somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

কিয়ামত বা মহাপ্রলয়: কুরআন হাদিসের আলোকে কিয়ামতের ছোট বড় গুরুত্বপূর্ণ আলামতসমূহ:

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কিয়ামত বা মহাপ্রলয়: কুরআন হাদিসের আলোকে কিয়ামতের ছোট বড় গুরুত্বপূর্ণ আলামতসমূহ:

আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন। অচ্ছালাতু অচ্ছালামু আলা সায়্যিদিল আমবিয়ায়ি ওয়াল মুরসালীন। ওয়া আলা আলিহী ওয়া আসহাবিহী আজমাঈন।

তিরমিজি শরীফে বর্ণিত একখানা হাদীস উদ্ধৃত করে আলোচনা শুরু করছি। কিয়ামত বা মহাপ্রলয় সম্পর্কে এই হাদিসে ১৩ টি আলামতের উল্লেখ রয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূলে মাকবুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- "১. যখন জিহাদে প্রাপ্ত মালকে ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত করা হবে, ২. আমানতকে লুটের মালের ন্যায় ও ৩. জাকাতকে জরিমানা বা দণ্ড মনে করা হবে, ৪. বিজাতীয় শিক্ষা গ্রহণ করা হবে, ৫. পুরুষ স্বীয় স্ত্রীর অনুসরণ করবে এবং মাতাকে অমান্য করবে, ৬. বন্ধু-বান্ধবকে নিকটে স্থান দিবে ও পিতাকে দূরে রাখবে, ৭. মসজিদসমূহে উচ্চস্বরে কথাবার্তা বলে হবে, ৮. ফাসিক (নাফরমান) ব্যক্তি গোত্রের নেতা হবে, ৯. চরিত্রহীন নিম্ন শ্রেণীর লোক রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করবে, ১০. কোন ব্যক্তির অত্যাচার থেকে বেঁচে থাকার জন্যই তাকে সম্মান করা হবে, ১১. গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্র বহুল পরিমাণে প্রকাশ হয়ে পড়বে, ১২. মদ পান করা হবে এবং ১৩. পরবর্তী যুগের লোকেরা পূর্ববর্তী লোকদের প্রতি লানত করবে।



উল্লেখিত নিদর্শনগুলো দেখা দিলে তোমরা লাল অগ্নিযুক্ত বায়ু, ভুমিকম্প, ভুমি ধ্বসে যাওয়া, লোকের আকৃতি পরিবর্তন হওয়া, পাথর বর্ষিত হওয়া এবং অন্যান্য আরো আজাব ও গজবের জন্য অপেক্ষা করো, যেমন তসবীহর সুতা কেটে দিলে দানাগুলো দ্রুত খসে পড়ে, এমনিভাবে আল্লাহ্‌র গযবও একের পর এক পৌছবে।"

হাদিস পাঠে জানা যায় যে, হযরত জিবরাঈল (আঃ) ২৪ হাজার বার দুনিয়াতে হুজূরে আকরাম (ﷺ) এর দরবারে এসেছিলেন। এক সাক্ষাতে হুজূরে পাক (ﷺ) জিবরাঈল (আঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন- হে জিবরাঈল, আমার ইন্তেকালের পরে আপনি কতবার দুনিয়াতে আসবেন? তিনি বললেন- ১০ বার আসব এবং প্রতিবারই একটি করে জিনিস তুলে নেব। দশম জিনিসটা তুলে নেওয়ার পর ঈসরাফিল (আঃ) সিঙ্গায় ফুঁ দিবেন এবং কেয়ামত আরম্ভ হবে।



দশটি জিনিস হল:-
১) বরকত তুলে নেব
২) এবাদত থেকে মজা তুলে নেব
৩) পরস্পর মহব্বত তুলে নেব
৪) লজ্জা তুলে নেব
৫) হক বিচার তুলে নেব
৬) ছবর (ধৈর্য্য) তুলে নেব
৭) একদল আলেম বের হবে য়ারা সত্য হক কথা বলবে না
৮) ধনীদের সৎ সাহস উঠিয়ে নেব
৯) ঈমানদার থাকবে না, ঈমান উঠে যাবে
১০) ক্বারীদের কাছ থেকে কুরআনের তিলাওয়াত তুলে নেব, অর্থাৎ কুরআনকে উঠিয়ে নেব।

কেয়ামত শব্দটির ব্যাখ্যা:
আরবী 'কিয়াম' শব্দ থেকে 'কিয়ামত' শব্দের উৎপত্তি, যার অর্থ হচ্ছে- দাঁড়ানো বা থেমে যাওয়া । প্রচলিত অর্থে ভবিষ্যতের কোন এক সময় অনুষ্ঠিতব্য মহাপ্রলয়কে 'কিয়ামত' বলা হয় ।

