আপনি একজন মানুষকে দেখলেন(অবশ্যই বিপরীত লিঙ্গের)। তার কানগুলা খাঁড়া-খাঁড়া, নাকটা খোঁচা-খোঁচা, চোখ তিনটা বোঁচা-বোঁচা, এককথায় সেইরকম একটা চেহারা। পরে গেলেন প্রেমে, ধপাস! আবার একজনকে দেখলেন যে সেইরকম গান গায় অথবা সেইরকম অভিনয় করে অথবা সেইরকম লেখে কিম্বা আঁকে। তার প্রতিভায় লুক্কায়িত আবেগ আপনার হৃদয়ে খচখচ করে খোঁচা দিতে থাকলো। পড়ে গেলেন প্রেমে, ধপাস! আবার একজনকে দেখলেন যার সেইরকম টাকাপয়সা। সে সেইরকম বিলাসি জীবনযাপন করে। আপনার তার টাকাপয়সা দেখে ভালো লেগে গেল, পড়লেন প্রেমে। ধপাস! আবার একজনকে দেখলেন যার সেইরকম ক্ষমতা, আপনাকে তুড়ি বাজাতে বাজাতে হিপনোটাইজ করে ফেলতে পারে। আপনিও হিপনোটাজড হয়ে গেলেন প্রেমে। এবার ধধধপাস!
বর্তমান যুগে মানুষ সাধারনত উপরোক্তভাবেই কোনো একজনের প্রেমে পড়ে যায়। সে দিনে-রাতে, চলতে-ফিরতে, জেগে-সপ্নে, খাবার টেবিলে কিম্বা বাথরুমে থাকতে শুধু তাহারই কথা ভাবতে থাকে। শুধুমাত্র তাহাকে নিয়েই স্বপ্ন দেখতে থাকে। তাতেই ডুবে যায়। একসময় হয়তো তাহার সাথে পরিচয়ও হয়। ঘনিষ্ঠতাও বাড়তে থাকে। দুজন দুজনার হয়েও যায় একসময়। আবার কোনো একসময় প্রতিদিনকার নিয়ম হয়ে যাওয়া পার্কের বেঞ্চিতে বাদাম ছিলতে ছিলতেই দুজন হুট করে আলাদা হয়ে যায়। ইয়েস, ব্রেকআপ। সবক্ষেত্রে না ঘটলেও বেশীর ভাগক্ষেত্রে শেষমেশ এটাই ঘটে। কারণ তাদের মধ্যে ভালোবাসাইতো ছিলনা, যা ছিল তা হলো ভালোলাগা।
ভালোবাসা আর ভালোলাগা অবশ্যই ভিন্ন জিনিস। ভালোলাগাটা সাময়িক কিন্তু ভালোবাসাটা সার্বক্ষণিক। কারো রুপ, প্রতিভা, টাকা কিংবা অন্য কোনো বাহ্যিক দিক দেখে কখনোই ভালোবাসা হয়না, ওটা হলো ভালোলাগা। ভালোবাসা হলো কারো ভিতরটাকে ভালোবাসা। পছন্দ-অপছন্দটাকে ভালোবাসা, আচার-আচরনকে ভালোবাসা। সে যেরকম আছে তেমনভাবেই তার সাথে মনের সাথে মিলন ঘটাতে পারলে তবেই তা হয় ভালোবাসা। নচেত্ সেটা ভালোলাগাই। একপাক্ষিক কিম্বা কখনো দিপাক্ষিক কিন্তু কখনোই তা পক্ষহীন হয়ে ওঠেনা। দুটা মন মিলে এক মনে পরিণত হয়না। তাই, বাহ্যিক দিক বাদ দিয়ে মনকে ভালোবাসা উচিত্। যাইহোক, সবচেয়ে ভালো হবে এইসব মানব-মানবীর ভালোবাসার ক্যাচাল বাদ দিয়ে প্রকৃতিকে ভালোবাসা, মানুষকে ভালোবাসা, মানবতাকে ভালোবাসা। এবং অবশ্যই খাওয়া-দাওয়াকে।