somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টুয়েন্টি নাইন।। মজার কার্ড গেম-১

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক সময় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে বোরিং লাগে। তখন হাতের কাছে কার্ড থাকলে খেলতে পারেন টুয়েন্টি নাইন। মজার একটি কার্ড গেম। খেলতে খেলতে দেখবেন সময় কতদ্রুত চলে যায়! আজকে ২৯ এর নিয়ম নিয়ে লিখব। আমি সব নিয়ম জানিনা। কোন নিয়ম বাদ পড়লে জানা থাকলে লিখবেন।

খেলোয়াড় এবং কার্ডঃ টুয়েন্টি নাইন খেলতে চারজন বন্ধুর দরকার। দুজনের দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে খেলাটি খেলতে হবে। একি দলের দুজন মুখোমুখি বসতে হবে। এভাবে চারজন গোল হয়ে বসে খেলা শুরু করবেন।

৫২টি কার্ড থেকে ৩২টি কার্ড ব্যাবহার করা হয় খেলার জন্যে। প্রতিটি গ্রুপ থেকে ৮টি করে কার্ড নেয়া হয়। অর্থাৎ ডায়মন্ড, হার্টস, স্পেড এবং ক্লাবস এর গ্রুপে J-9-A-10-K-Q-8-7 এ আটটি করে কার্ড খেলার জন্যে নেয়া হবে। এদের পাওয়ার উপরের ক্রমিক অনুসারে। বাকী কার্ডগুলর মদ্ধ্যে ২ থেকে ৫ পর্যন্ত কার্ড ট্রাম কার্ড দেখানোর জন্যে ব্যাবহার করা হবে। এগুল স্তুপ করে মাঝখানে রেখে দিতে হবে। আর একটি করে রেড এবং ব্ল্যাক কালারের ৬ নম্বর কার্ডটি দুটি গ্রুপের স্কোর রাখার জন্যে ব্যাবহার হবে। অর্থাৎ ডায়মন্ড এবং ক্লাবস পাবে একটি গ্রুপ হার্টস এবং স্পেড পাবে অপর গ্রুপ। ৬ নং কার্ডদুটি ফেস টু ফেস করে ট্রাম কার্ড এর দুপাশে রেখে দিতে হবে। উল্লেখ্য ট্রাম কার্ডকে কালার কার্ড ও বলা হয়।

খেলার লক্ষ্য হল পয়েন্ট কার্ডগুল জিতে নেয়া। এখন দেখে নেই কোন কার্ডের কত পয়েন্ট।

J তিন পয়েন্ট
9 দুই পয়েন্ট
A এক পয়েন্ট


10 এক পয়েন্ট (কোন সেটে ট্রাম না থাকলে সর্বচ্চ পয়েন্ট দেয়া খেলোয়ার সেটটি জিতবেন। এক্ষেত্রে একই সেটের 10 এবং A এর মাঝে A প্রদানকারী খেলোয়ার সেট টি পাবেন যদি 9 অথবা J না থাকে।)