মহাপ্রলয় সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে-
অর্থ-"যখন আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে, যখন তারাগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাবে, যখন সমুদ্র উথলে উঠবে, যখন কবরগুলো উন্মোচিত করা হবে, তখন প্রত্যেকে জানবে সে আগে কি পাঠিয়েছিল আর পিছনে কি রেখে এসেছে" (সূরা- ইনফিতার, আয়াত- ১-৫) ।

অন্যত্র এরশাদ হয়েছে-
অর্থ- "সাত আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে এবং তা সেদিন নিস্তেজ বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়বে, আর ফেরেশতাগণ আকাশের কিনারায় কিনারায় থাকবে এবং সেদিন আটজন ফেরেশতা তাদের প্রতিপালকের আরশকে নিজেদের উপর ধারণ করবে; সেদিন তোমাদেকে উপস্থিত করা হবে এবং তোমাদের কোন কিছুই গোপন থাকবে না" (সূরা- হাক্কাহ, আয়াত- ১৬-১৮) ।

পবিত্র কুরআনে আরও এরশাদ হয়েছে-
অর্থ-"প্রত্যেক মানুষের কৃতকর্ম আমি তার গ্রীবালগ্ন করেছি এবং কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য বের করবো এক কিতাব, যা সে পাবে উন্মুক্ত । আমি বলব, তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব নিকাশের জন্য যথেষ্ট" (সূরা- বনী ইসরাইল, আয়াত- ১৩-১৪) ।



অন্যত্র আছে-
অর্থ-"কিয়ামতের দিন তাদের সকলেই তাঁর নিকট আসবে নিঃসঙ্গ অবস্থায়" (সূরা- মরিয়ম, আয়াত- ৯৫ ) ।

পবিত্র কুরআনে আরো এরশাদ হয়েছে-
অর্থ-"কিয়ামত দিবসে আমি স্থাপন করবো ন্যায় বিচারের মানদণ্ড । সুতরাং কারও প্রতি কোন অবিচার করা হবে না এবং কর্ম যদি তিল পরিমাণ ওজনেরও হয় তবুও উহা আমি উপস্থিত করব, হিসাব গ্রহণকারীরূপে আমিই যথেষ্ট" (সূরা- আম্বিয়া, আয়াত- ৪৭) ।

পবিত্র কুরআনে আরো ঘোষণা করা হয়েছে-
অর্থ-"তোমাদের আত্মীয়-স্বজন ও সন্তান সন্তুতি কিয়ামতের দিন কোন কাজে আসবে না । আল্লাহ্‌ তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করে দিবেন তোমরা যা কর তিনি তা দেখেন" (সূরা- মুমতাহিনা, আয়াত- ৩) ।

পবিত্র কুরআনে আরো এরশাদ হয়েছে-
অর্থ-"জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে, কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে তোমাদের কর্মফল পূর্ণ মাত্রায় দেয়া হবে । যাকে অগ্নি হতে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে দাখিল করা হবে সে-ই সফলকাম এবং পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নিয়" (সূরা- আলে ইমরান, আয়াত- ১৮৫) ।

এছাড়াও কিয়ামত সম্পর্কে আরো যেসকল আয়াত রয়েছে নিম্নে তা প্রদত্ত হলো- সূরা- নাহল, আয়াত- ২৫, ১২৪; সূরা- বনী ইসরাইল, আয়াত- ৫৮; সূরা- আম্বিয়া, আয়াত- ৪৭; সূরা- কেছাছ, আয়াত- ৭১-৭২ ।



কেয়ামতের আলামত:
কেয়ামতের আলামত দুই ধরনের। ছোট ও বড়। ছোট আলামত বলতে সেসব লক্ষণকে বোঝানো হয় যা কেয়ামতের অনেক আগে থেকে সংঘটিত হয়ে আসতে থাকবে। কেয়ামতের ছোট আলামতের সংখ্যা অনেক। এ বিষয়ে আল কুরআনুল কারিমের কোনো কোনো সূরায় কিছু আলামতের প্রতি ইঙ্গিত থাকার পাশাপাশি অনেক সহিহ হাদিস রয়েছে। এখানে আলামতগুলো বর্ণনার ক্ষেত্রে আমরা শুধু হাদিসগ্রন্থের নাম উল্লেখ করব।

