যখন স্কুলে প্রথম ত্রিভুজ শিখছিলাম বুঝতাম না যে এটা জিবনে কি কাজে আসতে পারে । পরবর্তিতে বাংলা ছবিতে ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনী দেখে বুঝলাম বিষয়টার সমাধান জ্যামিতির মত অতটা সহজ নয় । এমন সমস্যা যে কাউকেই যেকোন সময় বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে। তবে আমাদের দেশে এমন হাজারও সমস্যার সমাধান কোন ব্যাপারই না । আমাদের আছে হাই প্রোফাইল সব পীর বাবা, দয়াল বাবা, রত্ন পাথর, স্বপ্নে পাওয়া তাবিজ, গাছের শিকড় বাকল দ্বারা তৈরি করা হারবাল প্রোডাক্ট। দেশে এলাকা ভিত্তিক এমন কোন ডিশ চ্যানেল নাই যেখানে এসবের বিজ্ঞাপন হয় না । পুরো দেশে এসবের চেম্বার হচ্ছে অলি গলিতে আর পাড়া মহল্লায় দরগা, পীরদের জমজমাট আসরের তো কথাই নাই । কাষ্টমারও মাশাল্লাহ জম্মের মত ।
আমার কথা হল যে দেশে এই সব ভন্ডামি হচ্ছে প্রকাশ্য দিবালোকে সেখানে রাষ্ট্রের কি কোন কিছুই করার নাই ? একটা জাতিকে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে দিনের পর দিন কিছু অসাধু লোক আর আমরা কিনা এসবের মাঝে ডিজিটাল দেশের স্বপ্ন দেখি ।
এমনও অনেক মা বাবা আছেন যারা নিজের সন্তানকে ডাক্তার, ইন্জ্ঞিনিয়ার বানানোর জন্য সাইন্সে ভর্তি করান আর ভাল রেজাল্টের/চাকরির আশায় পীর বাবার কাছে মান্নত করেন/ বসুন্ধরা সিটিতে গিয়ে হাজার টাকায় রত্নপাথর কিনেন !! চিন্তা করেন যেই জ্ঞান তাদেরকে অজ্ঞতা থেকে মুক্ত করবে সেই অজ্ঞতার কাছে সাহায্য চাইছে জ্ঞান আহরনের জন্য সমাধান।
শারিরিক অক্ষমতা, সাংসারিক সমস্যা, দাম্পত্য জিবনে অশান্তি, প্রেমে ব্যর্থতা, চাকুরি হচ্ছে না, কাউকে বশ করতে হবে, জিবনের এমন কোন সমাধান নেই যে তারা ২৪/৪৮/৭২ ঘন্টার মধ্যে করতে পারে না ! ডিশ চ্যানেলের মাধ্যমে প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছে তাদের এই অলৈৗকিক সমাধানের বানি ! ! আমরাও এসব দেখি, কিছু দুর্বল হৃদয় পাবলিক চোখের সামনে এত সহজ সমাধান দেখে লোভ সামলাতে না পেরে যান তাদের শাহি দরবারে । আর আমরাও ডিজিটাল নাগরিক তথা ডিজিটাল দেশ গড়ার পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাই (!)।
আসুন ফিরে যাই ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনীতে । মনে করুন, নাছোড়বান্দা দুইজন নায়কই গেল বাবার দরবারে একই নায়িকাকে পাওয়ার জন্য, এখন সর্বরোগ বিশেষজ্ঞ বাবা (!) কেমনে সমাধান করবেন?
সরকারের উচিত এই সব ভন্ডামি অচিরেই আইন করে বন্ধ করা । একটা জাতিকে মানসিক ভাবে মুক্ত করতে না পারলে তাদের দ্বারা আর যাই হোক একটা জ্ঞানভিত্তিক দেশগঠন সম্ভব নয় ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:২৬