somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুল...সঠিক...কনফিউশন...চালাকি...অন্ধবিশ্বাস

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হয়তো ক্লাস ওয়ানে পড়তাম সেসময়। তখন টিভির ভিডিও চ্যানেলে হুজুরদের ওয়াজের ভিডিও ছাড়তো। এরকমই একবার টিভিতে ওয়াজ হচ্ছিল। ওয়াজের হুজুর ওইদিন ওয়াজের মধ্যে সেইরকম একটা কথা বলসিলেন, যেইটা সেইরকমই বিনোদিত করছিল। কি প্রসঙ্গে কথাটা বলসিলেন মনে নাই, তবে কথাটা মানে কথার অংশটা ছিল এমন-"ওই লোকে পায়জামার ভিত্রেই ভরভরাইয়া হাইগ্গা দিসে।" হ্যা, এইটাই বলসিল! একজন হুজুরের মুখ থেকেই উপরের উক্তিটা বের হইসিল। কোনো ভদ্রলোক যদি আপনাকে "ভরভরাইয়া হাইগ্গা দিসে"- টাইপ কথা বলে, আপনার কেমন লাগবে? আপনিও কি কোনো ভদ্রলোককে এইধরনের কথা বলতে পারবেন? পারবেননা। কিন্তু উনি একজন ধর্মীয় নেতা, স্পিরিচুয়াল লিডার হয়ে কথাটা বলসেন।

উপরের হুজুর উদাহরণ ছিল মাত্র। আমি এখানে কাউকেই হিউমিলেট করতে চাইনাই। আমি আসলে দেখাইতে চাইসি বাংলাদেশে গ্রামে-গ্রামে কিংবা শহরেও ওয়াজ-মাহফিল করে ঘুরে বেরায় এমন মাওলানাদের লেভেলটা, কোয়ালিটিটা। তারা এরকম উদ্ভট উদ্ভট কথা বলে, আমরাও তাদের এইসব কথার সাথে তাল মিলাই। আমরা অনেকেই এরকম হুজুর কিংবা পীরের মুরিদ। তাদেরকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করি। এবং মজার ব্যাপার হলো,এদের বেশিরভাগেরই ইসলাম সম্পর্কে সে রকম কোনো জ্ঞান নাই। শিক্ষাগত যোগ্যতা খুব বেশি হলে কুরআনে হাফিজ। এদের অনেকেই আমাদের মতোই ওয়াজ শুনে শুনে হুজুর হইসে। আবার অনেকে হইসে উত্তরাধিকার সুত্রে। তবে সব হুজুর না, বেশির ভাগ এমন। এবং আমরা বেশিরভাগ সাধারন মানুষই এরকম হুজুরদেরই ফলো করি। শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবাই। এমন হুজুরদের ভুলভাল মসলা-মাসায়েল নিয়ে লাফাই। ফরয কায়েম বাদ দিয়ে এসব নিয়েই পড়ে থাকি। মুরিদগিরি করেই ঘুরে বেড়াই। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাপারটা এতটাই ভয়ানক হয়ে যায় যে তা শির্ক-এর পর্যায়েও চলে যায়। যতই শিক্ষিত হইনা কেন, আধুনিক হইনা কেন, ধর্মীয় এসব ব্যাপারে আমরা মান্ধাতার আমলেই পড়ে আছি।

এবার আসি অন্য প্রসঙ্গে, আমরা বাঙালিরা সব বিষয়েই পন্ডিতি করতে ভালোবাসি। জানি আর না জানি, মাতব্বরি করবোই। সেটা এই ধর্মীয় ব্যাপারেও বাদ নাই। এমন অনেকেই আছে ইসলাম সম্পর্কে এক ফোটা পড়াশুনাও করেনাই, কিন্তু ভাব ধরে সে অনেক কিছুই জানে। হয়তো অন্য কারো কাছ থেকে শুনসে কিংবা পীর-হুজুরের কাছ থেকে জানসে। সেটা সঠিক না ভুল তা খতিয়েও দেখেনা, উল্টা আরো আরেকজনের উপর তা নিয়ে মাতব্বরি করে। নিজে ঠিক হওয়ার নাম নাই, অন্য আরেকজনের ছোটখাট ভুল নিয়ে তুলকালাম কান্ড বাধায় ফেলে। আরে ভাই আপনে যদি এতই জানেন, আগে নিজে ঠিক হননা! আগে নিজে বদলান, তারপরে অন্যকে বদলাতে আইসেন। এইসব মানুষকে খুবই বিরক্ত লাগে। শুধু এই একটা বিষয়না, সবকিছুতেই তারা না জেনে মাতব্বরি করতে আসে।