কেয়ামতের পূর্বে কেয়ামতের নিকটবর্তিতার প্রমাণস্বরূপ যে আলামতগুলো প্রকাশ পাবে সেগুলোকে ছোট আলামত ও বড় আলামত নামে আখ্যায়িত করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছোট আলামতগুলো কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার অনেক আগেই প্রকাশিত হবে। এর মধ্যে কোন কোন আলামত ইতোমধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে। কোন কোন আলামত প্রকাশ হওয়ার পরে আবার পুনঃপ্রকাশ পাচ্ছে। কিছু আলামত প্রকাশিত হয়েছে এবং অব্যাহতভাবে প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে। আর কিছু আলামত এখনো প্রকাশ পায়নি। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সংবাদ অনুযায়ী সেগুলো ইনশাআল্লাহ অচিরেই প্রকাশ পাবে।

কেয়ামতের ছোট আলামতগুলো নিম্নরূপ:
১. রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমন। বোখারি;
২. তাঁর ওফাত। বোখারি;
৩. তাঁর আঙুলের ইশারায় চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হওয়া। সূরা কামার ১-২;
৪. সাহাবাগণের বিদায়। মুসলিম;
৫. বায়তুল মোকাদ্দাস বিজয়। বোখারি;
৬. দুইটি প্রলয়ঙ্করী মহামারী (যা ১৬ ও ২৫ হিজরিতে হয়েছিল।) বোখারি;
৭. নানা ধরনের ফিতনা প্রকাশ ঘটবে। মুসলিম;
৮. আকাশ মিডিয়ার বিস্তার। ইবনে আবি শায়বা;
৯. সিফফিনের যুদ্ধ (যা আলী ও মুয়াবিয়া (রা.) এর মাঝে ঘটেছিল)। বোখারি ও মুসলিম;
১০. খারেজিদের প্রকাশ। বোখারি;
১১. ৩০ জন নবুয়তের দাবিদার, মহামিথ্যুকের প্রকাশ। বোখারি;
১২. সুখ-শৌখিনতা বৃদ্ধি ও দূর-দূরান্ত পাড়ি দেয়া সহজ হয়ে যাবে। আহমাদ;
১৩. হেজাজ থেকে আগ্নেয়গিরি প্রকাশ। বোখারি;
১৪. মুসলমানদের সঙ্গে তুর্কিদের যুদ্ধ। (যা সাহাবিযুগে হয়েছিল) বোখারি;
১৫. জুলুমবাজ লোকেরা ছড়ি ও চামড়ার বেত দিয়ে নিরীহ মানুষকে প্রহার করবে। আহমাদ;
১৬. খুন বেড়ে যাবে। মুসলিম;
১৭. অন্তর থেকে আমানত উঠে যাবে। বোখারি;
১৮. ইহুদিদের অনুকরণের প্রবণতা বেড়ে যাবে। বোখারি;
১৯. ক্রীতদাসীর গর্ভ থেকে মালিকের জন্ম হবে। মুসলিম;
২০. স্বল্পবসনা নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে। মুসলিম;
২১. ছাগলের রাখাল, নগ্নপদের লোকেরা ও বস্ত্রবঞ্চিতরা অট্টালিকা হাঁকাবে। মুসলিম;
২২. চেনাজানা ও বিশিষ্ট লোকদের সালাম দেয়ার প্রচলন হবে। ইবনে খুজাইমা;
২৩. ব্যবসার ব্যাপক বিস্তার ঘটবে। আহমাদ; ২৪. স্বামীর ব্যবসায় (শেয়ার হিসেবে) স্ত্রী যোগ দেবে। আহমাদ;
২৫. কিছু ব্যবসায়ী গোটা বাজার নিয়ন্ত্রণ করবে। আহমাদ;
২৬. মিথ্যা সাক্ষী বেড়ে যাবে। আহমাদ;
২৭. সত্য সাক্ষ্য গোপনের প্রবণতা বাড়বে। আহমাদ;
২৮. মূর্খতা বেড়ে যাবে। বোখারি;
২৯. মানুষের অন্তরে হিংসা ও কৃপণতা বৃদ্ধি পাবে। আহমাদ;
৩০. প্রতিবেশীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। আহমাদ
৩১. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের প্রবণতা বাড়বে। আহমাদ;
৩২. অশ্লীলতার সয়লাব শুরু হবে। আহমাদ;
৩৩. আমানতদারকে অবিশ্বাস আর খেয়ানতকারীদের বিশ্বাস করা হবে। হাকেম;
৩৪. সমাজের ভালো লোকেরা দ্রুত বিলুপ্ত হবে ও নিচু লোকদের উত্থান হবে। হাকেম;
৩৫. সম্পদ কোথা থেকে কীভাবে এলো তার বাছবিচার করবে না কেউ। বোখারি;
৩৬. যুদ্ধলব্ধ সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন হবে না। তিরমিজি;
৩৭. আমানতকে গনিমতের সম্পদ ভেবে ভোগ করা হবে। তিরমিজি;
৩৮. জাকাতকে জরিমানা মনে করা হবে। তিরমিজি;
৩৯. পার্থিব উদ্দেশ্যে এলম শিখবে। তিরমিজি;
৪০. মানুষ স্ত্রীর কথা শুনবে, মায়ের কথা শুনবে না। তিরমিজি;
৪১. পিতাকে দূরে রেখে বন্ধুদের কাছে টানা হবে। তিরমিজি;
