বন্ধু খায় বৌ এর ঝাড়ি আর আমি খাই টাটকা চেরী
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
ব্লগে আজকাল কারো কারো বিয়ের খায়েশ জেগেছে, কেউ কেউ আবার সেই খায়েশের সাথে তাল মিলিয়ে আয়েশ করে কত কিছু খেতে চাইছেন ... আমিও অবশ্য খানাপিনার উদ্দেশ্যে এ ব্লগ সে ব্লগ চষে বেড়াচ্ছি, যদি কোথাও একটা বিয়ের দাওয়াত পাওয়া যায় ... কিন্তু হায় ! ... কেউ এখনো পর্যন্ত দিলো না ... বিয়ের কোন দাওয়াত তো পেলাম না এখনো তাই আমার চেরী খাওয়ার গল্পই না হয় আপনাদেরে বলি আজকে ....
সেদিন দুপুরে এক বন্ধুর ফোন এল ... বেচারা ক বছর আগে বিয়ে করেছে ... কেমন আছে তা না হয় নাই বললাম ... ওর সাথে নরমালি কথা হয় বিকেলে অথবা রাতে ... দুপুরে ওর কল পেয়েই মনে কেমন জানি খচখচ করে উঠলো ... তবুও কলটা রিসিভ করলাম, বললাম ---
>> হ্যালো
> হ্যালো
>> কি খবর ... এই অবেলায় ফোন করলি যে ?
> তুই কি ফ্রি আছিস বিকেলে ?
>> উমমম... আছি , কিন্তু ক্যান ?
> তোকে নিয়ে একটু "ডি" তে যাব
>> ঘটনা কি রে, হঠাৎ "ডি" তে ?
> একটা পারফিউম কিনতে চাই, এ জন্য ...
>> আচ্ছা ঠিকাছে ... চলে আসব ঠিক ৫:৩০ এ ... তুই থাকিস কিন্তু সময়মতো, নাইলে ৬টায় বন্ধ হয়ে গেলে পরে কান্না করলেও কিনতে পারবি না ...
> আমি আজকে দরকার পড়লে ৫টায় হাজির থাকব ... তুই চলে আসিস, কথা হবে , বাই !
বিকেলে হাতের কাজ সব শেষ করে ফেলছি এমন সময় আবার ফোন এলো ....
>> হ্যালো
> ৫ টা বেজে গিয়েছে , আমি "ডি" এর সামনে দাড়ানো তুই কৈ ?
>> আমি তো সাড়ে পাচটায় আসবো বলেছিলাম, এখনো ৩০ মিনিট বাকি আছে
> আমি জানি না , তুই জলদি আয় !!
কড়াৎ করে ফোনটা কেটে দিতেই বুঝলাম ঘটনা কিছু একটা আছে ... নাইলে সে এমন নার্ভাস হবে কেন ? .... জলদি জলদি কাজ শেষ করে ডি তে যেতেই দেখি দোকানের ভিতরের ফিমেল সাইডে প্রতিটা পারফিউম খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে আমার বন্ধু ... বললাম --
>> কিরে, তুই এই পাশে ক্যান ? তোর পারফিউম তো ঐ পাশে থাকবে ... নাকি আজকাল মেয়েদের পারফিউম ব্যাবহার শুরু করে দিয়েছিস ?
> ধুর ! বেশী বাজে বকিস না, এসেছি তোর ভাবীর জন্য পারফিউম কিনতে ...
>> হঠাৎ ?
> আজকে আমাদের ম্যারেজ ডে .... ইয়ার !!!
>> আচ্ছা ! এই কথা, আমারে দাওয়াত পর্যন্ত করলি না, এখন আমি তোর ম্যারেজ ডের গিফট পছন্দ করে দিবো ভেবেছিস ? .... দৌড়ের উপর থাক তুই, আমি চললাম
> দোস্ত, এমন করিস না, এমনিতেই বড় ক্যাচালের মধ্যে আছি, তুই কিছু একটা কর
>> ক্যাচাল ? কিসের ক্যাচাল ?
> তোর ভাবী কয়দিন আগে এখান থেকেই একটা পারফিউম কিনে নিয়ে গিয়েছিল, আমি খালি বলেছিলাম যে এটা একটু কড়া মনে হচ্ছে ... ওমনি যেমন কয়টা কড়া কড়া কথা শুনিয়ে দিয়েছিল আর কি বলবো .... শেষমেষ বলে দিয়েছে ওর জন্য আমি যেন ম্যারেজ ডে গিফট হিসেবে পারফিউম কিনে দেই ... সুতরাং বুঝতেই পারছিস, ঘটনা কোন খানে গিট্টু লাগছে
>> কিন্তু মেয়েদের পারফিউম তো আমি কখনো কিনি নাই, কি করি এখন ? ... দাড়া একজনরে ফুনাই, তারে আসকাই কয়টা ভালো পারফিউমের নাম ....