ধর্ম খুবই স্পর্শকাতর একটা বিষয়। ধর্ম হলো একজন মানুষের বিশ্বাস। আত্মিক প্রশান্তি ও উন্নতি লাভের চাবিকাঠি। ধর্ম হলো স্রস্টার সাথে সৃষ্টির সম্পর্ক স্থাপনকারী সেতু। কিন্তু এই ধর্ম সম্পর্কেই আমাদের সেরকম কোনো জ্ঞান নাই। আমরা ওই ওয়াজের হুজুরদের কথা অনুযায়ীই ধর্মকর্ম করি। একজন মুসলিম হিসাবে যেখানে আমাদের প্রত্যেকেরই নিজ ধর্ম সম্পরকে জানাটা আবশ্যক, সেখানে আমরা বেশিরভাগ মানুষই ইসলামের 'ই'ও জানিনা। কুরআন শরীফ আরবীতে তিলাওয়াত করা আর গুটিকয়েক হাদিস জানার মধ্যেই ধর্মীয় পড়াশুনা সীমাবদ্ধ। আরে ভাই ধর্মকর্ম করবেন তো আগে সে সমপর্কে জানেন। তা নিয়ে পড়াশুনা করেন। কুরআন-হাদীস পড়েন তার অর্থ বুঝে। তার গুরুত্ব-তাত্পর্য সম্পর্কে জানেন। ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে জানেন। পাঁচবেলা মসজিদে যাওয়া-আসা আর হুজুরদের বয়ান শুনলেই ধার্মিক হওয়া যায়না। ধার্মিক হতে হয় মন থেকে, আত্মিক শক্তির বিকাশ ঘটিয়ে। হাক্কুল্লাহ্ এবং হাক্কুল ইবাদ উভয়কেই সমান গুরুত্ব দিলেই আপনি ধার্মিক হতে পারবেন। আর সবচে আগে আপনাকে ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করতে হবে। শুধু শুনে শুনে বিশ্বাস করে গেলেই চলেনা। আপনি যেই ধর্মেরই হোননা কেন, আপনার ধর্ম সম্পর্কে জানুন। আপনার ধর্মগ্রন্থ, ধর্মের ইতিহাস সম্পর্কে জানুন, বুঝুন। শুধু নিজের টা জেনেই বসে থেকেন্না, অন্যেরটাও জানেন। নিজের ধর্মের সাথে অন্যের ধর্মের তুলনা করেন। এভাবেই আপনি সৃষ্টিকর্তার সম্পর্কে জানতে পারবেন, তাঁর সান্নিধ্যে আসতে পারবেন। আর সৃষ্টিকর্তাকে পাওয়াইতো ধর্মের মূল উদ্দেশ্য॥

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নিছক স্বপ্ন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮



©কাজী ফাতেমা ছবি
তারপর তুমি আমি ঘুম থেকে জেগে উঠব
চোখ খুলে স্মিত হাসি তোমার ঠোঁটে
তুমি ভুলেই যাবে পিছনে ফেলে আসা সব গল্প,
সাদা পথে হেঁটে যাব আমরা কত সভ্যতা পিছনে ফেলে
কত সহজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদম চুপ. দেশে আওয়ামী উন্নয়ন হচ্ছে তো?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৯



টাকার দাম কমবে যতো ততোই এটিএম বুথে গ্রাহকরা বেশি টাকা তোলার লিমিট পাবে।
এরপর দেখা যাবে দু তিন জন গ্রাহক‍কেই চাহিদা মতো টাকা দিতে গেলে এটিএম খালি। সকলেই লাখ টাকা তুলবে।
তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×