ছেলে: আপনি কি আমার সঙ্গী হবেন?
মেয়ে: কেন বলুন তো?
ছেলে: না, মানে সিনেপ্লেক্সের দুইটা টিকিট ম্যানেজ করেছিলাম। কিন্তু আমার গার্লফ্রেন্ডটা ভেগে গেছে।
মেয়ে: ও। আপনার একটাই গার্লফ্রেন্ড?
ছেলে: ছিল। এখন নাই। আপনার বুঝি অনেকগুলো বয়ফ্রেন্ড?
মেয়ে: জ্বী, না। আমার একটায়...
ছেলে: বয়ফ্রেন্ড?
মেয়ে: জ্বী, না। হাজব্যান্ড!
ছেলে: ও, আপনি বিয়ে করে ফেলেছেন? আপনাদের সুন্দরীদের এই একটা সমস্যা। ভুরিওয়ালা টাক মাথার টাকার মালিক কাউকে পেলেই হুট করে বিয়ে করে ফেলেন।
মেয়ে: এক্সকিউজ মি, জনাব। আমার হাজব্যন্ড হ্যান্ডসাম, স্মার্ট ও কেয়ারিং। আপনার মত ভবঘুরে নয়। ওই যে সিনেপ্লেক্সের টিকিটের লাইনে দাড়ানো পিছন থেকে দুই নম্বর যে সুদর্শণ যুবককে দেখছেন উনিই আমার হাজব্যান্ড।
ছেলে: শেষ সময়ে লাইনে দাড়িয়ে কি টিকিট পাওয়া যায়? তারচেয়ে আমার টিকিট দুইটা রাখুন। সিনেমা হলের অন্ধকার ঘরে একলা আমার দমবন্ধ হয়ে যাবে। আমি ভবঘুরে, আমি বরং বাইরেই ঘুরিফিরি।
এই বলে, ছেলেটি সাদিয়ার হাতে টিকিট দুইটা গুজে দিয়ে হাটা দিল। একবারও পিছনে ফিরে তাকালো না। পাগল এই ছেলেটির কথা সাদিয়া ভুলেই গিয়েছিল। কিন্তু দুইমাস পর পত্রিকার পাতায় ছেলেটির ছবি দেখে সাদিয়া চমকে উঠল। এই সেই ছেলেটি। পত্রিকার খবরে ছেপেছে, ছেলেটি তরুন কবি। এই একুশে বইমেলায় তার দুইটা কবিতার বই বের হয়েছে। বিয়ের আগে সাদিয়া কবিতা আবৃতি করতো, দুই-একটা কবিতাও সে লিখেছে। কবিতা তার প্রিয়। কিন্তু বিয়ের পর আর ওইভাবে আবৃতি করা হয়ে ওঠে নি। শেষ যেবার বিশ্ববিদ্যালয়ে কবিতা আবৃতিতে সাদিয়া প্রথম হয়েছিল, সেইবার পত্রিকার সাহিত্যপাতায় ছাপা অচেনা এক কবির কবিতা প্রতিযোগিতার জন্য সে নির্বাচন করেছিল। কবিতার লাইনগুলো আজও তার হৃদয়ে গেথে আছে। আহা, কে জানতো সেই কবিতার কবির সাথেই সিনেপ্লেক্সে তার দেখা হয়েছিল। আচ্ছা, কবি কি তাকে চিনতো? সেই্ উত্তর আর জানা হবে না। কারণ, আজকের পত্রিকার পাতায় কবির পাসপোর্ট সাইজের ছবির ঠিক উপরেই কালো কালি দিয়ে লেখা হয়েছে, "সড়ক দুর্ঘটনায় তরুন কবি নিহত"।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:০৮