৪২. মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলা ও হৈহট্টগোলের প্রবণতা দেখা যাবে। তিরমিজি;
৪৩. অপরাধী ও অসৎ লোকেরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতা হবে। তিরমিজি;
৪৪. সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি সমাজের নেতৃত্বে থাকবে। তিরমিজি;
৪৫. মানুষকে শ্রদ্ধা করা হবে তার অনিষ্ট ও ক্ষতির ভয়ে। তিরমিজি;
৪৬. ব্যভিচারকে অবৈধ মনে করা হবে না। বোখারি;
৪৭. পুরুষের জন্য রেশমকে হালাল মনে করা হবে। বোখারি;
৪৮. মদকে বৈধ মনে করা হবে। বোখারি;
৪৯. গানবাজনার অবৈধতার ধারণা বিলুপ্ত হবে। বোখারি;
৫০. মৃত্যু কামনা বেড়ে যাবে। বোখারি;
৫১. সকালের মোমিন বিকালে কাফের এবং বিকালের কাফের সকাল না হতেই ঈমানদার হয়ে যাবে। বোখারি;
৫২. মসজিদগুলোতে অতিরিক্ত সাজসজ্জা করা হবে। নাসাঈ;
৫৩. বাসাবাড়িতে সাজগোজে সীমালঙ্ঘন করা হবে। আদাবুল মুফরাদ;
৫৪. বেশি বেশি বজ্রপাত হবে। আহমাদ;
৫৫. লেখনী ও লেখকের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। আহমাদ;
৫৬. গলাবাজিকে পেশা বানানো হবে। আহমাদ;
৫৭. মানুষ কোরআনবিমুখ হয়ে যাবে এবং অন্য বইয়ের কদর ও বিস্তার হবে। তাবরানি;
৫৮. সমাজে কারি ফকিহ ও আলেম কমে যাবে। হাকেম;
৫৯. যারা নিজের যুক্তি দিয়ে কথা বলে এবং বেদাতে লিপ্ত, তাদের থেকে মানুষ এলম অর্জন করবে। ইবনুল মুবারক ফিয-যুহদ;
৬০. হঠাৎ মৃত্যুর হার বেড়ে যাবে। তাবরানি
৬১. নির্বোধরা নেতা হবে। বাজ্জার;
৬২. সময় কাছাকাছি হয়ে যাবে। বোখারি;
৬৩. স্বল্পবুদ্ধির লোকেরা জাতির মুখপাত্র বনে যাবে। মাজমাউজ যাওয়াইদ;
৬৪. নির্বোধরাই বেশি সফল হবে। ত্বহাবি;
৬৫. মসজিদকে রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হবে। হাকেম;
৬৬. মোহরানার আকার বৃদ্ধি পাবে। হাকেম;
৬৭. ঘোড়ার দাম বেড়ে যাবে। হাকেম;
৬৮. বাজারগুলো নিকটবর্তী ও সবকিছু হাতের নাগালে হয়ে যাবে। আহমাদ;
৬৯. অন্যসব জাতি মুসলিমদের নিধনে ঐক্যবদ্ধ হবে। আবু দাউদ;
৭০. মানুষ ইমামতি করতে চাইবে না। প্রাগুক্ত;
৭১. ঈমানদারদের অনেক স্বপ্ন সত্য প্রমাণ হবে। বোখারি;
৭২. মিথ্যার প্রচলন বাড়বে। মুসলিম;
৭৩. মানুষ একে অন্যকে চিনতে চাইবে না। কেউ কারও সঙ্গে একান্ত স্বার্থ ছাড়া পরিচিত হতে চাইবে না। আহমাদ;
৭৪. ভূমিকম্পের হার বেড়ে যাবে। আহমাদ;
৭৫. মহিলাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। বোখারি;
৭৬. পুরুষ কমে যাবে। বোখারি;
৭৭. অশ্লীল কাজ প্রচুর এবং প্রকাশ্যে হবে। মুসলিম;
৭৮. কোরআন পাঠ করে মানুষের কাছে বিনিময় চাওয়া হবে। আহমাদ;
৭৯. মোটা মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাবে। বোখারি;
৮০. সাক্ষ্য চাওয়া ছাড়াই আগ বেড়ে সাক্ষ্য দেয়ার লোক প্রকাশ পাবে। মুসলিম;
৮১. মানত করে তা পুরা করবে না। মুসলিম;
৮২. শক্তিশালীরা দুর্বলদের ভক্ষণ করবে। আহমাদ;
৮৩. আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে মানব রচিত বিধান অনুসৃত হবে। আহমাদ;
৮৪. পশ্চিমাদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও আরবরা কমে যাবে। মুসলিম;
৮৫. অভাবি লোক থাকবে না। জাকাত গ্রহণের লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। মুসলিম;
৮৬. ভূগর্ভ তার ভেতরের খনিজসম্পদ বের করে দেবে। মুসলিম;
৮৭. আকৃতি-বিকৃতির ঘটনা ঘটবে। তিরমিজি;
৮৮. ভূমিধস দেখা দেবে। তিরমিজি;
৮৯. আকাশ থেকে প্রস্তর বৃষ্টি হবে। তিরমিজি;
৯০. কেয়ামতের আগে এমন বৃষ্টি হবে যা সব কাঁচা-পাকা বাড়িকে নিমজ্জিত করে দেবে। কিন্তু উটের পশম দ্বারা নির্মিত (বিশেষ ধরনের) তাঁবু রক্ষা পাবে। আহমাদ
