সম্পূর্ণ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আরও দুটি সাবমেরিন কেবল সংযোগ নেবে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। আগামী এক-দেড় বছরের মধ্যে আরও দুটি সাবমেরিন কেবলের সংযোগ পাওয়া যাবে। অতিরিক্ত দুটি সাবমেরিন কেবল আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগে বাংলাদেশের গুণগত মানোন্নয়নের পাশাপাশি এ যোগাযোগ নিরবচ্ছিন্ন এবং সহজতর হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানির (বিএসসিসিএল) তত্ত্বাবধানে দেশের একমাত্র সাবমেরিন কেবল রয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দ্বিতীয় সংযোগটিও সরকারি ব্যবস্থাপনায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এবার সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে একসঙ্গে দুটি সংযোগ এবং তা পুরোপুরি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি খসড়া নীতিমালাও প্রকাশ করেছে বিটিআরসি। নীতিমালায় বলা হয়েছে, দেশীয় কোম্পানিকেই অতিরিক্ত এ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি দুটির লাইসেন্স দেওয়া হবে। তবে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ মালিকানায় বিদেশি কোম্পানিও লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে বিদেশি মালিকানার শেয়ার ৪০ শতাংশের বেশি হবে না।
অন্যদিকে বাড়তি দুটি সাবমেরিন কেবল সংযোগ নেওয়ার উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে গুণগত সেবার বিষয়ে মনোযোগী হওয়া দারকার। এর আগে ২০০৬ সালে দেশ প্রথবারের মতো ৩ কোটি ৫১ লাখ মার্কিন ডলার খরচ করে সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। ১২০ গিগাবাইট ক্ষমতার ওই সাবমেরিন কেবলটির মধ্যে মাত্র ২৪ দশমিক ১২ গিগাবাইট ক্ষমতা ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে।
বিটিআরসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই নীতিমালা সম্পর্কে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্টরা মতামত দিতে পারবেন। আর এ মাসের মধ্যেই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির শীর্ষ এক কর্মকর্তা। এ প্রসঙ্গে বিটিআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একটা সংযোগ থাকায় অনেক সমস্যা হতো। এখন আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে আর কখনই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে না।
নতুন দুটি সাবমেরিন কেবল সংযোগ নেওয়া বিষয়ে বিটিআরসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়ার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম বলেন, সাবমেরিন কেবল সংযোগ নেওয়ার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের টেরিস্ট্রিয়াল লিঙ্ক বৃদ্ধি করতে হবে। তাছাড়া সাবমেরিন কেবলের ব্যান্ডউইথের দাম কমানোর দাবিও জানান তিনি।
বর্তমানে প্রতি এমবিপিএস ব্যান্ডউইথের দাম ধরা হচ্ছে ১৮ হাজার টাকা। এই পরিমাণ ব্যান্ডউইথ উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ১০ হাজার টাকারও কম। তাছাড়া ইতিমধ্যে সরকার নিয়ন্ত্রিত একমাত্র সাবমেরিন কবলের খরচও পুরোপুরি উঠে গেছে। সে কারণে ব্যান্ডউইথের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছে বেসিসসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।