somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বর্তমান শিক্ষার অবস্থা আর প্লাসের বন্যা

৩০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্লাস সিক্সে পড়ার সময়কার কথা। আমাদেরকে ইসলাম শিক্ষা পরীক্ষার মার্কসহ খাতা দেখাচ্ছেন স্যার। প্রথমেই আমার খাতা হাতে পেয়ে দেখি ৭৭ পেয়েছি। বাহ! অনেক পেয়েছি। এতো মার্ক কে খাবে?!?
এরপর আর যারাই খাতা পাচ্ছে সবাইকেই স্যার তার প্রাপ্ত নম্বর জোরে জোরে বলে শুনিয়ে দিচ্ছেন। অনেকেই দেখি ৮০ থেকে ৮৫ এর মধ্যে পেয়েছে। বাহ... এতো খারাপ Exam দিয়েছি যে সবাই আমার চেয়ে ঢের বেশী পেয়ে গেছে।
নিজের প্রাপ্ত নম্বর ৪০ হলেও খারাপ লাগে না যদি আর সবাই ৪০ এর নীচে পায়! আমরা তো হচ্ছি সেই বাংলারই জনগণ। নিজেদের বাড়ীতে বিদ্যুৎ চলে গেলে বাইরে বের হয়ে দেখে আসি আশে-পাশের প্রতিবেশীদেরও বিদ্যুৎ চলে গেছে কি না!!
.
.
.

ওহ...হ্যাঁ.. যা বলছিলাম। ৭৭ পেয়ে যখন মন অনেক খারাপ করে বসে আছি তখন পাশের এক খাতায় নজর চলে গেলো। দেখি তার প্রাপ্ত নম্বরের সাথে ২০ মার্ক যোগ করে লেখা আছে। হুমম.... এইভাবে সকলকেই ২০ মার্ক করে জোড়াতালি দিয়ে আমার চেয়ে বেশী দেওয়া হয়েছে কিন্তু আমাকে দেওয়া হয় নাই। তাই স্যারকে জানালাম যে আমারও জোড়াতালি দেওয়া নম্বর লাগবে! এবার সবার মতোই জোড়াতালি দিয়ে আমার নম্বর হয়ে গেলো ৭৭+২০=৯৭!
এতো নম্বর!! এতো নম্বর দিয়ে কি করবো? ২০০২ সালের দিকের ঘটনা তো... তখন Math ছাড়া এতো নম্বর কল্পনাই করা যায় না। দুই-একজন ৮০ পায় তাও আবার খুব কষ্টে, সেখানে ৯৭!
.
.
.

এইবার আসি আসল কথায়। এখনকার PSC, JSC, SSC, HSC পরীক্ষার রেজাল্ট দেখলে মনে হয় আমাদের যেভাবে অতিরিক্ত মার্ক জোড়াতালি দিয়ে অনেক বেশী মার্ক দেখানো হয়েছিল ঠিক তেমনি এখানকার পাবলিক এক্সাম গুলোতেও সেভাবেই দেওয়া হয়।
আমাদের তো মাত্র ২০ মার্ক দেওয়া হয়েছিল আর এখনকার পাবলিক এক্সাম গুলোতে মনে হয় ৩০ মার্ক করে Extra Innings দেওয়া হয়ে থাকে আগে ভাগেই! কেউ Exam Hall এ উপস্থিত হলেই ১ মার্ক। নিজের রোল নং টা লিখতে পারলে আরো ১ মার্ক আর কোন প্রশ্নের ক্রমিক নম্বর লিখে উত্তর লেখার চেষ্টা করলেই আরো ১!
So, টোটাল তো ৩০+১+১+১=৩৩! পাশ.......পাশ!!! এতো মার্ক যদি আগে ভাগে পেয়েই থাকে তাহলে কেনো প্লাস পাবে না সবাই??
এমন এক যুগ চলে এসেছে যে যেখানে A+ পাওয়া টাই সহজ, না পাওয়াটাই খুব কঠিন...ক্রিম দেওয়া বিস্কুট ভাঙ্গার মতোই কঠিন!!এরপরেই ডায়লগ হবে.. “আ্ম্মু... আম্মু... আমি পরীক্ষায় A+ পাইছি”। Then… “ইশ...আজ যদি তোর বাবা বেঁচে থাকতো..”।

.
.
.

জার্মানী’র এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে শোনা, সেখানকার স্যার তাকে জিজ্ঞেস করেছিল... বাংলাদেশের সব স্টুডেন্ট কি এতোটাই মেধাবী যে সবাই GPA-5 পায়? ওই ভার্সিটি বাংলাদেশী স্টুডেন্টরা এডমিশনের জন্য আবেদন করে আর সেখানকার স্যার’রা দেখেন বাংলার দামাল ছেলেরা সবাই খেয়ে না খেয়েও A+!! তারা তো আর জানে না...কি করে সবাই A+ পায়!!হুমম... বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গিয়েছে। আমাদের মতো তো আর অন্যান্য দেশ এতো প্লাস পায় না। ভাই কিন্তু সে প্রশ্নের কোন উত্তর ইচ্ছে করেই দিতে পারেন নাই।

.
.
.

জানি না, আর কতটা দিন বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এভাবে জোড়াতালি দিয়ে চলবে। অবস্থা এমন যে পরীক্ষার হলে উপস্থিত হয়ে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ৩ টা ঘন্টা পার করে দিলেও পাস! যখন আমরা শুনি ডাবল গোল্ডেন প্লাস পাওয়া ছাত্রছাত্রী Varsity Admission Test Exam এ মাইনাস মার্ক পেয়ে FAIL করেছে তখনও কি বুঝি না যে দেশের শিক্ষার মান কোথায় নেমে গেছে। প্রশ্ন এখন একটাই, আমরা কি সত্যিই শিক্ষার উন্নত মান চাই, না জোড়াতালি দিয়ে প্লাসের বন্যা দেখতে চাই....
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:১৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সচীবদের সম্পর্কে এখন কিছুটা ধারণা পাচ্ছেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ২০ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৭



সামুর ব্লগারদের মাঝে ১ জন সচীব আছেন,(বর্তমানে কর্তব্যরত ) তিনি বর্তমানে লিখছেন; আধামৃত সামুতে তিনি বেশ পাঠক পচ্ছেন; উৎসাহের ব্যাপার! এরচেয়ে আরো উৎসাহের ব্যাপার যে, তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারীবাদ, ইসলাম এবং আইয়ামে জাহেলিয়া: ঐতিহাসিক ও আধুনিক প্রেক্ষাপট

লিখেছেন মি. বিকেল, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৪



আইয়ামে জাহিলিয়াত (আরবি: ‏جَاهِلِيَّة‎) একটি ইসলামিক ধারণা যা ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর আবির্ভাবের পূর্ববর্তী আরবের যুগকে বোঝায়। ঐতিহাসিকদের মতে, এই সময়কাল ৬ষ্ঠ থেকে ৭ম শতাব্দী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। VF 3 Mini: মাত্র 60 মিনিটে 27 হাজার বুকিং!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৪



আমার ব্যাক্তিগত গাড়ি নেই কিন্তু কর্মসূত্রে বেঞ্জ , ক্যাডিলাক ইত্যাদি ব্যাবহার করার সুযোগ পেয়েছি । তাতেই আমার সুখ । আজ এই গাড়িটির ছবি দেখেই ভাল লাগলো তাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×