somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাহাড়কন্যার গল্পছবি_পর্ব ১

২৬ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সময়টা মার্চ, ২০১৯। অফিস থেকে পাওয়া বিয়ের গিফটটা অনেকদিন ঝুলিয়ে রেখেছিলাম পারফেক্ট সময়ের জন্য। সবকিছু মিলিয়ে সময় মিলাতে পারছিলাম না। অবশেষে ফুসরত মিলল আবার হানিমুনে যাবার! এবার যাচ্ছি পাহাড়কন্যা দার্জিলিং-এ। কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখবো বলে। আরেকটা উদ্দেশ্য আছে অবশ্য। পরে বলছি!!

১০ মার্চ, ২০১৯

৬ টা পর্যন্ত অফিস করে বাসায় ফিরেই দৌড় লাগালাম কমলাপুরের উদ্দেশ্যে। ৯ টার ট্রেন ধরতে হবে যে!
১। কমলাপুর ষ্টেশন



ট্রেনে উঠে খানিকটা ভিরমি খেতে হল। প্রচণ্ড ভিড়ের জন্য অস্থির লাগছিল। গাজীপুর পার হওয়ার পর অবশ্য ভিড় কমতে শুরু করে। ট্রেনেই আমাদের ডিনার ছিল কলা, আঙুর আর খেজুর!

১১ মার্চ, ২০১৯

২। ভোর হচ্ছে। আমরা তখন ঠাকুরগাঁও।



৩। সোয়া আটটায় আমরা পঞ্চগড় ষ্টেশনে নেমেছি।



৪। পঞ্চপড়ের আদি নাম পচাঁগড় ছিল!



পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা যাওয়ার জন্য লোকাল বাস ছাড়া উপায় নেই। ডিরেক্ট নামে চললেও এরা থামে ভালোই। সেদিন ওখানে কোন একটা উপনির্বাচন হওয়ার কারণে রাস্তাঘাট ছিল বেজায় ফাঁকা। বর্ডারে পৌঁছে ইমিগ্রেশনে খুব বেশি সময় লাগেনি। ভিড় তো একদমই নেই। বেনাপোল বা তামাবিল পয়েন্টে যেমন ভিড় হয় বা যত সময় লাগে। এখানে একদমই নির্ঝঞ্ঝাট। ওপারে গিয়ে মজুমদার মানি এক্সচেঞ্জার থেকে রুপি করে নিলাম।

৫। বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট



৬। ইমিগ্রেশন আনুষ্ঠানিকতা শেষ। বর্ডার খুলে দিয়েছে আমাদের জন্য!



বর্ডার পার হয়ে ওদের টোটোতে (আমাদের ব্যাটারিচালিত অটোকে ওরা টোটো বলে) চেপে শিলিগুড়ি গেলাম। সেখান থেকে দার্জিলিং-এ যাওয়ার জন্য জিপ ঠিক করে বেলা ১ টার দিকে রওনা হলাম। গরম থেকে আস্তে আস্তে ঠাণ্ডা অনুভূত হওয়া শুরু হচ্ছে। সমতলভূমি থেকে উপরে উঠছি ধীরে ধীরে। যতই উপরে উঠছি কানে চাপ লাগা অনুভূতি হচ্ছে। পথিমধ্যে ব্রেক নেয়ার জন্য জিপ থামল। যতদূর চোখ যায় শুধু পাহাড় দেখা যায়। আঁকাবাঁকা রাস্তা আর একটু পরপর কোত্থেকে চলে আসা মেঘের জন্য জিপের গতি কমিয়ে দিল। বিকেল সাড়ে চারটায় আমরা গন্তব্যে পৌঁছে যাই। তখন পুরো কুয়াশা ভরপুর চারিদিক। এবার হোটেল খোঁজার পালা শুরু।

৭। খোঁজাখুঁজি করে অবশেষে বিকেল সোয়া পাঁচটায় এই হোটেলে উঠলাম।



একদম প্রচুর গরম পানিতে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে আমরা দুপুরের খাবারের জন্য বের হলাম। যদিও তখন প্রায় সন্ধ্যা হই হই করছে। মেঘে পুরো এলাকা ছেয়ে গিয়েছে।

৮। ক্ষুধার্ত। ভাত খাবো!! গরু দিয়ে। ধোঁয়া ওঠা গরুর মাংস দেয়ার সাথেসাথেই জমে গেল ঠাণ্ডায়! ইন্ডিয়ার যেকোন জায়গাতেই গরুর মাংস মোটামুটি সস্তায় পাওয়া যায়। ৮০ রুপি দিয়ে গরুর মাংস আর কলিজা সাথে দুইজন ৪০ রুপির ভাত। ১২০ রুপিতে খাওয়া হয়ে গেল।



৯। এবার টৈটৈ করার পালা। প্রচুর এলোমেলো ঘোরাঘুরি করলাম। বারফি মুভির সেই ঘড়িটা পেয়ে গেলাম। এখানে অনেক রাত পর্যন্তও ইচ্ছেমত ঘোরাঘুরি করা যায়। নিরাপত্তা নিয়ে কোন চিন্তা নেই। রাস্তার ফুটপাতে বাহারি কেনাকাটার আয়োজন। হাপিয়ে ঝাপিয়ে কিনতে হবে একদম। মানুষজন পাগলের মত কেনাকাটা করছে, যেন এক্ষুনি ট্রেন ছেড়ে দিবে। আমরা ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা পেতে সোয়েটার আর টুপি কিনলাম। জাপানিস শপ মিনিসোতে গেলাম। ঠাণ্ডা বাড়তে শুরু করেছে। পাহাড়ী ঠাণ্ডায় রাত নামে দ্রুত।



১০। ঘুরেটুরে হোটেলে ফিরবার পালা। আর হ্যাঁ এখানে কিন্তু শুধু হাঁটতেই হবে। ট্যাক্সি জিপ ছাড়া অন্য কোন বাহন নেই। রাতের খাবার আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম। লোভনীয় স্ট্রিট ফুড! চওমিন, বার্গার, মোমো, ডিম পরোটা, চিকেন স্টিক আরো কত কি!



হোটেলের বারান্দা থেকে পাহাড়ের গায়ে মিটিমিটি বাতিগুলো অভুতপূর্ব লাগে দেখতে। ঘুমাতে গিয়ে তো ওরে বাবা অবস্থা!! তিনটা কম্বলেও শীত মানেনা। হিমালয় থেকে আসা হিম বলে কথা! কাঁপতে কাঁপতে ছোট্ট নোটবুকে সারাদিনের অভিজ্ঞতাটুকু টুকে রাখি।

পরেরদিনের গল্পছবি নিয়ে পরের পর্বে আসছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৩১
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×