somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস- অমর একুশে এবং বিশ্ব

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভাষাকে নিয়ে মানুষের হৃদয় লালিত পালিত ও বিকশিত, ভাষার জন্য বলা যায় মানুষ আজ সভ্য আজ এত উন্নত এবং সৃস্টির সেরা জীব। ভাষাই মানুষকে দিয়েছে মনের ভাব প্রকাশ করার, ভাল মন্দ প্রকাশ করার শক্তি যা আমাদের করেছে সামাজিক এবং সেই সাথে করেছে একে অন্যয়ের সহায়ক। মা, মাতৃভাষার সাথে নাড়ির টান ও সর্ম্পক অবিচ্ছেদ্য।

আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস চলে আসছে ২০০০ সাল হতে যখন বাংলাদেশ সরকার অফিসিয়ালি ইউনেসকোতে আবেদন করে এবং ১৯৯৯ সালে ১৭ নভেম্বরে ইউনেস্কোর সাধারন কনফরেন্সে সবসম্মতি ক্রমে গৃহীত হয় যেখানে ২১ এ ফেব্রুয়ারীকে "আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস" হিসেবে ঘোষনা করা হয়। এই ঘোষণার ফলে আমাদের একুশের গৌরবোজ্জল ইতিহাস বিশ্ব দরবারে ছড়িয়ে গেছে । ২০০০ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন হওয়া এতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আমাদের মত জাতিসংঘের ১৮৮টি সদস্য দেশেও উদযাপিত হয়ে থাকে এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ।

এটা বাংলাদেশের জন্য এক অবিস্বরনীয় অর্জন বলাযায় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পর এটিই সবচেয়ে বড় অর্জন। আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস শুধু বাংলাদেশের জন্য নয় বরং এটি সকল মানুষের সকল ভাষার সারা বিশ্বের জন্য গৈরবের, সকলের ভাষাকে ভালবাসার জানার এবং উন্নয়নের জন্য ভাবার দিন। তাসত্বেও বাংলাদেশই সবচেয়ে গর্বিত আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের জন্য কারন বাংলাদেশের এবং ভাষা শহীদদের জন্যই আজ আমাদের সারা বিশ্বের মানুষের এ পাওয়া।

এবার একটু ফিরেদেখা আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবসের ইতিহাস: আমরা বাঙালি ,বাংলা আমাদের মাতৃভাষা । বিশ্বের প্রায় ৩০কোটি মানুষের মাতৃভাষা বাংলা । মাইকেল , বঙ্কিমচন্দ্র ,রবীন্দ্রনাথ ,নজরুল ,জীবনান্দ,শরতচন্দ্রসহ অসংখ্য সাহিত্যকর্মী ও ভাষাপ্রেমী মনীষীর কর্মপ্রয়াসে বাংলা ভাষা উন্নীত হয়েছে আন্তর্জাতিক মানে ।

২১শে মার্চ ১৯৪৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষনা দেন যে উর্দু এবং শুধুমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাস্ট্র ভাষা। তখন পাকিস্তান দুভাগে ছিল এক পশ্চিম ও পুর্ব পাকিস্তান( যা বর্তমানে বাংলাদেশ)। এ ঘোষনার পর পুর্ব পাকিস্তান( যা বর্তমানে বাংলাদেশ) এর জনগন যাদের মাতৃভাষা বাংলা সবাই প্রতিবাদ করে।


১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের ঐতিহাসিক আমতলায় হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী একত্র হয়েছিলেন সেই উদ্দীপ্ত তরুণদের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা চলছিল । রাষ্ট্রভাষা বাঙলা চাইব -এই দাবিতে এক অদ্ভুত চঞ্চলতা চলছিল । তারা সেইদিন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সব ধরনের নিপীড়নের বিবরুদেদ্ধ রুখে দাড়াতে যূথবদ্ধ হয়ছিলেন । তারা সেদিন বজ্রদীপ্ত কন্ঠে ১৪৪ ধারা ভাংগার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন । তার পর দলে দলে বিভক্ত হয়ে ছাত্রছাত্রীরা মিছিল বের করলে পুলিশ তাদের উপর লাঠিপেটা করে ,কাদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে ,গুলি করে হত্যা করে সালাম,বরকত,রফিক, শফিক ,জব্বারসহ অরো নাম না জানা অনেককে ।



