somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি কথক সন্ধ্যা, কিছু বিচ্ছিন্ন অনুভব

৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুক্রবার। বিকেল গড়িয়ে সময়ঘড়ি চলছে সন্ধ্যার পানে। প্রথামাফিক পশ্চিম আকাশ লাল আভায় ভরে যাওয়ার কথা। কিন্তু আকাশ জুড়ে যে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির উৎসব। এই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি মাথায় নিয়ে উপস্থিত হয়েছি টিএসসিতে। একজনের আসার কথা। এখনো আসেনি। তার ফোনটিও বন্ধ। বিরক্তি নিয়ে বসে আছি। পাশেই একটি দল আড্ডা দিচ্ছে। আড্ডায় তিন ছেলে, দুই মেয়ে। আড্ডায় নানা কথা, প্রাণের উচ্ছ্বাস স্পষ্ট। অন্যজনের কথায় কান পাতা আমার ধাতে নেই। তবুও ওদের প্রাণের উচ্ছ্বাসে, কথার তোড়ে ভেসে যাওয়া ঠিকই মনোযোগ কাড়ে। দেখি ওদের প্রাণের উৎসব। কথার মুখরতা।

আরো একটু সময় যায়। গাঢ় সন্ধ্যা গিলে ফেলে চারপাশ। তবুও তার কোনো খবর নাই। বিরক্ত হয়ে উঠে পড়ি। সোজা রুমে। হাতে তেমন একটা কাজ নাই। কী করা যায়! মোবাইলে এফএম ছাড়ি। এখানেও কথার উৎসব। রেডিও আমারে দুই আরজে আখিঁ, চৈতি কথা বলেই যাচ্ছে। খই-এর মতো করে ফুটছে কথারা, শব্দরা। কান পেতে শুনি ওদের কথামালা। শুনতে শুনতে কালি ও কলমের একটি পুরানো সংখ্যায় চোখ বুলায়। দেখি ভাষা নিয়ে মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বিশদ একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। সেখানে লেখা, পৃথিবীর মোট ভাষার অর্ধেকসংখ্যক আজ বিলুপ্তির পথে। প্রতিবছর হারিয়ে যাচ্ছে কিছু কিছু ভাষা। আফ্রিকায় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকুল অঞ্চলের তিন-চার হাজার ভাষার মৃত্যু ঘটতে পারে অচিরে। আজকের ছয় বা দশ হাজার ভাষার জায়গায় একবিংশ শতাব্দী শেষে হয়তো টিকে থাকবে তিনশ’ ভাষা।

কী সাংঘাতিক কথা। তাহলে কী এইসব ভাষায় আজ যারা কথা বলে, একবিংশ শতাব্দী শেষে তাদের নিজস্ব ভাষায় প্রাণের উৎসব থেমে যাবে। এই যে আমরা মেতে উঠছি প্রাণের উৎসবে, ক্ষণে ক্ষণে, কিন্তু তারা কী আপন মাতৃভাষা ছেড়ে অন্য ভাষায় এভাবে মেতে উঠতে পারবে। লেখায় দেখা পাই, নাইজেরিয়া ও ক্যামেরুনের এক সীমান্তবর্তী গ্রামের ৮৭ বছরের এক বৃদ্ধার। তিনি কথা বলেন বিকইয়া ভাষায়। বাবা-মায়ের কাছে তিনি শিখেছিলেন এ ভাষা। কিন্তু জীবনের শেষবেলায় এসে এ ভাষায় ভাব প্রকাশ করার মতো আর কেউ ছিল না। এজন্য তিনি নিরবে কেঁদে বুক ভাসাতেন।

আমাদের দেশের সৃষ্টি ভাষার ভিত্তিতে। রক্তের বিনিময়ে। পৃথিবীর একমাত্র আমরাই মাতৃভাষার জন্য আতœহুতি দিয়েছি। পৃথিবীর বিপুল সংখ্যক লোক এই ভাষায় কথা বলে। এ হিসেবে হয়তো বাংলা ভাষার বিলুপ্তির আশংকা অমূলক। তবে বাংলা ভাষার ওপর এখন যে হারে হিন্দি ও ইংরেজির আক্রমণ চলছে তা ভাবনার বিষয় বৈকি। দেখা যাক, ভবিষ্যত আমাদের উত্তরপ্রজন্মকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করায়।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×