somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসার অধিকার কার?

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৫:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইশতিয়াক নাম তার, বয়স ২৩। বাবা ব্যাংক কর্মকর্তা এবং মা স্কুলটিচার। একমাত্র তার ছোট বোন নিপা, বয়স ১৯ এর কাছাকাছি।
ইশতিয়াক ১ বছর ধরে সোনিয়া নামের এক মেয়ের সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে ছিল।
জন্মদিনে তাকে নিয়ে ঘুরতো, যেকোন ওকেশনেই তারা একে অপরের পাশে থাকতো, ঘুরে বেড়াতো, রেস্টুরেন্ট এ খাওয়া দাওয়াসহ অনেক সময় কাটাতো একসাথে। সোনিয়াও বেশ ভালো পরিবারের মেয়ে তারও এক বড় একটি ভাই ও আছে তার নাম সৌরভ।
উভয় পরিবার মধ্যবিত্য।
স্কুল লাইফ থেকে ইশতিয়াক তার ছোট বোনকে গাড়িতে স্কুলে ছেড়ে আসতো। কলেজ জীবনেও কদিন ছেড়ে আসলেও এখন নিপা নিজেই আসাযাওয়া করে।
যে চার চরিত্রের কথা বলছি সকলেই খুব ম্যাচ্যুরড।
ইশতিয়াক যখন তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে ঘুরতো সুযোগ পেলেই হাতে হাত দিয়ে চলতো, আর মাঝে মাঝে গালে চুমুও দিত। আবেগে দুজন একে অপরের খুব কাছাকাছি।
নিপার বয়সও প্রেমে পড়ার ছিল, তার খুব ভালো এক বন্ধুও ছিল। কলেজের অবসর সময় তারা ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন দোকানের ফুচকা টেস্ত করতো। মোবাইলের যুগ, যথারীতি এসএমএস ও ফোনেও নিপার যোগাযোগ বেশ ভালোই জমে উঠেছিল। এবং সময় গড়াতে গড়াতে সে পরিবারের চেয়ে তাকে গুরুত্ব বেশি দেওয়া শুরু করলো। নিপাকে ভালো লাগতো ছেলেটি। ছেলেটিরও ঠিক একই।
একদিন দুজনই কোথাও খুব হেসেদুলে ফুচকা খাচ্ছিলো এমন সময় ইশতিয়াক দেখে ফেলে তাদের। সেখানে নিপাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে আসে এবং বাসায় তার উপর পড়ালেখা ও যাবতীয় কাজের চাপ বাড়িয়ে দেয়। নিপা বুঝেনি ব্যাপারটি, তবে যেহেতু সে পরিবারকে গুরুত্ব একটু কম দিচ্ছিল তাই তা সে সহজভাবে গ্রহন করেনি। নিজের ভাইয়াকে বললো যে, ভাইয়া আমি সময় খুব কম পাচ্ছি। কিন্তু অগ্রাহ্যিত!
এদিকে ইশিতিয়াক তার গার্লফ্রেন্ডকে খুব ভালোই সময় দিত। তার চাওয়া প্রতিটি জিনিসের উপর ই গুরুত্ব ভালই দিত। অপরদিকে বোনটি অগ্রাহ্যিত!
একদিন সোনিয়ার বড় ভাইও সোনিয়া-ইশিতিয়াক কে কোথাও হাতে হাত ধরে চলতে দেখেছে।
বাসায় এসেই সোনিয়ার উপর কড়া নজরবন্দী শুরু করেদিল। এরপর থেকেই সোনিয়া খুব কমসময় বের হতে পারত বাসা থেকে।
ওদিকে ইশতিয়াক তাকে আগের মত না পেয়ে মাথাটা তার খিটখীটে হয়ে পড়ছিল।
একদিন সামান্য ব্যাপার নিয়ে সে ছোট বোন নিপার উপর হাত তুলে দেয়।
নিপা খুব ভালো উপলব্ধি করতে পারতো, সে বুঝেছিল হয়তো তার ভাই কোন সমস্যায় ভুগছিল।
সেদিন থেকে বাসার প্রতিটি কাজ ও পড়ালেখায় সে মনযোগি হয়ে পড়ে এবং কলেজের তার বন্ধুকে আসতে আসতে সময় কম দেওয়া শুরু করলো।
নিপার হাতে একদিন মোবাইল ছিল এসএমএস করা অবস্থায় তাকে তার বড়ভাই ধরে ফেলে এবং তাকে বকাঝকা করে। মোবাইলটি আর নিপার হাতে দিলনা ইশতিয়াক।
বহু কষ্টে একদিন নিপা তার বন্ধুকে কোথাও দেখা করার জন্য বলে। সেই ছেলেটি ব্যাকুল হয়ে বেরিয়ে পড়লো, পরিবার কে এ বলে যে আমি এক জরুরী কাজে বাইরে যাচ্ছি আসতে সময় লাগবে।
ওদিকে ইশতিয়াকের ফোনে তার গার্লফ্রেন্ড সোনিয়ার ফোন আসে যে আজ সে বের হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে, তাড়াতাড়ি ইশতিয়াক কে আসতে বলে একটি জা’গায়।
নিপা ও সেই ছেলেটি অনেক দিনপর আলাদা দেখা করার সুযোগ পেল অন্যদিকে ইশতিয়াক আর সোনিয়াও।
নিপারা সে গায়গায় ই ছিল যেখানে তার ভাই সোনিয়াকে নিয়ে আসলো। তবে তাদের মাঝে কতগুলো গাছ ছিল। নিপা তার ভাইকে দেখে ফেলে এবং একটু সাইড হয়ে তারা কথা বললো। অপরদিকে সোনিয়াও নিপাকে সেই ছেলের সাথে দেখে ফেলে, যদিও সে নিপাকে চেনেও না। তার চোখ তার ভাই সৌরভের দিকে ছিল, যে নিপার সাথেই কথা বলছিল। সোনিয়া সেই ব্যাপারটি ইশতিয়াককে জানায় নি এবং সেখান থেকে লুকিয়ে অন্য কোথাও গিয়ে কথা বলতে লাগলো। যেমনটা নিপা তার ভাইকে দেখে করেছিল।

