা- মা!! সব পরিকল্পনাতেই তারা তাদের বাবা- মা কে সাথে রাখে! সকল আবদার, অভিযোগ, সকল প্রশান্তি, রাতে দুজনের মাজেই হয় তার ঘুমাবার জায়গা। ব্যস্ত বাবা- মা দিনে একদম সময় দিতে পারে না। নানী, দাদী দেখে রাখে, সবাই কত্ত আদর করে। কিন্তু টাও বাবা- মাই তার প্রিয়!
সন্তানদের জন্য বাবা-মা, বাবা- মায়ের জন্য সন্তান! এই স্বর্গীয় বন্ধন একসময় ছিন্ন করি, আমরা এই সভ্য সমাজ!! রাতের আঁধারে নিখুঁত ভাবে খুন করে ফেলি রাখি বাবা- মাকে। কোন প্রমাণ নাকি ছেড়ে না আনাড়ি খুনিরা!!??

শিশুটিই সাক্ষী থাকে তার জীবনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিভীষিকা ময় অধ্যায়টির! সেই সকালে ফোন করে বিশ্ববাসীকে জানায়। ঠিক পর মুহূর্তেই কি প্রচণ্ড সাহসিকতায় কাণ্ডজ্ঞানহীন সাংবাদিক, পুলিশের প্রশ্নের উত্তর দেয়! সবাই ভুলেই যায়, এই শিশুটি কি ভয়ানক একটা অবস্থা কেবল পার করে এসেছে! কি ক্লান্তিময় সেই রাত, কি সুদীর্ঘ সেই রাত!



মন্ত্রীর ৪৮ ঘণ্টা চলতে থাকবে ৪৮ সপ্তাহ, মাস কিংবা বছর!! বাবা মায়ের মতন কবরে মাটি চাপা হয়ে পড়ে থাকে খুনি উৎঘাটন প্রক্রিয়া!! সরকার পুলিশ থেকে ডিবি, ডিবি থেকে র্যা ব এঘর থেকে ওঘরে যেতে থাকে। কিন্তু কি যেন এক কারণে খুনি ধরা পড়েনা।



কিছু নির্লজ্জ মানুষ দাঁত কেলিয়ে হেঁসে হেঁসে বলে বেড়ায় বাবা- মায়ের নামে খারাপ কথা! অথচ মা- বাবা নাকি ওদের গোত্রের ই ছিল। ওদের জন্যই এবারের জন্মদিনে আমার সাথে বাবা- মা নেই। ওরা রাস্তায় সভা-মিছিল করে। কিন্তু কিছু হয় না! সবই লোক দেখানো। সবাই ই ভুলে যায়।
কেও তোমরা বুঝতে পারো না, বাবা- মায়ের অভাব টা কেও কোনদিন পূরণ করতে পারে না। কোন রাষ্ট্র নয়, কোন স্বজন নয়, কিংবা কোন ক্ষমতাবান ব্যক্তিও নয়।

আমরা বড় সহনশীল জাতি বনে গেছি। এখানে যাই ঘটুক, যত করুণই হোক, দুদিনের মাথায় আমরা সব ভুলে যাই। এখানে একটি বড় খবর আরেকটি বড় খবর দিয়ে সুন্দর ও সুনিপনভাবে চাপা দেয়া হয়!! কেমন করে যেন সবাই একসময় সব ভুলে যাবে। শিশুটি কি ভুলে যাবে? সেই খুনির চেহারা কি ভুলে যাবে? সেই রাতের চেহারা? সেই নির্লজ্জ মানুষ গুলোকেও কি ভুলে যাবে, খুনির হদিস বের করার বদলে, সেই রাত নিয়ে যারা এখন খবর বাণিজ্য করে বেড়াচ্ছে!


প্রিয় মেঘ, জন্মদিন তুমি বরং প্রার্থনা করো, সেই পিষাসগুলো যেন নিজে থেকেই ধ্বংস হয়! এ রাষ্ট্রের কোন ক্ষমতা নেই তাদের ধ্বংস করে। তুমি ক্ষমা করো আমাদের। মনে রেখো, তুমি এ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সাহসী শিশু। এই সাহস নিয়েই নিরাপদে বড় হয়।


তোমার জন্ম ও বেড়ে উঠা এ পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জিনিস। তুমি এদেশের ১৬ কোটি মানুষের সন্তান বনে গেছ। ভালো থাকো।

৭৩টি মন্তব্য ৬৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×