৯১. কেয়ামতের আগে বৃষ্টি হবে কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ফসল হবে না। আহমাদ;
৯২. একটি ভয়াবহ দাঙা গোটা আরবকে পরিষ্কার করে দেবে (মানুষ মরে সাফ হয়ে যাবে)। আহমাদ;
৯৩. আল্লাহর হুকুমে বৃক্ষ কথা বলবে। বোখারি;
৯৪. মুসলমানদের সাহায্যার্থে পাথরের জবান খুলে যাবে এবং পাথরের আড়ালে লুকানো ইহুদিদের কথা অলৌকিকভাবে বলে দেবে সে। বোখারি;
৯৫. মুসলমানরা ইহুদিদের সঙ্গে চূড়ান্ত যুদ্ধ করবে। বোখারি;
৯৬. ফোরাত নদীতে সোনার পাহাড় আবিষ্কার হবে। বোখারি;
৯৭, কেউ গোনাহ করতে অপারগতা প্রকাশ করলে সমাজের মানুষ তাকে অচল, অসামাজিক, অযোগ্য ইত্যাদি তকমা দেবে। আহমাদ; ৯৮. আরব উপদ্বীপে নদীনালা ও পানির নহর হবে। মুসলিম;
৯৯. আহলাস নামক ফিতনা-দাঙ্গা দেখা দেবে। আবু দাউদ;
১০০. সাররা নামক আরেকটি ফিতনা প্রকাশ হবে। আবু দাউদ;
১০১. কেয়ামতের আগে দাহিমা নামক একটি ভয়াবহ দাঙ্গা সৃষ্টি হবে। আবু দাউদ;
১০২. এমন একটা সময় আসবে যখন এক সিজদার মর্যাদা গোটা পৃথিবী ও তন্মধ্যকার সবকিছুর চেয়ে বেশি হবে। বোখারি;
১০৩. মাসের শুরুতেই চাঁদ মোটা দেখা যাবে, যা সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম। তাবরানি;
১০৪. মানুষ সিরিয়ামুখী হবে। আহমাদ;
১০৫. পশ্চিমাদের সঙ্গে মুসলমানদের মহাযুদ্ধ সংঘটিত হবে। তিরমিজি;
১০৬. মুসলমানরা কুসতুনতুনিয়া (ইস্তান্বুল) জয় করবে। তিরমিজি;
১০৭. মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদ বণ্টন করা হবে না। মুসলিম;
১০৮. গনিমত-যুদ্ধলব্ধ সম্পদে মানুষ সন্তুষ্ট হবে না। মুসলিম;
১০৯. পুরাতন যুদ্ধাস্ত্রের প্রচলন পুনরায় চালু হবে। তিরমিজি;
১১০. কিছুকাল বিরান থাকার পর পুনরায় বায়তুল মোকাদ্দাস আবাদ হবে। আবু দাউদ;
১১১. মদিনা তখন বিরান হবে এবং সেখানে পর্যটক ও অধিবাসী কমে যাবে। আবু দাউদ;
১১২. কামারের হাপর যেমন লোহার জং দূর করে, মদিনা তেমনিভাবে তার ভেতরের সব মন্দকে বের করে দেবে। বোখারি;
১১৩. পাহাড় নিজ স্থান থেকে সরে যাবে। (অলৌকিকভাবে অথবা মানুষ পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করবে)। তাবরানি;
১১৪. একজন কাহতানি বংশীয় লোক আত্মপ্রকাশ করবে এবং সবাই তাকে অনুসরণ করবে। বোখারি;
১১৫. জাহজাহ নামের এক লোক আবির্ভূত হবে। মুসলিম;
১১৬. কেয়ামতের পূর্বে চতুষ্পদ হিংস্র জন্তু ও জড় পদার্থ কথা বলার মতো অলৌকিক ঘটনা ঘটবে। তিরমিজি;
১১৭. ছড়ির মাথা থেকে কথা ভেসে আসবে। তিরমিজি;
১১৮. জুতার ফিতা থেকেও কথা ভেসে আসবে। তিরমিজি;
১১৯. এমন একটা সময় আসবে, মানুষের ঊরু অলৌকিকভাবে তার স্ত্রীর অনৈতিকতার কথা জানিয়ে দেবে। তিরমিজি;
১২০. ধরাপৃষ্ঠ থেকে ইসলামচর্চা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ইবনে মাজাহ;
১২১. আল্লাহ মানুষের অন্তর থেকে কোরআন উঠিয়ে নেবেন। ফলে কারও স্মৃতিতে আর কোরআন থাকবে না। ইবনে মাজাহ;
১২২. কিছু লোক মক্কার হারামে যুদ্ধ করতে আসবে এবং ইমাম মাহদিকে গ্রেফতার করতে চাইবে, তখন তাদের পুরো বাহিনীসহ ভূমিধস হবে। মুসলিম;
১২৩. বায়তুল্লাহর হজ পরিত্যাজ্য হয়ে যাবে। ইবনে হিব্বান;
১২৪. আরবের কোনো কোনো গোত্র মূর্তিপূজা আরম্ভ করবে। বোখারি;
১২৫. কোরাইশ বংশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আহমাদ;
১২৬. একজন নিগ্রো কর্তৃক কাবা ভেঙে ফেলার ঘটনা ঘটবে। বোখারি;
১২৭. মোমিনদের জান কবজ করার জন্য একটি স্নিগ্ধ বাতাস বইবে। বোখারি;
১২৮. মক্কায় সুউচ্চ দালান নির্মিত হবে। ইবনে আবি শায়বা;
১২৯. উম্মতের উত্তরসূরিরা পূর্বসূরিদের অভিশাপ দেবে। ইবনে আবি শায়বা;
১৩০. নিত্যনতুন দামি বাহন বের হবে। ইবনে হিব্বান;
১৩১. ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তিরমিজি।