কিন্তু সেই নৃশংস হত্যাকান্ড অমিত প্রাণের কল্লোল থামাতে পারে না । আন্ন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে গোটা শহরে ,সারা দেশে । তারপরদিন প্রথম শহীদ দের স্মরণ করে ঢাকায় শহীদ মিনার তৈরী করা হয় যা পাক শাসক ভেংগে ফেলে।

সময়টা ছিল ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারীর বিকেলে তিনটা ২০ থেকে ৫০ মিনিট । সেই বিকেলের ৩০ মিনিটে তারা নির্ধারণ করে দিয়েঠছলেন আমাদের জাতি আর মাতৃভাষার ভবিষ্যতকে । এই সেই ৩০ মিনিট যখন পুলিশ সতর্কবাণী না উচ্চারণ করেই নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিলেন । এই সেই ৩০ মিনিট যা প্রতিবাদী তরুণ তরুণীদের সমবেত শক্তিকে অরো বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল , তাদের সংকল্প আরো অটল করে তুলেছিল । তারা গুলির সামনে বুক পেতে দেওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন । সেই ৩০ মিনিটই নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন আমাদের মহান মাতৃভাষার আর জাতির ভাগ্য ,যা কিনা স্ফুলিংগ হিসেবে কাজ করছে । সেই স্ফুলিংগ দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়েছিল শহর থেকে গ্রামে , প্রতিটি জনপদে ।

এরপর একটি তারিখ ২১শে ফেব্রুয়ারী ,একটি বছর ১৯৫২ সাল আমাদের অত্ত্যন্ত আপন হয়ে আমাদের হৃদয়ে চিরকালের জন্য ঠাই পেয়ে গেছে । আমাদের ভাষা বাংলাকে আমরা নিজের করে পেয়েছি । আমরা একটি দেশ পেলাম যার নাম বাংলাদেশ । আর একটি দিবস পেলাম যাকে সারা বিশ্ব স্বীকৃতি দিল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ।

মাতৃভাষার ধর্মীয় প্রভাব ইসলাম কি বলে: মানুষের চিন্তা চেতনা ও মনের ভাব প্রকাশের সর্বোত্তম উপার হলো মাতৃ ভাষার মাধ্যমে তাই মাতৃভাষার গুরুত্ব ইসলামে অপরিসীম। মানুষের জন্য ভাষা আল্লাহর পক্ষ হতে নিয়ামত স্বরুপ আল্লাহ সুরা আর রহমানে বলেন সূরা নং ৫৫ আয়াত ৩-৪ "আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তাকে শিখিয়েছেন ভাষা"

আল্লাহ মানুষকে হেদায়াতের জন্য অনেক নবী রাসুল পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বা জাতির কাছে । সেই সকল নবী রাসুল গন তাদের জাতির কাছে আল্লাহর বানী প্রচার করেছেন তাদের মাতৃভাষার মাধ্যমে আল্লাহ বলেন সুয়া ইবরাহিম সুরা নং১৪ আয়াত নং ৪ " আমি সব পয়গম্বরকেই তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করেই প্রেরণ করেছি, যাতে তাদেরকে পরিষ্কার বোঝাতে পারে। অতঃপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা, পথঃভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎপথ প্রদর্শন করেন। তিনি পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়। "

আর আমাদের পবিত্র কোরআনও নাযীল হয় আমাদের মহানবী রাসুল (সঃ) এর কাছে ওনার মাতৃভাষায় যা ছিল আরবী দেখুন সুরা ১২) সূরা ইউসূফ আয়াত ২ "আমি একে আরবী ভাষায় কোরআন রূপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার। "

এবং ১৯) সূরা মারইয়াম আয়াত ৯৭ এ "আমি কোরআনকে আপনার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি, যাতে আপনি এর দ্বারা পরহেযগারদেরকে সুসংবাদ দেন এবং কলহকারী সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন।"

এবং ২০) সূরা ত্বোয়া-হা , আয়াত ১১৩ "এমনিভাবে আমি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি এবং এতে নানাভাবে সতর্কবাণী ব্যক্ত করেছি, যাতে তারা আল্লাহভীরু হয় অথবা তাদের অন্তরে চিন্তার খোরাক যোগায়।"

এছারাও ইসা আলাইহিস সালাম এই উপর ইনজিল কিতাব নাযিল হয় যা ছিল ওনার মাতৃভাষায় হিব্রুতে।

ভাষার ভিন্নতাই হচ্ছে আল্লাহর মহিমা/মর্যাদা/গৌরব/ঐশ্বর্য ৩০) সূরা আর-রূম আয়াত নং ২২ শে আল্লাহ বলেন "তাঁর আর ও এক নিদর্শন হচ্ছে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃজন এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র। নিশ্চয় এতে জ্ঞানীদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।"