কল এবং খেলাঃ খেলাটি ঘড়ির কাটা অনুসারে খেলতে হবে। এর বিপরীতেও খেলা যায়। যে কোন একজন সাফল করবেন ৩২টি কার্ড। এবং তার ডানের খেলোয়ার তা কেটে দিবেন। এরপর চারটি করে কার্ড চারজনকে দিতে হবে। সেই কার্ড দেখে সাফল কারী খেলোয়ার কল করবেন। সর্বনিম্ন ১৬ বলে তিনি কল করতে পারেন। ধরা যাক বি এবং সি দুটি দল। বি দলের ১ম খেলোয়ার সাফল করেছিল। সে ১৬ কল করল। সি দলের ১ম খেলোয়ার কল নিতে চাইলে তাকে ১৭ বলে কল নিতে হবে। এখন বি দলের খেলোয়ার কল নিজের কাছে রাখতে চাইলে বলবেন “আছি”। অর্থাৎ ১৭তে তিনি কল রাখছেন। সি দল খেলাটি নিতে চাইলে এভাবে তাকে কল বাড়াতে হবে। ধরাযাক সি দলের ১ম খেলোয়ার কল বাড়াতে চাইছেন না। তাহলে তিনি পাস বলবেন। এখন বি দলের ২য় খেলোয়ার কল নিতে চাইলে ১৮ বলে কল নিতে পারেন। এক্ষেত্রে বি দলের ১ম খেলোয়ার আর কল রাখতে পারবেন না। তখন বি দলের ২য় খেলোয়ার এবং সি দলের ২য় খেলোয়ার এর মাঝে বিড হবে। সি দলের ২য় খেলোয়ার কল নিতে চাইলে তাকে ১৯ বিড করতে হবে। বি দলের ২য় খেলোয়ার ১৯ এ কল রাখতে চাইলে বলবেন আছি, আর না চাইলে পাস বলবেন। তখন সি দলের কাছে কল্ থাকবে। এখন বি দলের প্রথম খেলোয়ার কল নিতে চাইলে তাকে বিড বাড়াতে হবে। যে দলের কাছে কল থাকবে সে দলের খেলোয়ার আছি বলে তার কাছে কল রাখতে পারবেন। অন্যদল কল নিতে চাইলে তাকে অবশ্যই বিড বাড়াতে হবে। এভাবে বিড বাড়াতে বাড়াতে ২৯ পর্যন্ত যাওয়া যায়। সবাই পাস করে দিলে সর্বচ্চ বিডার খেলাটি পাবেন। এবং তিনি স্তুপকৃত (২থেকে ৫ পর্যন্ত কার্ডের) থেকে ট্রাম করবেন। তারপর নিম্নমুখি করে সবগুল কার্ডের নিচে রেখে দিবেন যাতে বাকী তিনজন দেখতে না পায়।

ডাবল রিডাবলঃ বিডের সময় গেমের পয়েন্ট থাকে ১। এখন কেউ এ পয়েন্টকে ২ অথবা চার করতে চাইলে ডাবল রিডাবল দিতে পারেন। প্রথম কল কারী ডাবল দিতে পারবেন না। ধরা যাক বি দলের ১ম খেলোয়ার ১৬ বলল। সি দলের খেলোয়ার বলতে পারেন ১৭ তে ডাবল। এখন ১ম খেলোয়ার চাইলে ১৭তে রিডাবল দিতে পারেন অথবা ডাবলে আছি বলে কল রাখতে পারেন। বি দলের প্রথম খেলোয়ার যদি পাস করে দেন। তাহলে সি দলের খেলোয়ার ১৮ বলে ডাবলকে সিঙ্গেল করে দিতে পারেন অথবা রিডাবল বলতে পারেন। এভাবে সর্বচ্চ বিডের খেলোয়ার কলটি পাবেন এবং ট্রাম বা কালার করবেন।

ট্রাম এবং সেটঃ ট্রাম করার পর বাকী ১৬টি কার্ড চারজনের মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে। এর পর কার্ড দেখে কোন খেলোয়ার যদি মনে করেন যে তিনি একাই বিপক্ষ দলের সব খেলোয়ারের সবগুল কার্ড নিতে পারবনে। তাহলে তিনি বলতে পারেন যে তিনি সেট খেলবেন। এক্ষেত্রে একই দলের অন্য খেলোয়ার তার ৮টি কার্ড নিম্নমুখি করে রেখে দিবেন। তখন ট্রাম কার্ডের কোন প্রয়োজন নেই। যিনি সেট খেলবেন তিনি সবার আগে দিবেন। বাকী দুজন তার কার্ড ফলো করবেন। একই সেটের সর্বচ্চ কার্ড যে দিবে। সে সি সেট জিতবে।