কেয়ামতের বড় আলামত বা আলামতে কুবরা:
এগুলো হচ্ছে অনেক বড় বড় বিষয়। ব্যাপক প্রভাব বিস্তারকারী এই আলামতগুলোর প্রকাশ পাওয়া প্রমাণ করবে যে, কেয়ামত অতি নিকটে; কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার সামান্য কিছু সময় বাকী আছে। কেয়ামতের বড় বড় আলামত হচ্ছে সেগুলো যা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট থেকে বিশিষ্ট সাহাবী হযরত হুযাইফা বিন আসিদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বর্ণনা করেছেন। সে হাদিসে সব মিলিয়ে ১০ টি আলামত উল্লেখ করা হয়েছে। আলামতগুলো নিচে উল্লেখ করা হল।

কেয়ামতের ১০ টি বড় আলামত:
১. দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ,
২. হযরত ঈসা বিন মরিয়ম (আঃ) এর পৃথিবীতে প্রত্যাগমন,
৩. ইয়াজুজ ও মাজুজের উদ্ভব,
৪. প্রাচ্যে ভূমি ধ্বস
৫. পাশ্চাত্যে ভূমিধ্বস
৬. আরব উপদ্বীপে তিনটি ভূমিধ্বস হওয়া,
৭. ধোঁয়া (ধূম্র) বের হওয়া,
৮. সূর্যাস্তের স্থান হতে সূর্যোদয়/ পশ্চিম দিগন্তে প্রভাতের সূর্যোদয়,
৯. বিশেষ জন্তু/ অদ্ভুত প্রাণীর আবির্ভাব,
১০. পরিশেষে ইয়েমেন থেকে এমন বিশাল এবং ভয়াবহ আগুনের লেলিহান শিখার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে যা মানুষকে হাশরের মাঠের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে। এই আলামতগুলো একটার পর একটা প্রকাশ হতে থাকবে। প্রথমটি প্রকাশিত হওয়ার অব্যবহিত পরেই পরেরটি প্রকাশ পাবে।



