হালাল পশুর গোশত আমরা খেয়ে থাকি। কিন্তু সঠিকভাবে অনেকেরই হয়তো জানা থাকে না যে, হালাল পশুর সব কিছুই খাওয়া কি হালাল? না কি কোন অংশ এমন আছে যেগুলো খাওয়া হারাম?
ফলে প্রায়শই সমস্যার সৃষ্টি হতে দেখা যায়। দ্বিধা দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়। যদিও কারও কারও কাছে এটি খুবই ক্ষুদ্র মনে হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়, কিন্তু আমার নিকট অতিব গুরুত্বপূর্ন। কারন, এর সাথে হালাল হারামের প্রশ্ন। জেনে হোক আর না জেনে হোক, হারাম দ্রব্য ভক্ষন কোনো অবস্থাতেই কারও কাম্য নয়। এই কারনে প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তিরই জানা থাকা উচিত বিষয়টি।
আসুন, সমাধানের দিকে লক্ষ্য করি- মূলত: হালাল পশুর সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গই খাওয়া হালাল নয়। কিছু অংশ এমন আছে যেগুলো খাওয়া মুসলমানের জন্যে হারাম। সেগুলো সংখ্যা ৭টি। যথাঃ
১। প্রবাহিত রক্ত।
২। নর প্রাণীর পুং লিঙ্গ।
৩। অন্ডকোষ।
৪। মাদী প্রাণীর স্ত্রী লিঙ্গ।
৫। মাংসগ্রন্থি।
৬। মুত্রথলি।
৭। পিত্ত।
এছাড়া বাকি সবই খাওয়া হালাল এবং জায়েয। দেখুন-
وَأَمَّا بَيَانُ مَا يَحْرُمُ أَكْلُهُ مِنْ أَجْزَاءِ الْحَيَوَانِ الْمَأْكُولِ فَاَلَّذِي يَحْرُمُ أَكْلُهُ مِنْهُ سَبْعَةٌ: الدَّمُ الْمَسْفُوحُ، وَالذَّكَرُ، وَالْأُنْثَيَانِ، وَالْقُبُلُ، وَالْغُدَّةُ، وَالْمَثَانَةُ، وَالْمَرَارَةُ لِقَوْلِهِ عَزَّ شَأْنُهُ {وَيُحِلُّ لَهُمُ الطَّيِّبَاتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْخَبَائِثَ} [الأعراف: 157] وَهَذِهِ الْأَشْيَاءُ السَّبْعَةُ مِمَّا تَسْتَخْبِثُهُ الطِّبَاعُ السَّلِيمَةُ فَكَانَتْ مُحَرَّمَةً. (بدائع الصنائع، كتاب التضحية، باب صفة التضحية، فَصْلٌ فِي بَيَانُ مَا يَحْرُمُ أَكْلُهُ مِنْ أَجْزَاءِ الْحَيَوَانِ الْمَأْكُولِ-5/61، وكذا فى الفتاوى الهندية-5/290، وفى رد المحتار، كتاب الأضحية
الغُدَّةُ والغُددَةُ: كُلُّ عُقْدَةٍ فِي جَسَدِ الإِنسان أَطاف بِهَا شَحْم. والغُدَدُ: الَّتِي فِي اللَّحْمِ، (لسان العرب، فصل الغين المعجمة
রেফারেন্স যা উল্লেখ করা হয়েছে ধারনা করি এগুলো অথেন্টিক। আরবি বুঝতে হয়তো কারও কারও একটু অসুবিধা হতে পারে। তাই আপনার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রেফারেন্সে উল্লেখকৃত কিতাবগুলোর নাম বাংলায় যুক্ত করে দেয়া হল পোস্টে:
১। বাদায়িউসসানায়ে'।
২। ফাতাওয়া হিন্দিয়াহ।
৩। রদ্দুল মুহতার এবং
৪। লিসানুল আরব।
এছাড়াও কোন কোন আলেমের মতে হালাল জবেহকৃত পশুর মেরুদন্ডের হাড়ের ভিতরের মগজ খাওয়া মাকরূহ। তাই তা না খাওয়া উচিত। (দ্রষ্টব্য: ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী)
উল্লেখ্য, গ্রামে সাধারনত: দেখা যায়, গৃহস্তরা কিছু মুরগী পালন করে থাকেন, যা ছেড়ে দেয়া হয় এবং শস্যাদি ও নাপাক ইত্যাদি সবকিছুই খায় তা খাওয়া যাবে কি না- এ ব্যাপারেও অনেকের প্রশ্ন থাকে। এর উত্তর হচ্ছে- যেসব মুরগি খোলা থাকে এবং নাপাক বস্তু খেয়ে বেড়ায় তাদেরকে তিন দিন বেঁধে রেখে জবেহ করতে হবে। তিন দিন না বেঁধে এগুলো ভক্ষন করা মাকরূহ। আর যদি শিউর হওয়া যায় যে, খোলামেলা থাকা সত্বেও এগুলো নাপাক কোনো বস্তু ভক্ষন করার সুযোগ পায় না, কিংবা খায় না তাহলে সেগুলো তিন দিন বাঁধা ছাড়া খাওয়া যাবে। (দ্রষ্টব্য: হেদায়া)
আল্লাহ পাক আামাদের জেনে বুঝে সঠিকভাবে সকল আমল করে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করার তাওফিক দান করুন।
ছবি কৃতজ্ঞতা: গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ সকাল ৮:৪০