somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবদুল মান্নান সৈয়দের কিছু ধর্মীয় কবিতা

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হযরত মুহম্মদ (সা.) : আবির্ভাব

হাসসান ইবনে সাবিত রা. বলেন, ‘ আমি তখন সাত-আট বছরের বালক হলেও বেশ শক্তিশালী ও লম্বা হয়ে উঠেছি। যা শুনতাম তা বুঝতে পারার ক্ষমতা তখন হয়েছে।হঠাৎ শুনতে পেলাম জনৈক ইহুদী ইয়াসরিবের (মদিনার) একটা দুর্গের উপর উঠে উচ্চস্বরে “ ওহে ইহুদী সমাজ।” চিৎকার করে উঠলো।লোকেরা তার চারপাশে জমায়েত হয়ে বললো, “তোমার কি হয়েছে?”সে বললো, “ আজ রাতে আহমদের জন্মের সেই নক্ষত্র উদিত হয়েছে।”
-সীরাতে ইবনে হিশাম



ইয়াসরিবের দূর্গ থেকে জন্মের তারকা আহমদের
ওই দ্যাখো হতবাক হ’য়ে দেখছো ইহুদীসমাজ।
পৃথিবীর যুগযুগান্তরের আশা পূর্ণ হল আজ।
‘সালাম! সালাম!’ ধ্বনি ছেয়ে গেলো সমস্ত জগতে।

শতাব্দীর প্রজ্বলিত অগ্নিকুন্ড হ’লো নির্বাপিত।
আলোকিত হ’য়ে উঠলো সিরিয়ার প্রাসাদমন্ডলী।
জমিন-আসমান সব নত হ’য়ে লিখলো গীতাঞ্জলি।
পারস্যের প্রাসাদের চোদ্দ চূড়া ভূতল-লুন্ঠিত।

দ্বাদশ রজনী -সোমবার- রবিউল আউয়াল
বক্ষে তাঁকে পেয়ে হ’লো হর্ষে মত্ত,উদ্দাম,উত্তাল।
সোমবার - - দ্বাদশ রজনী
ধন্য হ’লো বক্ষে পেয়ে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রত্নমণি।
রবিউল আউয়াল- দ্বাদশ রজনী- সোমবার
সালামে-চুম্বনে তাঁকে রোমাঞ্চিত নিজেই বারবার।।



স্তরে-স্তরে

আমি শপথ করি গোধূলির, আর রাত্রির আর তা যে ঢেকে দেয় তার,
আর শপথ করি চন্দ্রের যখন সে পূর্ন! তোমরা নিশ্চয় এক স্তর থেকে আর এক স্তরে বিচরন করবে!
-৮৪: ১৬-১৯ কুরআন শরীফ



শপথ সন্ধ্যার আর ঘননীল সুশান্ত রাত্রির,
আমিও জেনেছি এই জীবনের পরম বিকাশ:
এই তো কন্টকে বিদ্ধ, এইমাত্র কুসুম সংকাশ:
বিপুল ঐশ্বর্যে ঝুলি ভ’রে গেছে সামান্য যাত্রীর।

পথে-পথে পাওয়া গেল অফুরন্ত হিরে-জহরত-
দু:খের নিকষে শুদ্ধ।কতো স্তর, কতো স্তরান্তর:
জিভে লাগে নোনা স্বাদ, কানে বাজে মধু কন্ঠস্বর:
দু:খে সুখে বেজে চলে অক্লান্ত প্রানের নহবত।

শপথ দিনের আর পরিপূর্ন সহাস্য চন্দ্রের,
আমিও জেনেছি এই জীবনের আতীব্র দহন; -
একই সঙ্গে দেখিনি কি গদ্যময় বাস্তবে ছন্দের
দোলাও চলেছে, যেন কুড়েঁ ঘরে নূপুরনিক্বন?
হে রাজাধিরাজ! হে সর্ব ব্যাপ্ত পবিত্র মহান!
মেনেছি পঞ্চাশে এসে: একান্ত তোমারি সব দান।।


আল্লাহ

(হজরত আলী রা: -র বর্ননানুসরনে)

তিনি ছাড়া কেউ জ্ঞানী নয়, সকলেই জ্ঞানের অনুসন্ধানকারী।
-রাহজুল বালাঘা: হজরত আলী (রা.)


তাঁকে কেউ দেখেছে মরচক্ষে? দৃষ্টির নন্দনে?
কেবল হৃদয়ে তাঁকে কেউ-কেউ করে অনুভব।
সমস্ত বস্তুর মধ্য মিশে তিনি আছেন গোপনে-
অথচ স্পর্শ তাঁকে করতে পারেনা এইসব।

সমস্ত দ্যাখেন তিনি-কিন্তু তার দৃষ্টি নেই কোনো।
নির্মান করেন তিনি-কিন্তু কোনো হাত দিয়ে নয়।
সব-কিছু থেকে দূরে-কিন্তু নন বিচ্ছিন্ন কখনো।
-তাকে পেতে হলে, প্রিয় মুক্ত করো তোমার হৃদয়!

তিনিই প্রথমতম-যাঁর পূর্বে ছিলোনা প্রথম।
তিনিই সর্বশেষ-যাঁর পরে নেই কোন শেষ।
জীবনের অন্তস্তলে রয়েছেন নীরবে, গভীরে।
সকল প্রশংসা তার-যিনি পরমতম পরম।
সকল জ্ঞানের উৎস-যিনি অনশ্বর, অনিঃশেষ।
-খেলাধুলো সাঙ্গ হলে আমরা যাবো তাঁর কাছে ফিরে।।




হজরত মুহম্মদ (সা.) : তিরোভাব


(হাসসান ইবনে সাবিত রা. -এলেজির কথা মনে রেখে)
রাত্রে লোকেরা [ রাসুলুল্লা সা. -কে সমাহিত করার মাধ্যমে] জ্ঞান, দয়া ও সহিষ্ণুতাকে সমাহিত করেছে...

- হাসসান ইবনে সাবিত (রা.)


‘ছিলাম ঝর্নার পাশে; কণ্ঠ শুষ্ক তৃষ্ণায় এখন।-
কেননা সমস্ত জ্ঞান, সব দয়া-সহিষ্ণুতা-
মাটির অনেক নীচে চলে গেছে।ক্রন্দন-ক্বণন
ব্যপ্ত কখনো, কখনো কথা বলেছে শুধুই নিরবতা।

কেঁদেছে মসজিদ আর কেঁদেছে নির্জন স্থানগুলি
তাঁর শোকে। কাঁদেনি কে? চরাচর, মৃত্তিকা, আকাশ
এখন রোদনশীল। কেঁদে ফেরে নক্ষত্র ও ধুলি।-
নির্বাপিত হয়েছেন আল্লার জ্যোতির উদ্ভাস।’

-চোদ্দ শো বছর পরেকার এই বাংলা কবিতায়
একথা জানাতে চাই:- আজো তাঁর আত্মার বিভায়
পরিব্যাপ্ত এই পৃথিবী। তিনি এক অজেয় পর্বত।
মানবজাতির জন্য খুলে দিয়েছেন মুক্তিপথ।
কোটি হৃদয়-উদ্যান ভ’রে গেছে তাঁর ফুলে ফলে:
জ্ঞান, দয়া, সহিষ্ণুতা ছড়িয়ে পড়েছে ভূ মন্ডলে।।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×