বাংলাদেশের ভাষা: বাংলাদেশ একটি বহু জাতি, বহু ধর্ম এবং বহু ভাষার দেশ। এ দেশে প্রধান ভাষা বাংলা হলেও শতকরা দুই ভাগেরও অধিক ভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ বাস করে। এদের মধ্যে উর্দুভাষী বিহারি, তেলেগুসহ ৩০ লাখ বা তারও বেশী আদিবাসী বা নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী বাস করে। যদিও সরকারি হিসাবে এই সংখ্যা এর অর্ধেক। বাংলাদেশে বাঙালি ছাড়াও প্রায় ৪৫ টি আদিবাসী জনগোষ্ঠী রয়েছে। বাংলাদেশে বসবাসকারী আদিবাসীদের ভাষা বিশে­ষণ করে দেখা যায় যে, পৃথিবীর চারটি প্রধান ভাষা-পরিবারের প্রায় ৩০টি ভাষা তারা ব্যবহার করে । এর মধ্যে কিছু ভাষা পৃথক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হলেও অনেক ভাষাই পরস্পর এতটা ঘনিষ্ঠ যে এগুলোকে উপভাষাই বলা যায় যেমন তনচঙ্গা মূলত চাকমা ভাষার উপভাষা। অনুরুপভাবে রাখাইন মারমা ভাষার, লালং বা পাত্র গারো ভাষার এবং বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি ও হাজং বাংলার উপভাষা। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আদিবাসী ভাষার সংখ্যা ২৬-৩০ টি।

আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস কিভাবে পালন করা হয়:? বাংলাদেশের মানুষের কাছে আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম , এই দিনে জাতিয় পতাকা অর্ধ নিমিত রাখা হয় সকল সরকারী ও বেসরকারী অফিসে সেই সকল ভাষা শহীদদের স্বরনে। সারাদেশ হতে মানুষ ঢাকার কেন্দীয় শহীদ মিনারে আসেন তাদের শ্রদ্ধা জানাতে এবং প্রধান মন্ত্রী ও রাস্ট্রপতীর মাধ্যমে প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয় যা টিভি ও বেতারে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়ে থাকে এবং সকল জেলাতেও জেলার শহীদ মিনার গুলো মানুষে ভরপুর হয়ে থাকে। এই দিনে তারা শহীদ মিনারে ফুল প্রদান করেন শ্রদ্ধা হিসেবে, সারা দেশের সকল জেলা ও পাড়া মহল্লাতেও অস্থায়ী শহীদ মিনার বানানো হয় যেখানে ছোট ছেলে মেয়ে থেকে যুবক বৃদ্ধ সবাই শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।



আর ১৯৫২ ৪ ঠা ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ দিবসে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে ১৯৫২



সারা বিশ্বেও একই ভাবে যেখানে শহীদ মিনার রয়েছে বা অস্থায়ী ভাবে তৈরী করে ফুলের শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও ভাষা বিষয়ক আলোচনা এবং সংস্কৃতিক অনুস্ঠানের মাধ্যমে এই দিন পানল করা হয়ে থাকে।

এ পৃথিবীর জন্য আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস :
সারা বিশ্বে অনুমানিক ৬০০০ ভাষায় কথা বলা হয়ে থাকে এর মধ্য ৬০% থেকে ৮০% রয়েছে ঝুকির মধ্যে যার মানে এই ৬০-৮০% ভাষা গুলো ১০০ বছর পরে আর প্রচলিত থাকবেনা যা বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রতি হুমকি, মানবতার প্রতি হুমকি।

আমার মত আরো যারা প্রবাসে রয়েছেন তাদের আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবসে পালনের জন্য এক্সট্রা কিছু রয়েছে যা আমরা প্রতিদিনই করতে পারি, আমাদের প্রতিদিনের কাজের ফাকে কখনো কি দেখছি আমার সহকর্মী কোন ভাষায় কথা বলে তাদের ঐতিহ্য কি?