উভয় জোড়ার একটি মিল কোথায় ছিল জানেন? তারা একে অপরকে বেশ ভালোবাসতে শুরু করেছিল।
বাধা আর কেউ ছিলনা তাদের ভাইরাই।
উভয়ের মাঝেই একটি উৎসাহ ছিল দেখা করার অজান্তেই তাদের ভাইরাই সুযোগটি করে দিল যা তার জানতোই না।
নিপা কখনোই তার ভাইয়ের উর্ধ্বে কথা বলেনি। অপরদিকে সোনিয়াও। হয়তো তারা বলতে পারতো যে তুমি করলে আমি পারবোনা কেন? আমারও তো অধিকার আছে।

সত্যিই কি তাদের(বোনগুলোর) অধিকার ছিল একে অপরের সাথে যখন ইচ্ছে দেখা করার?
আমি মনে করিনা তাদের সেই অধিকারটুকু দেওয়া উচিত। অবশ্যই নিপার উপর হাত তোলাটি সমর্থনযোগ্য নহে।
তাদের সে অধিকার যদি দেওয়া হতো তাহলে তাদের মাঝে ভালোবাসার সম্পর্কটি প্রায় বিলীন হয়ে যেতো।

কেন ?
এ প্রশ্নের উত্তর আপনার ছোট বোনকে সেই স্থানে বসিয়ে ভেবে উত্তরটি খুঁজুন।
নিশয়ই আপনি না পেয়ে ভাবা বন্ধ করতে পারবেন না।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আব্বাসীয় কুরাইশ বেশি যোগ্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫




সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×