বর্তমানে প্রেমের সম্পর্কগুলো অনেক সময় শারিরিক সম্পর্ক পর্যন্ত চলে যায়। এক্ষেত্রে শারিরিক সম্পর্ক হয়ে যাওয়ার পর যদি কোন কারনে সেই সম্পর্কটি ভেঙে যায় তখন প্রথমে মেয়েটি নিজেকে নিঃস্ব ভাবতে শুরু করে।
আবার বিষয়টি জানতে পারার পরিপ্রেক্ষিতে তার বন্ধু- আত্মীয়স্বজন এবং সমাজও তাকে একি তকমা দিয়ে থাকে।
পক্ষান্তরে ছেলেটির কাছে এটা আর দশটা মানুষের মত একটা মানুষের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার মতই স্বাভাবিক ব্যাপার মাত্র। আর তার বন্ধুদের কাছে দুষ্টামি, পরিবারের কাছে ছোটখাটো ভুল থেকে বেরিয়ে আসা, এবং সমাজের কাছে পরকালের একটা পাপমাত্র।
তাই সম্পর্কটা ভেঙে যাওয়ার পর তা ছেলেটির সামাজিক জীবনে তেমন কোন প্রভাব না ফেললেও মেয়েটির জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। যেখানে আমাদের সমাজ ছেলেটিকে স্বাভাবিক চোখে দেখলেও মেয়েটি হয়ে যায় নিকৃষ্ট অপরাধী।
কিন্তু একই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মেয়েদের প্রতি সমাজের কেন এই বিমাতাসুলভ আচরন?
আর কেনই বা এজন্য শুধুই মেয়েরা হীনমন্যতায় ভুগবে?
যদি বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কের ফলে কুমারত্ব কিংবা সম্ভ্রমহানীর কারণে নিঃস্ব ভাবা হয়; তাহলে শুধু মেয়েটিই কেন, বরং ছেলেটিকেও তো সমভাবেই নিঃস্ব ভাবা উচিত।
যদি অবৈধ সম্পর্ক অপরাধ হয়, তাহলে তো দুইজন-ই সমান অপরাধী হওয়ার কথা।
আবার আমরা জানি ধর্মীয়ভাবে বিয়ের আগে এই ধরনের সম্পর্কে জড়ানো হলো পাপ।
কিন্তু ধর্ম কি একজনকেই পাপী বলেছে?
না, ধর্মের দৃষ্টিতে তো দুইজন ই সমান পাপী।
যেহেতু ছেলে-মেয়ে পরস্পরের সম্মতিতে এধরনের সম্পর্কে জড়ায়, সেহেতু তারা পাপ ও অপরাধকে স্বীকার এবং উপেক্ষা করে এই সম্পর্কে জড়ায়। তাই এটাকে শুধুমাত্র মেয়েটির অপরাধ হিসেবে দেখাটা সমাজের চরম পক্ষপাতমুলক দৃষ্টিভঙ্গি নয় কি?
আমার মতে তো অবশ্যই। তাই দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো দরকার। নিঃস্ব, অপরাধ কিংবা পাপ; এটাকে যে দৃষ্টিতেই দেখা হোক না কেন, ছেলে-মেয়ে উভয়কেই একি কাতারে রাখা অথবা এটাকে উভয়ের ব্যক্তিগত ও স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে গন্য করাই যৌক্তিক।
আর মেয়েদেরও এসব ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নিজেকে নিঃস্ব ভেবে মানসিক অবস্বাদগ্রস্থতায় না ভুগে হয় প্রেমিককেও নিঃস্ব ভাবা, না হয় এটাকে তার মতই স্বাভাবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখার মানসিকতা সৃষ্টি করা উচিত।
তবে হ্যাঁ, এটা পাপ। তাই পাপ ভেবে যতদুর পারা যায় এধরনের সম্পর্কে জড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। ছেলে-মেয়ে সকলকেই।