আমার উদাহরনই দেই এখানে অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বের সকল দেশের মানুষ অভিবাসি হয়ে থাকতে আসে সবার ভাষা ভিন্ন এমনকি এ দেশের আদিবাসীদের ভাষাও ভিন্ন ইংরেজী নয়। তাই রাস্তায় বাসে ট্রেনে বা রেস্টুরেন্টে বা অফিসে কত মানুষের সাথে প্রতিদিন দেখা হচ্ছে, যদি সুযোগ ও সময় থাকে সাহস করে তাদের সবার অরিজিন বা মাতৃভাষা সম্পকে যদি জানতে চেয়ে একটি কথা বলা শুরু করি দেখবেন সেই মানুষটা আপনাকে কত আগ্রহ নিয়ে মুখে কতটা হাসি নিয়ে আপনাকে তার ভাষায় কথা শোনাচ্ছে এই হচ্ছে মাতৃভাষা আর আমরা বাংলাদেশি হিসেবে তাদের কে মনে করিয়ে দিতে পারি আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবসের কথা।

এবার একটু খারাপ খবরটাও দেই অস্ট্রেলিয়ার নর্দান টেরিটরি যেখানে শত শত স্কুলের শিক্ষার্থিরা যারা তাদের মাতৃভাষায় কথা বলে (ইংরেজি নয়) তারা মাতৃভাষায় শিক্ষা হতে বন্চিত হচ্ছে আর সরকারী সহায়তা ও কম পাচ্ছে তাদের ভাষায় কারন সরকারের পলিসির জন্য যা কিনা তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষা প্রদান ব্যন করে রেখেছে যদিও অস্ট্রেলিয়া সাপোর্ট করে ইউনাইটেড নেশনের ডিক্লারেশন যা আদিবাসি দের মাতৃভাষায় শিক্ষার সমঅধিকার নিশ্চিত করে এটা আমাকে মনে করিয়ে দেয় আমাদের পাহাড়ী অন্চলের লোকদের কথা যদিও তাদের আদিবাসি মানতে আমি নারাজ তবে তাদের ভাষা রক্ষায় আমি একশত ভাগ সাপোর্ট করবো।

তবে এ দিবসের তাৎপর্য ও গুরুত্ব সর্ম্পকে বলা যায় এখন হতে আগামিতে এই বিশ্বে যারাই কোন ভাষা বা ঐতিহ্যের প্রতি কোন প্রকার বিরুপ আচরন করবে বা করার চিন্তার করবে তার আগে একশ বার ভাববে তার পরিনতির কথা। আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস প্রতি বছর আমাদের স্বরন করিয়ে দেয় এই দিবস পৃথিবীর সকল ভাষার সুরক্ষার জন্য উদাহরন স্বরুপ যা একটি ওয়াচ ডগ হিসেবে কাজ করছে কারন কেহ কোন ভাষার প্রতি মানুষের প্রতি জুলুম করে যে পার পাবেনা এই দিন আমাদের সেটাই স্বরন করিয়ে দেয়। এখান থেকে সামনে এগিয়ে যাওয়া শুধু ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা, এটা একটি ব্যতিক্রমি ও গুরুত্বপুর্ন উপহার সারা বিশ্বকে সকল মানুষ কে একটি ছোট্র গরিব দেশের মানুষের পক্ষ হতে।

আর আমাদের জন্য আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস বর্তমানটা চেক করে দেখি: ২১শে ফেব্রুয়ারী এলেই আমরা শোক পালনের অভিনয় করি । রাস্ট্র প্রধান থেকে শুরু করে সাধারন মানুষ পর্যন্ত যে যার মতো শোক পালনের অভিনয়ে অংশ গ্রহন করে নিজেদের ধন্য মনে করি ।


২১ শে ফেব্রুয়ারী মধ্যরাত থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত যতো কোটি টাকার ফুল দেওয়া হয় শহীদ মিনার একটি বছর যদি ফুল না দিয়ে সে টাকাটা শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষনে ব্যয় করা হতো তা হলে হয়তো বাংলাদেশের ইতিহাস অন্যরকম হতো ।

২১ শে ফেব্রুয়ারী এলেই সপ্তাহ জুরে ধুয়ে মুছে পরিস্কার করা হয় শহীদ মিনার অথচ শহীদদের কবর পরিস্কার করা প্রয়োজন মনে করে না সরকার সরকার । সালাম,বরকত,রফিক,জব্বার আরো নাম না জানা কতো শহীদ যে অবহেলায় অপমানে মুখ গুজে পরে আছে কবরে তার খোজ রাখার কোন দ্বায়িত্ব যেন নেই রাস্ট্রের, সালাম, বরকত,রফিক ,জব্বারের পরিবারের সদস্যরা এখনও পায়নি সরকারের তরফ থেকে কোন সাহায্য সহযোগীতা । যা সত্যিই দু:খজনক।