ইমাম মুসলিম হুযাইফা বিন আসিদ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে কথাবার্তা বলতে দেখে বললেন: তোমরা কি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছ? সাহাবীগণ বলল: আমরা কেয়ামত নিয়ে আলোচনা করছি। তখন তিনি বললেন: নিশ্চয় দশটি আলামত সংঘটিত হওয়ার আগে কেয়ামত হবে না। তখন তিনি ধোঁয়া, দাজ্জাল, বিশেষ জন্তু, সূর্যাস্তের স্থান হতে সূর্যোদয়, ঈসা বিন মরিয়মের অবতরণ, ইয়াজুজ-মাজুজ, পূর্ব-পশ্চিম ও আরব উপদ্বীপে তিনটি ভূমি ধ্বস এবং সর্বশেষ ইয়েমেনে আগুন যা মানুষকে হাশরের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে উল্লেখ করেন।

এই আলামতগুলোর ধারাবাহিকতা কী হবে সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট সহিহ কোন দলীল পাওয়া যায় না। তবে বিভিন্ন দলিলকে একত্রে মিলিয়ে এগুলোর ধারাবাহিকতা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

শাইখ উছাইমীনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল কেয়ামতের বড় বড় আলামতগুলো কি ধারাবাহিকভাবে আসবে?

জবাবে তিনি বলেন: কেয়ামতের আলামতগুলোর মধ্যে কোন কোনটির ধারাবাহিকতা জানা গেছে; আর কোন কোনটির ধারাবাহিকতা জানা যায়নি। ধারাবাহিক আলামতগুলো হচ্ছে- ঈসা বিন মরিয়মের অবতরণ, ইয়াজুজ-মাজুজের বহিঃপ্রকাশ, দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ।

প্রথমে দাজ্জালকে পাঠানো হবে। তারপর ঈসা বিন মরিয়ম এসে দাজ্জালকে হত্যা করবেন। তারপর ইয়াজুজ-মাজুজ বের হবে।

আল্লাহ্‌ তায়ালা মহাপ্রলয়ের মাধ্যমে সত্য প্রত্যাখ্যানকারী এবং অবাধ্য জনগোষ্ঠীকে সমূলে ধ্বংস করে থাকেন। এইভাবে মহান আল্লাহ্‌ হযরত লুত (আঃ)-এর কওমকে অবাধ্যতা ও অপকর্মের কারণে প্রলয়ের মাধ্যমে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছেন এ-কথা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ আছে। মহাপ্রলয়ের ধ্বংস প্রাপ্ত ব্যক্তিকে দেহ প্রলয়ের পরিণতিও ভোগ করতে হবে।

প্রত্নতত্ত্ববিদগণ জরিপের মাধ্যমে বিশ্বের অনেক উন্নত এলাকা পর্যন্ত ভুমিকম্প অথবা কোন প্রলয়ের মাধ্যমে বিধ্বস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার নিদর্শন পেয়েছেন। এলমুল ক্বালবের অধিকারী সাধকের দৃষ্টিতে সৌরমণ্ডলের বাইরে মহাপ্রলয়ের মাধ্যমে ধ্বংস প্রাপ্ত গ্রহসমূহের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।

দেহের প্রলয় সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে-
অর্থ-"যেদিন কিয়ামত হবে, মানুষ তার মাতা-পিতা, স্ত্রী ও সন্তানদের ছেড়ে পলায়ন করবে, সেদিন প্রত্যেকে অপরের চিন্তা না করে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। অনেকের মুখ সেদিন হবে উজ্জ্বল, হাসি-খুশী, আর অনেকের মুখ ধুলো ও কালি মাখা, তারাই সত্য প্রত্যাখ্যানকারী ও দুষ্কৃতকারী।" (সূরা- আবাসা, আয়াত- ৩৩-৪২) ।