খেলাঃ যিনি কালার করেছেন। তিনি সর্বপ্রথম কার্ড দিবেন। তারপর সবাই তা ফলো করবে। যদি কেউ কার্ড ফলো করতে না পারেন। তাহলে তাকে অবশ্যই ট্রাম দেখতে চাইতে হবে। ট্রাম দেখার সময় যদি কারো কাছে ট্রামের কিং এবং কুইন থাকে। তবে তিনি ম্যারেজ বলবেন। তাহলে তার দল চার পয়েন্ট সুবিধা পাবে। এক্ষেত্রে ম্যারেজ যদি কল যাদের কাছে রয়েছে, তারা পান। তাহলে বিপক্ষকে আরো চার পয়েন্ট বেশী তুলতে হবে। আর যদি কলকারী দলের বিপক্ষ দলের কাছে ম্যারেজ থাকে। তাহলে তাদের চার পয়েন্ট কম তুলতে হবে। ট্রাম দেখার সময় যদি ম্যারেজ বা পেয়ার এর কোন একটি না থাকে, তবে এ নিয়ম কার্যকরী হবে না। এবং ট্রাম দেখার পর কেউ যদি ভুলেও পেয়ার খেলে ফেলে তাহলেও তার দল ম্যারেজ বা পেয়ার এর সুবিধা হারাবেন। ট্রাম দেখার পর যে খেলোয়ার তা দেখতে চেয়েছিলেন। তিনি চাইলে ট্রাম করতেও পারেন অথবা অন্য যে কোন কার্ড দিতে পারেন। ট্রাম করতেই হবে এমন কোন কথা নেই। অনেকে এভাবেও খেলেন যে কেউ যদি সেট ফলো করতে না পারেন, তাহলে তিনি যে কোন কার্ড দিতে পারেন ট্রাম না দেখেই। কোন নিয়মে খেলা হবে তা শুরুতেই ঠিক করে নেয়া ভাল। ট্রাম অবশ্যই দেখতে হবে নাকি না দেখেও চলবে। এভাবে ৮টি কার্ড খেলা হয়ে গেলে স্কোর গুণতে হবে।

স্কোরিংঃ ৮টি কার্ড খেলার পর দু দল তাদের যেতা সেট গুল থেকে পাওয়ার কার্ডগুল গুনবেন। ধরা যাক বি এবং সি দলের মধ্যে বি দল ১৯ এ খেলাটি নিতে পেরেছিল। তাহলে সি দলকে তুলতে হবে ১০। সি দল যদি তা তুলতে পারে। তাহলে বি দল হেরে যাবে। আর না পারলে সি দল হারবে। এভাবে বি দল যদি ২০ এ খেলা নিয়ে থাকে, তবে সি দলকে তুলতে হবে ৯। যে দল বেশী কলে খেলা নিবে, বিপক্ষকে তত কম তুলতে হবে।

যে দলের কাছে কল থাকবে তারা যদি জিতে যায়, তবে তাদের কাছে থাকা ৬ নম্বর কার্ড এর লাল কার্ড এ এক প্লাস দেখান হবে। যদি তারা ডাবলে জিতে, তবে দুই প্লাস, আর যদি তারা রিডাবলে জিতে তাহলে চার প্লাস দেখান হবে। যদি কোন দল সেটে এ জয়ী হয়। তবে যে দলই কল নিয়ে থাকুক না কেন। জয়ী দল পাবে ছয় পয়েন্ট। আর কলে যেতা দল হেরে গেলে অনুরুপে কালো কার্ড থেকে এক, ডাবল এ দুই এবং রিডাবলে চার মাইনাস দেখাবে।

সেভেন কার্ডঃ যদি কেউ মনে করেন যে তিনি বেশী ভাল কার্ড পাননি কিন্তু কলে জিতে গিয়েছেন। তিনি ইচ্ছা করলে সেভেন কার্ড এ ট্রাম বা কালার করতে পারেন। এক্ষেত্রে বিড জেতার পর বাকী চারটি কার্ড সবাইকে দেয়া হবে, শেষের চারটি কার্ডের মধ্যে থেকে মদ্ধ্যখানের দুটি কার্ড এর যে কোন একটি কার্ড নিয়ে তা দেখে বাদ হয়ে যাওয়া কার্ডগুল (২ থেকে ৫) এর স্তুপের নিচে রেখে দিবেন। ট্রাম দেখতে চাইবার পর সেখান থেকে সেই কার্ডটি তিনি সবাইকে দেখিয়ে তার হাতের কার্ডের সাথে যোগ করবেন।

খেলা বাতিলঃ পুরো খেলায় যদি কালার কার্ড দেখা না হয় এবং বিডের বিপরীতে থাকা দল যদি প্রয়োজনীয় পয়েন্ট তুলে ফেলে অথবা সব কার্ড খেলা হয়ে যায় অথচ ট্রাম বা কালার কার্ড দেখা হয়নি। তাহলে খেলাটি বাতিল হবে।

এই হল মোটামোটি টুয়েন্টি নাইন কার্ড খেলার নিয়ম। বন্ধুরা মিলে খেলে দেখতে পারেন। তবে আনন্দের জন্যে খেলাই ভাল।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×