২১ শে ফেব্রুয়ারী ঘটা করে ফুল দেবার অভিনয় করার পর ২২শে ফেব্রুয়ারী চলে ঘটা করে দৈনিক গুলোতে এবং টিভি চ্যানেল গুলোতে নিজের ছবি দেখা, স্মৃতি চারন সহ আরো কতো কি । যা সত্যিই হাস্যকর।
মুখেই শুধু গেয়ে যাই —আমার ভাইয়ের রঙে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী — আর মনে আচরন করি বিমাতাসুলভ ।

আর তরুন থেকে শুরু করে বর্তমান প্রজন্মের অবস্থা জানতে এটাই যথেস্ট যেখানে দেখানো হয়েছে তরুন হতে আধুনিক মা সবাই জানেনা ২১শে ফেব্রুয়ারী কি হয়েছিল। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু আছে কি? আমার জানা মতে নেই।

এবারের ফেব্রয়ারীতে সবাই সচেতন হই বাংলা হোক হিন্দি আগ্রাসন মুক্ত, ডোরেমনের প্রভাব শিশুদের মাঝে দেখেছি এবং তা বন্ধ করাতে সাধুবাদ কিন্তু বড়রা যে সিরিয়ালে আসক্ত এবার তা থেকে মুক্তির জন্য সবাই কাজ করে যাই।



আর যারা আধুনিকতার নামে হিন্দিতে কথা বলে ইংলিশে ভাব মারে এবং বাংলাটা ঠিকভাবে বলতে পারে না তাদের জন্য কবি - আবদুল হাকিম তার বঙ্গবাণী কবিতায় যথার্থই বলেছেন-
যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী।
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি॥
দেশী ভাষা বিদ্যা যার মনে ন জুয়ায়।
নিজ দেশ তেয়াগী কেন বিদেশ ন যায়॥"


আমাদের আশা আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবসে: বাংলা ভাষার চরম প্রকাশও পূর্ণ বিকাশ ঘটেছে বিশ্ব মাতৃভাষা দিবসের মাধ্যমে বাংলা ভাষার সংরক্ষণের জন্য ১৯৫২ সালে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল এদেশের অকুতোভয় সন্তানেরা । তাদের আত্মত্যাগ আজ আন্তর্জাতিক পরিসরে মর্যাদা লাভ করেছে ।

বিশ্বের বিভিন্ন মানুষ তাদের আত্মত্যাগ কে স্মরণ করবে । আমাদের গৌরবদীপ্ত জীবনকাহিনী বিশ্ববাসী শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে । আর আমাদের জাতীয় জীবনে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি এ উন্নতি ত্বরান্বিত করতে হবে । আর তা সম্ভব আমাদের ভাষাকে ভালবাসার মাধ্যমে এই ইতিহাস জানার মাধ্যমে একে সবার কাছে ছরিয়ে দেয়ার মধ্যমে।



আশাকরি আমার এ পোস্টের মাধ্যকে সবাই একটু হলেও আমাদের এই মহান ভাষাকে ভালবেসে সবার মাঝে ছরিয়ে দিবো সেই শুভকামনায় আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো-


A Tribute to International Mother Language Day (21st February) by ZANALA Bangla

------------------------------------------------------------------------
এই পোস্ট লিখতে যে সকল সুত্রের ও পোস্টের সাহাজ্য নেয়া হয়েছে: ০। আমার গত বছরের ইংরেজি ব্লগ International Mother Language Day- ফায়সাল হাসান Click This Link
১। ১৯৫২ এর ২১শে ফেব্রুয়ারী... ফিরে দেখা... সুরঞ্জনা - Click This Link
২। সামুতে প্রকাশিত ২১শে ফেব্রুয়ারী নিয়ে প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য পোষ্ট -নষ্ট কবি Click This Link
৩। যে আগুন ছড়িয়ে গেলো সবখানে ... রাগিব হাসান Click This Link
৪। উইকিপিডিয়া Click This Link
৫।২১শে ফেব্রুয়ারি এলেই আমরা শোক পালনের অভিনয় করি -মুহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন http://blog.bdnews24.com/ShakhawatBabon/69140
৬। আমাদের মাতৃভাষা- Click This Link

৭। Importance of mother language in Islam- Prof. Hasan Abdul Quayyum Click This Link
-----------------------------------------------------------------------
>>> ফয়সাল হাসান [email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:৪৪
১৫টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×