> নাহ ! তুই ঐ সেলস গার্লরে আসকা ... সে ভাল বলতে পারবে ...
এবার দুজনের গিয়ে সেলস গার্ল কে আসকাইলাম, সে কয়েকটা বাইর করে দিয়ে গন্ধ শুকাইলো ... এর পরে সেগুলোর মধ্যে একটা নিয়ে সুন্দর করে প্যাক করে, দুজনে হাজির হইলাম ওর বাসায় ... দরজা খুলতেই বন্ধুর সাথে আমারে দেইখা ভাবী একটা মিষ্টি হাসি দিয়া কইলো
>>> আরে অনন্ত ভাই যে, অনেক দিন পরে আসলেন ... আমাদের বাসায় কি ভুল করে আসলেন নাকি আজকে ? ... আসেন ভিতরে
>> নাহ ভাবী, আজকে আর দাওয়াতের অপেক্ষা না করেই চলে আসলাম (মনে মনে বলি -- আমাকে তো ধরে এনেছে তোমার বর, যাতে করে ..... থাক ! মনে মনে ওটা বললে যদি বুঝে যায়, এর চেয়ে অফ যাই !!)
>>> খুব ভাল করেছেন, আজকে আমি আমাদের বাগানের চেরী পেড়েছি , আসে এক্ষুনি বসে যান আমার বাগানের টাটকা চেরী খেতে ...
বলেই দেখি ভাবী টেবিলে বেশ কিছু টাটকা পেড়ে আনা চেরী রাখলেন, এমন সময় বন্ধু আমার বললো --
> হ্যাপ্পি ম্যারিজ ডে *** (এইটা কওন যাইব না) -- বলে সুন্দর করে প্যাকেট করা পারফিউম টা দিলো
>>> থ্যাংকু *** (এইটাও কওন যাইব না)
এর পরে তিনজনে বসে পড়লাম ওদের বাগানের চেরী খাওয়ার জন্য, এমন সময় ভাবী পারফিউমটা খুলে আমার বন্ধুরে আসকাইলো --
>>> পারফিউমটা আসলেই অনেক সুন্দর, কে পছন্দ করেছে, তুমি নাকি অনন্ত ভাই ?
অবস্হাটা ট্যাকল করার জন্য আমি বলে উঠলাম --
>> নাহ নাহ ভাবী, আমি তো শুধু সাথে ছিলাম, পছন্দ করেছে ও !
>>> কোথা থেকে কিনস ?
> "ডি" থেকে
>>> ঐখানে তো সব সেলস গার্ল কাজ করে ....
> হু, ওদের সাহায্য নিয়েই তো কিনলাম ...
>>> কি ? ওদের সাহায্য কিনস মানে ?
> না , মানে ওদেরকে জিজ্ঞেস করার পরে ওরা কয়েকটা বের করে দিয়েছিল, সেখান থেকে নিজে পছন্দ করে এনেছি ....
>>> তুমি নিজে কেন বের করে নাওনি ওদের কে দেখলে মাথা ঠিক থাকে না , তাই না ? ... গায়ে পড়ে গিয়ে কথা বলতেই হবে ওদের সাথে?
> সে রকম কিছু না, মানে .... আসলে .... হয়েছে কি শুনো বলি ব্যাপারটা খুলে
>>> দরকার নেই খুলে বলার, আমি সব বুঝি ... তুমি একটা .... উফফ !! ধুর তোমাকে চোখের সামনে আমি সহ্য করতে পারছি না ... স্যরি অনন্ত ভাই আমি উঠছি ... বলেই সে চলে গেল বেড রুমে ... পিছে পিছে আমার বন্ধু ... আর এদিকে টেবিলে আমি একলা
ভিতর থেকে আওয়াজ আসে ...
> একটু শুনো তো পুরোটা ...
>>> চুপ ! একটা কথা বলবা না আমার সাথে
> আহা ! শুনই না, না শুনলে বুঝবা কিভাবে ওখানে কি হয়েছে ?
>>> তোমার সাথে কথা বলার রুচি নাই আমার ...
> আচ্ছা আমি বলি লিখে দিব নাকি কি হয়েছে ওখানে ?
>>> বের হয়ে যাও আমার সামনে থেকে ....
> ************* (এগুলো )
এমনই চলতে থাকলো ভিতরের দৃশ্যে, আর বাইরের দৃশ্যে আমি একে একে খেয়ে চলেছি ওদের বাগানের টাটকা চেরী, আর মনে মনে বলি -- আহা ! কি শান্তিতে আছি আমি
৬০টি মন্তব্য ৬০টি উত্তর
পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম
আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা
২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন
যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!
এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিউ ইয়র্কের পথে.... ২
Almost at half distance, on flight CX830.
পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১
হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন
সামুতে আপনার হিট কত?
প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন