আজকের বাংলাদেশের পরিস্থিতির নেপথ্যে
বৃটিশ-পাকিস্তানি আইন-কানুন দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা
যার পরিণাম স্বাধীন জাতির অভ্যন্তরীন পরাধীনতা ...
যেন তেন ভাবে ন্যূনতম মান সংরক্ষণ না করেও,যে কোন দৃষ্টি- নন্দন সু-উচ্চ বিল্ডিং, অট্টালিকা সম দালান-ইমারত যে কোন স্থাপনাই গড়ে তোলা যায়,কিন্ত যথাযথ মান সংরক্ষণ না করার কারনে সেই স্থাপনার ভবিষ্যৎত কি হবে তার দিন ক্ষণ সঠিক বলা না গেলও, সে স্থাপনার ধ্বংস যে কেউ বলতে পারবে অনিবার্য...
বাংলেদেশের চলমান সর্ব ক্ষেএে আজকের পরিস্থিতি এবং দেশের ভবিষ্যৎত তারই অনুরূপ,মূলত আজকের বাংলদেশের এ সমস্যা দেশের জন্ম লঙ্গে,দেশ বিনির্মাণে যেন তেন ভাবে গড়ে তোলা ত্রুটি পূর্ণ রাষ্ট্র ব্যবস্থাই আজকের এ অবস্থার জন্য দায়ী,যার ত্রুটি জনিত সমস্যা আজকের গনতন্ত্রের বার বার দেখা দিচ্ছে ফাটল,কম্পন,পরিনামে জন মনে আতঙ্ক,যে কোন মুহূর্তে গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার ধ্বংস।
১৯৭১ সাল ১৬ ই ডিসেম্বর মহান মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম হোল বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি,সদ্য স্বাধীন হওয়া এ দেশটি উপনিবেশিক বৃটিশ- পাকিস্থানি শাসনের শত বছরের পরাধীনতা থেকে মুক্ত হোল,জাতির কাঙ্ক্ষিত ছিল একটি পুনঃগঠিত স্বাধীন জাতি স্বত্বার উপযোগী সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার,কিন্ত ১৯৭২ সালের ১১ই জানুয়ারি পর দেখা গেল ভিন্ন এক চিত্র, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল দল ও শক্তির স্মনয়ে জাতীয় বিপ্লবী সরকার গঠনের পরিবর্তে চালু করা হল দলীয় সরকার এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গড়ে ওঠা সুকঠিন জাতীয় ঐক্যে ধরলো ফাটল,অন্যদিকে বৃটিশ,ভারত,পাকিস্তানি রাষ্ট্র কাঠামো অনুকরণে রচিত হোল ৭২ এর সংবিধান,আর এ সংবিধান ঔপনিবেশিক শাসকদের তাদের রেখে যাওয়া বিধি বিধানের এক অকাট্য দলিলে পরিণত হল,তখন থেকেই কাযত বাঙালি সদ্য স্বাধীনতা অর্জন করেও পুনঃ ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ধাঁচের প্রথম ধারার রাজনীতি ও রাষ্ট্র কাঠামোতে প্রবেশ করল,পাকিস্থানিদের রেখে যাওয়া পূর্ব পাকিস্তানের সচিবালয় হলো বাংলাদেশের সচিবালয়,পূর্ব পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র সচিব হোল বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র সচিব,এমনকি পূর্ব পাকিস্তানের যে ওসি একজন মুক্তি যোদ্ধাকে রাজাকারের হাতে তুলে দিয়েছিল,সে ওসি হোল স্বাধীন বাংলাদেশের ওসি,এমনি করেই একটি ভু-খণ্ড,একটি জাতীয় পতাকা এবং একটি জাতীয় সংগীতকে স্মবল করে পূর্ব পাকিস্থানের নাম বদলে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করল,যার ফলে সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশ পুনঃগঠনের বদলে দেখা দিল এক নায়ক তান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা, মতা-নৈক,ও পতিক্রিয়াশীল শক্তির উদ্দান,পরিনামে জাতী হারাল জাতির অভিবাবককে,সড়যন্ত্রের মাধ্যমে আসল সামরিক শাসন,তারপর গণতন্ত্র নামে যেটি প্রতিষ্ঠা ফেল সেটি হোল আপোষ মূলক একটি সাদামাটা রকমের ব্যবস্থা ,সংবিধান ও রাষ্ট্র কাঠামোতেঐ সময়ের উপযোগি কিছু সংশোধনী চাড়া সে পূবাপর ধাঁরাই বহাল রইল, কিন্তু সে
শাসন ভেঙ্গে পড়ল ক্ষমতা দখল,আর সড়যন্ত্রের পালা বদলে। রূপিত হোল ৮০ দশকে স্বৈরাচারী শাসন,গণতন্ত্র ন্যূনতম যত টুকু ছিল তারও কবর রচিত হোল,সবত্র অস্তির রাজনৈতিক পরিবেশে জনগণের দাবীর মুখে,তিন দলিয় জোটের রূপ রেখায় ৬ ই ডিসেম্বর ১৯৯০এ স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটল,জনগণ ভাবল ঐই বার বুঝি গনতন্ত্র এলো !! ৯০ এর দশকের পর দেশে পালাক্রমে বি এন পি ও আওয়ামিলীগ দেশ পরিচালনায় অবতীর্ণ হোল মাঝখানে ১.১১. এ সামরিক আশ্রিত শাসন আমল বাদে,বর্তমানে আওয়ামিলীগ দেশ পরিচালনার তবিয়ত আছেন...এ শাসন আমল গুলতে ভিবিন্ন সময় ভিন্ন সরকার ও শাসক সাংবিধানিক সংশোধনী এনেছেন ২-৪ টি মৌলিক পরিবর্তন ছাড়া তাদের নিজ কিংবা দলীয় স্বার্থে,আর বাকী সংবিধান তবিয়ত রইল সেই বৃটিশ,পাকিস্তানি ধাঁচের রাষ্ট্র কাঠামোতে,যা আজকের দিন পর্যন্ত আমারা সে ধারাবাহিকতায় প রি চা লি ত হচ্ছি ...
স্বাধীনতা অর্জনে আজকের ৪২ বৎসরেও এই সংবিধানের আলোকে আমরা পারিনি একটি গ্রহন যোগ্য নিবাচন করতে,আমারা পারিনি এ সংবিধানের আলোকে জনগণের ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা নিশ্তিত করতে,পারিনি নিশ্তিত করতে জনগণের রাষ্ট্র ক্ষমতার নেতৃত্বে কতৃত্ব অংশ গ্রহনের আধিকার নিশ্চিত করতে,গনতন্ত্র বলতে যেটি বুঝার তার ন্যূনতম কায়দা কানুন আত্মতস্ত করতে,তার মূল কারন একটি- সমাজ পরিবর্তিত হয়েছে বিশ্ব রাজনীতি, বিশ্ব অর্থনীতি,প্রযুক্তি উন্নয়নে অভূত পরিবর্তন এসেছে,জনগনের চাহিদা,চিন্তা ভাবনায়ও পরিবর্তন এসেছে সে অনুপাতে আমারা কি আমাদের রাষ্ট্র কাঠামো তথা সংবিধান যুগপযোগি করতে পেরেছি !!! না ...পারিনি,আমারা আজ ও বিশ্ব পট পরিক্রমায় যুগপযোগি সকলের অংশীদারিত্বমূলক সাংবিধানিক কাঠামো সংস্কার করতে পা রি নি ।
শত উদাহারনের মাঝে ২ একটি উদাহারন না দিলেই নয় যেমন ব্রিটিশ-পাকিস্তানি আমলে প্রণীত= শ্রমিক ক্ষতিপূরণ আইন-১৯২৩,মুজুরি আইন- ১৯৩৬,কারখানা আইন-১৯৬৫,শিল্প অধ্যাদেশ-১৯৬৯,উপরিউক্তি সব কয়টি প্রণীত হয় ব্রিটিশ-পাকিস্তানি আমলে।বাঙ্গালীর শত বছরের ইতিহাস ব্রিটিশ-পাকিস্তানিদের শাসনামল শোষণ-নির্যাতন আর বঞ্ছনা ছাড়া যে আর কিছু নয় তা বিশ্ব ইতিহাসে কারো কাছে অস্পষ্ট নয় ...
এসব বিধি-বিধান কে হাতিয়ার বানিয়ে বাঙালি জাতিকে শাসন নামে তারা কেবল শোষণই করেছিল ... অবাক করা বিষয় এই যে !!! ব্রিটিশ-পাকিস্তানিদের রেখে যাওয়া উপরিউক্তি সব কয়টি আইনই স্বাধীন বাংলাদেশে বলৎব প্রচলিত আইন,( এরকম শত শত আইন রয়েছে )তাহলে,স্বাধীন স্বারভৌম বাংলাদেশ অর্জন করেও এ সব উপনিবেশিক ব্রিটিশ-পাকিস্তানি আইন বিধি-বিধান কাযত আমদের শিল্প তথা শ্রম ও শ্রমিকের এবং স্বাধীন জাতি-স্বত্বার জন্য পরাধীনতা ছাড়া আর কিছুই নয় ... যার পরিণাম স্বরূপ স্বাধীনতার ৪০ দশকে আজও আমারা অনৈক্য,শ্রমিক অস্ন্তোষ,শিল্প বিরোধের মুখ-মুখি প্রতিনিয়ত।যেখানে বিশ্ব আজ যুগপযোগী শ্রম ও শিল্প নীতির মাধ্যমে শিল্প বিপ্লবে উন্নত থেকে উন্নতির থিকে থাবিত হচ্ছে ... সেখানে উপনিবেশিক ব্রিটিশ-পাকিস্তানি আইন ও বিধি-বিধান দিয়ে বর্তমান শ্রমিক অস্ন্তোষ,শিল্প বিরোধ ও শিল্প উন্নয়ের আমরা কেবল ব্যর্থই চেষ্টা করছি না .বরং দিন দিন আমারা নিঃবুদ্ধিতার পরিচয় দিচ্ছি,যেমন টা যুবক বয়সে কাউকে,শৈশবের পোষাক পরানোর মত ...
তাই সর্ব ক্ষেএে এসব উপনিবেশিক আইন ও বিধি-বিধান পরিবর্তন করে স্বাধীন বাংলাদেশের উপযোগী আইন ও বিধি-বিধান প্রনয়ন আজ সময়ের দাবি ।
এখন প্রসঙ্গ হচ্ছে সমাধান যেটি আমাদের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জঃআমারা বিশ্বাস করি সুধু শাসক বদল করে আধুনিক যুগপযোগি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে না,তাই শাসক বদল নয়...শাসন ব্যবস্থার বদলের আন্দোলনই জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি মূল লক্ষ হওয়া উচিত,কেননা ১৯৭১ আমারা শাসক বদলিয়েছি কিন্তু শাসন ব্যবস্থা আজও বদলাতে পারিনি,তাই আধুনিক যুগপযোগি জনগণের প্রকৃত গণতন্ত্র আমারা যদি প্রতিষ্ঠা করতে চাই,সর্ব প্রথম বর্তমানে বিদ্যমান নিবাচন পদ্দতি ইস্যুতে সমাধান সাবার আগে জুরুরি তাই প্রস্তাবনা (সংবিধান সনশোধনীর মাধ্যমে)পার্লামেন্টে হবে ২ কক্ষ বিশিষ্ট,( নিন্ম কক্ষ-৩০০ সদস্য ও উচ্চ কক্ষ * )এ মুহূর্তে নিবাচন কালীন সরকার হিসেবে পার্লামেন্টে উচ্চ কক্ষ গঠন করে,সমাজের স্মমানি,প্রতিজসা নাগরিক প্রতিনিধী,শিক্ষক,বুদ্ধিজীবী,ডাক্তার,শিল্পী ও যে কোন পেশার পেশাজীবী প্রতিনিধীদের স্মনয়ে সংসদীয় ব্যবস্থায় উচ্চ কক্ষ গঠন করা যেতে পারে,তারা নিবাচন কালীন অন্তর্বর্তী কালীন সরকার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন,এবং নিবাচন পরবর্তী এলাকা বিত্তিক নিবাচিত হয়ে আসা ৩০০ আসনের প্রতিনিধিদের দিয়ে পার্লামেন্টে নিন্ম কক্ষ গঠন করবেন,এতে সংবিধানিক এবং পার্লামেন্টিয় প্রথায় এক আপর পক্ষের ক্ষমতা কতৃত্ব ও নেতৃত্বের অংশিদারিত্ব হবেন, এক পক্ষ ও অপর পক্ষের মধ্যে জবাব দিহিতা নিশ্তিত হবে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:৫৫