তালেবানরা আমেরিকা এবং তার পাপেট সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল নিয়েছে। এতে বাংলাদেশের অনেক মিডিয়া ও সংস্কৃতিকর্মীদের দেখলাম, তারা তালেবানদের এই বিজয়ে নাখোশ।
এখন তালেবানদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে ভবিষ্যত শঙ্কা, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং সাধারণ নাগরিকদের স্বাধীনতা খর্ব করা হবে দাবি করছেন অনেকে। এমনকি তালেবানদের আয়ের উৎস কী, কোথা থেকে পায় অস্ত্রশস্ত্র—এসব নিয়েও প্রশ্ন তুলছে অনেকে।
অথচ আজ যদি তালেবানরা ইসলামপন্থী না হত। দেখতেন, এদের কত উল্লাস! তখন কিন্তু ঠিকই বলত, এ বিজয় শুধু তালেবানের নয়, এ বিজয় আফগানিস্তানের প্রতিটা সাধারণ মানুষের!
তাহলে এখন সমস্যাটা কোথায়?
তালেবানের দাবি, প্রেসিডেন্ট গানি চলে যাওয়ায় তারা খুব শীঘ্রই ইসলামি খেলাফত বা ইসলামি আমিরাত আফগানিস্তান ঘোষণা করবে।
মূলত এই প্রশ্নে এসেই এদের কষ্টটা। তালেবানরা ক্ষমতা দখলে নিলেও সমস্যা ছিল না। সমস্যা হচ্ছে শরিয়া আইনে বা ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠায়৷ কারণ, তালেবান একাধিকবার বলছে, এই যুদ্ধ শুধু কাবুল সরকারের বিরুদ্ধে, বরং এ যুদ্ধ ইসলামি আমিরাত' প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ।
রাশিয়া চেয়েছিল আফগানিস্তানে কমিউনিজম প্রতিষ্ঠা করতে, আমেরিকাও চেয়েছিল গণতন্ত্র। কিন্তু রাশিয়া-আমেরিকা ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছে। কারণ, তারা সাধারণ মানুষের মন-মগজে ঢুকতে পারেনি। কিছু পেইড এজেন্ট তারকা দিয়ে বড়জোর বিজ্ঞাপন চিত্র বানাতে পারলেও বিদেশীদের শাসনের ব্যাপারে আফগানদের মধ্যে যে সহজাত ঘৃণা রয়ে গিয়েছিল, সেটা বুঝতে একপ্রকার ব্যর্থই হয়েছে রাশিয়া-আমেরিকা।
বর্তমানে খোদ আফগানরাও চাইছে শরিয়া আইন। দ্রুত বিচারব্যবস্থা এর অন্যতম কারণ। শরিয়া মতে তারা অনেক অপরাধের বিচার মূহুর্তে পেয়ে যায় এবং সেটা কার্যকর হয় জনসম্মুখেই। এতে চুরি-চামারির মতো অনেক অপরাধপ্রবণতা কমে আসছে। নারীরা পর্দার প্রতি হয়ে উঠছে শ্রদ্ধাশীল, হু হু করে বাড়ছে বোরকা বিক্রি। দেয়ালে দেয়ালে নারী-চিত্রের অঙ্কনও সরিয়ে ফেলছে তারা।
মূলত আফগানরাই এখন ইসলামি শরিয়া চাইছে। তো, একটা দেশের জনগণ যেই আইনব্যবস্থা চায়, সেটা যত দ্রুত প্রতিষ্ঠা করা যায়, তাতেই রয়েছে দেশের কল্যাণ। নয়ত বিদেশী কমিউনিজম আর ডেমোক্রসি আর কত?