somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মিজানুর রহমান মিরান
অন্ধকারের কাছ থেকে আলোকে ছিনিয়ে আনার চেষ্টায় প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছি। জানিনা এ চেষ্টা কতদিন চালিয়ে যেতে পারবো। স্রষ্টার এই অপরূপ পৃথিবীর সৌন্দর্য অবলোকন করার জন্য কোনো কিছুরই প্রয়োজন নেই, শুধু মানুষ হওয়া প্রয়োজন।

কৃষ্ণকলি আমি তাদের বলি..

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আচ্ছা গায়ের রঙ কালো হয়ে জন্ম নেয়াটা কি মেয়েটার দোষ? একটা কালো মেয়েকে আমাদের তথাকথিত সমাজে কতটা বিরূপ পরিস্থিতির ভিতর জীবন অতিবাহিত করতে হয় সেটা কালো মেয়ে মাত্রই জানে। শরীরের চামড়া কালো হওয়া যেনো আজন্ম পাপ। তার জীবনটাই যেনো এক অভিশাপ। জন্ম থেকেই অবহেলা, অনাদর, আপনজনের করুনার চাহনি, বাবার উদ্বিগ্ন দৃষ্টি, মায়ের অব্যক্ত কষ্ট... এসবের ভিতর দূর্বিষহ জীবন পার করতে হয় একটা কালো মেয়েকে। কালো বলে মেয়েটার তেমন বন্ধুও জোটে না, জোটলে নেহায়ৎই কম। কালো মেয়েদের সাথে কেই বা বন্ধুত্ব করতে চাই বলেন, সবাই যে বাহ্যিক সৌন্দর্যের পূজারী। আর প্রেম... সে তো বিশাল ব্যাপার! আজকাল কেউ গুনের প্রেমে পড়ে না, সবাই রূপ খুঁজে। কালো মেয়েটারও ইচ্ছে হয় ভালোবাসা পেতে, তারও মন চাই কেউ তাকে ভালোবাসুক। তার জন্য কলেজ ছুঠির টাইমে কেউ একজন অপেক্ষা করুক, তার রঙ কে নয় তার গুনগুলোকে ভালোবাসুক। তাকে মন থেকে বলুক, "তোমায় ভালোবাসি"। মেয়েটিও চাই কেউ একজনকে খুব করে ভালোবাসতে। কিন্তু... মেয়েটার খুব অভিমান হয় সৃষ্টিকর্তার উপর। একটা পছন্দসই পোশাক পড়তে গেলেও সবাই বলে উঠে, এই ঐটাতে তোমাকে মানাবে না, তোমার রঙ কালো! কোথাও কোনো অনুষ্টানে বান্ধবীরা যখন একসাথে আড্ডা দেয়, তখন সে একটু দূরে দূরেই থাকে। মেয়েটারও খুব ইচ্ছে হয় সবার সাথে আড্ডা দিতে, গ্রুপ পিক তুলতে, কিন্তু নিজের গায়ের কালো রঙ কে দূর্বলতা মনে করে সে সবার কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখে। আচ্ছা কালো হওয়া কি দূর্বলতা?! কালো বলে মেয়েটার পড়াশুনাও বেশিদূর এগোয় না। একে তো কালো, তার উপর বেশি বয়স হলে বিয়েই হবেনা। এই ভেবেই পরিবার তার বিয়ের জন্য তোরজোড় শুরু করে দেয়। একে একে অনেক পাত্র আসে তাকে দেখতে, সবারই একটি কথা.. "সে একটু বেশিই কালো, আর একটু ফর্সা হলে ভালো হত"! শেষ পর্যন্ত হয়তো অনেক ডিম্যান্ড এর বিনিময়ে মেয়েটার একটা রফা হয়। তারপর শশুরবাড়ি... সেখানে কি সে এই অভিশাপ থেকে বের হতে পারে? না, পারে না। ছেলেপক্ষের আত্বীয়-প্রতিবেশী কানাঘুষা করতে থাকে, "এত সুন্দর ছেলে একটা কালো মেয়েকে বিয়ে করতে গেলো কেনো!!" ছেলেটার রুচির যা শ্রি.. নিশ্চয়ই অনেক টাকা নিয়েছে! ইত্যাদি ইত্যাদি... আরও কত কিছু। মেয়েটার কানেও পৌছে কথাগুলো, মনটা তখন হু হু করে উঠে, দীর্ঘশ্বাস নিয়ে শুরু হয় নতুন জীবন। এভাবেই একটি কালো মেয়ের জীবনের দীর্ঘশ্বাস গুলো কখনো অশ্রু হয়ে ঝড়ে, কখনো বা বুকটা চাঁপা কান্নায় চিনিচিন করে উঠে। কেউ কালো কিংবা অসুন্দর হলে সেটা তার দোষ নাকি পাপ? কেউ অসুন্দর হলে সে কি সুন্দর মানুষের স্বপ্ন দেখতে পারেনা! খুব আফসোস হয় এই একবিংশ শতাব্দীতেও আমাদের সমাজে এখনো মানুষের চামড়ার রঙ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে দেখে, হয় ঘৃনাও। মেয়ে... তোমাকেই বলছি, কালো কিংবা ফর্সা কখনই একজন মেয়ের সৌন্দর্যের কারন হতে পারে না। এটা কোনো বিষয়ই নয়। আসল কথা হলো তুমি নিজেকে খুঁজো, তোমার ভিতরের প্রতিভাকে বিকশিত করো। তোমার জ্ঞান, গুনই তোমার সৌন্দর্য, যা তোমার মৃত্যু অবধি থাকবে। আশে পাশে কে কি বললো, সেটা না শুনে সামনে এগিয়ে যাও। সৌন্দর্য হলো লস প্রজেক্ট, সেটা একসময় নিঃশেষ হবে, একটু বয়স হলেই চামড়া কুঁচকে যাবে। তখন সৌন্দর্যটা কি আর থাকে। একটা মেয়ের সৌন্দর্য কত বছর স্থায়ী হয়; কম বেশি চল্লিশ বছর। তাই এটার কোনো মূল্য নেই। মোটকথা তুমি কালো বলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই, তোমার প্রতিভাই তোমাকে মানুষের কাছে স্বরনীয় করে রাখবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৭
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×