কিয়ামত সম্পর্কে হাদীসে আছে-"হযরত আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি হযরত রাসূলে মাকবুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকটে এসে জিজ্ঞেস করলো-কিয়ামত কবে হবে? এরূপ প্রশ্নের জবাবে হযরত রাসূলে মাকবুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত এক বালককে লক্ষ্য করে বললেন- এই বালক বেঁচে থাকলে তার বৃদ্ধ হবার পূর্বেই তোমাদের কিয়ামত কায়েম হয়ে যাবে" (বোখারী শরীফ)।



এই ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে- প্রত্যেকের মৃত্যুই তার জন্য এক প্রকার কিয়ামত। কারণ তখন হতেই পরকালের অনুষ্ঠানাদি আরম্ভ হয়ে যায়, তাই হযরত রাসূলে মাকবুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রশ্নকারীকে বয়সের তুলনায় অতি কম বয়সের বালকদের প্রতি ইশারা করে বললেন, এই বালকের বৃদ্ধ হওয়ার পূর্বেই তোমার শ্রেণীর লোকদের কিয়ামত এসে যাবে। অর্থাৎ মৃত্যু এসে উপস্থিত হবে, যা তোমাদের পক্ষে পরকালের প্রথম পদক্ষেপ।

পবিত্র কুরআন ও হাদীস শরীফের উপরোল্লেখিত শাশ্বত বাণী থেকে প্রমাণিত হয় যে, কিয়ামত দুই প্রকার- মহাপ্রলয় ও দেহের প্রলয়। কিয়ামতের মহাপ্রলয়ে বিশ্বজাহান ধ্বংস হয়ে কিভাবে সমস্ত সৃষ্টিরাজির কার্যাবলী থেমে যাবে এর বাস্তব ধারণা পাওয়া যায়- হযরত নূহ (আঃ) ও হযরত লুত (আঃ)-এর সম্প্রদায় ধ্বংস হওয়ার ঘটনা থেকে। আর দেহের প্রলয়ের ধারণা পাওয়া যায়- মানুষের মৃত্যুতে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসহ দেহের সমস্ত কার্যক্রম থেমে যাওয়ার মাধ্যমে।

আল্লাহ্‌প্রাপ্ত সাধক অলী-আল্লাহ্‌গণ কিয়ামত সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও হাদীসের জাহেরী অর্থের পাশাপাশি তাঁদের সাধনা লব্ধ জ্ঞান থেকে কিয়ামতের বাতেনী ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ব্যক্তি জীবনেও এর একটি অপূর্ব মিল খুঁজে পান । তাঁরা বলেন, মানব দেহের ভিতর থেকে রূহ বের হওয়ার সাথে সাথে তার যাবতীয় কর্ম বন্ধ হয়ে যায়। অর্থাৎ মৃত্যুই দেহের জন্য এক প্রকার কিয়ামত বা প্রলয়। মৃত্যুর সময় মানুষ তার আত্মীয়-পরিজন ও যাবতীয় পার্থিব ধন-সম্পদ পরিত্যাগ করে সারা জীবনের কর্ম বিবরণী হাতে নিয়ে পরকালের যাত্রা শুরু করে। তখন অন্য কারো বিষয় চিন্তা করার অবকাশ থাকে না, নিজের পরিণাম কি হবে এ দুশ্চিন্তায় আত্মা অস্থির থাকে। ইহকালে সৎ কর্মশীল ব্যক্তি মৃত্যুর সময় তার পরকালের শান্তি সম্পর্কে নিশ্চিত হয় বলে তার মুখমণ্ডল থাকে হাসি-খুশি, উজ্জ্বল। পক্ষান্তরে, বদকার লোক মৃত্যুকালেই তার পরকালের ভয়াবহ শাস্তি সম্পর্কে অবগত হয়, যা খণ্ডনের কিংবা এড়ানোর কোন উপায় থাকে না বলে তার চেহারা থাকে ভীতসন্ত্রস্ত ও মলিন।

পবিত্র কুরআন ও হাদীস শরীফের উপরোক্ত আলোচনা থেকে পরিশেষে বলা যায় যে, ইস্রাফিল আলাইহিসসালাম -এর সিংগার ফুঁৎকারের মাধ্যমে সমগ্র সৃষ্টি জগত ধ্বংস প্রাপ্ত হবে । তাই পবিত্র কুরআন ও হাদীস শরীফে কিয়ামত সম্পর্কে যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে, তার মাধ্যমে মানুষের ভয়াবহ শেষ পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে, যাতে মানুষ সাবধান হয় এবং তার প্রভুর অনুগত হয়ে সৎ কর্মশীল হয়।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা সম্যক সুপরিজ্ঞাত।

ছবি: সংগৃহীত।

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৭
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×