somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিলং ভ্রমণ (পর্ব-১)

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রকৃতির এক অপরুপ সৌন্দর্য্য মিশ্রিত শিলং। পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ সেই সাথে মেঘের খেলা আর তার মাঝখান দিয়ে যাওয়া এ যেন এক বিস্ময়!

কিযে সুন্দর শিলং তা শুধু চোখ দুটিই জানে। এই সৌন্দর্য্য আসলে ক্যামেরায় যথার্থ আসেনা কখনোও আমার কাছে তাই মনে হয় । মনে হচ্ছিল প্রকৃতির মাঝেই থেকে যাই আজীবনের জন্য। শিলং এর পথ ঘাট খুবই সুন্দর, পরিষ্কার পরিচ্ছিন্ন। দেখে মনে হয় কেউ নিজ হাতে পরিপাটি করে সাজিয়ে রেখেছে এমন। যখন পাহাড়ের উপর দিকে উঠছিল গাড়ি অবাক হয়ে দেখছিলাম।

এই বছরের কুরবানী ঈদে যখন জাফলং ঘুরে গিয়েছিলাম তখন জাফলং থেকে দেখেছিলাম দূরে বিশাল এক পাথর(ভেবেছিলাম এটা কোন ঝর্না হবে) একটা ব্রিজ যেখান দিয়ে গাড়ি চলছিল।মজা লেগেছিল যখন দেখলাম দূর থেকে দেখা সেই পাথর আসলে কোন ঝর্না নয় ওটা একটা পাথরের পাহাড়। আর সেই দেখা ব্রিজ দিয়েই যাচ্ছি আমরা। জাফলং থেকে যত উঁচু পাহাড় দেখা যায় ঠিক তত উপর দিয়েই গাড়ি যাচ্ছিল। আমাদের বিস্ময়ও যেন বাড়ছিল অনেক। কত মিষ্টি একটা আবহাওয়া ছিল। নির্মল সতেজ একটা পরিবেশ যা মুগ্ধ করেছে অনায়াসে।

শিলং এ কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর "শেষের কবিতা" লিখেছিলেন। শেষের কবিতার কিছু লাইন যা আমার ভীষণ প্রিয়
" ওগো তুমি নিরুপম,
হে ঐশ্বর্যবান,
তোমারে যা দিয়েছিনু সে তোমারি দান--
গ্রহণ করেছ যত ঋণী তত করেছ আমায়।
হে বন্ধু, বিদায়"


তামাবিল বর্ডার

বর্ডারের ফর্মালিটিজ শেষ করে আমরা ডাউকি বাজার যাই, সেখান থেকে টাকা রুপিতে করে নেয় আমাদের গ্রুপের অনেকেই। আমার কাছে ডলার থাকায় ভেবেছি শিলং শহরে গিয়ে চেঞ্জ করব। এখানে বলে রাখি, ডাউকি বাজারে টাকার রেট ভাল পাওয়া যায়। আমি ভুল করেছিলাম রুপি না নেয়াতে। পরে শিলং এ গিয়ে ডলারের রেট ভাল পাইনি।



ডাউকি বাজার থেকে বাস আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে এগিয়ে চলল। বেশ কিছুক্ষণ শেষে আমরা সোনেংপেডাং এ পৌছালাম। ঝুলন্ত ব্রিজের নিচে সবুজ জলের ঝর্নার নদী প্রবাহিত হচ্ছে। নীল আকাশ, সবুজ পাহাড়, আর নদীর জলও সবুজ ছিল। সব মিলিয়ে এক অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করেছি।


আমাদের গ্রুপের অনেকেই ব্রীজের শেষ মাথা পর্যন্ত গিয়েছিল। কিন্তু আমি এতটাই ভীতু যে কিছুদূর যাওয়ার পর আর সাহস হয়নি যাওয়ার জন্য। কিছুদূর গিয়েই ফিরে আসছি। :P


সোনেং পেডাং


সোনেং পেডাং





সোনেংপেডাং ঘুরে আমরা গিয়েছিলাম Riwai village এ, সেখানে আমরা দুপুরের লাঞ্চ শেষে ১৫০ সিড়ি বেয়ে নিচে নেমেছিলাম লিভিং রুট ব্রিজ দেখার জন্য।




লিভিং রুট ব্রিজ । নিচে নামার সময় খারাপ লাগেনি। কিন্তু উঠার সময় আর ঊঠতে পারছিলাম না। লাঞ্চ করেই নেমেছিলাম বলেই আমাদের সবারই কষ্ট হচ্ছিল।


বর্ষাকাল থাকলে জায়গাটা আরো সুন্দর লাগত।

Riwai ভিলেজ ঘুরে আমরা গিয়েছিলাম এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ক্লিন ভিলেজ Mawlynnong ভিলেজে। আমার কাছে কেন জানি এই ভিলেজ খুবই আর্টিফিশিয়াল মনে হয়েছে। যাইওহোক ক্লিন ভিলজে কিছু দোকানপাট আছে। চাইলেই কেউ কিছু কিনে নিতে পারবে। আমাদের হাতে সময় কম ছিল। আমরা যখন Mawlynnong ভিলজে আসি তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসছিল।



দুঃখের বিষয় এই ভিলেজের আর কোন ছবিই দিতে পারলাম না কারন এই ভিলেজের প্রতিটা জায়গায় লেখিকার ছবি ছিল । :(

যাইহোক, সন্ধ্যায় নেমে এসেছিল এই ভিলেজেই। সন্ধ্যা হবার পর পরই আমরা শিলং শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। আধো অন্ধকারে পাহাড়গুলো অদ্ভুত লাগছিল। ২ ঘন্টা চলার পর পাহাড়ের এক বাঁকে বিরতি নেয়া হল।চা/কফি পাণ করার জন্য বিরতি নিয়েছিলাম আমরা।সাড়ে তিন ঘন্টার মত লাগল শিলং শহরে পৌছাতে। আগের দিন সারারাত জার্নি এবং পরদিন সারাদিনের ঘুরাঘুরির ক্লান্তিতে রাতে হোটেলে ইন করে ডিনার সেরেই ঘুম দিলাম।


প্রথম পর্ব এখানেই শেষ করছি। শুভ রাত্রি।



সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২৩
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×