সমরেশ মজুমদার এর "অনিমেষ ট্রিলজি" এর কালপুরুষ পরে শেষ করলাম।চিন্তা করলাম একটা রিভিউ লিখি। কাচা হাতের কাজ।
সমরেশ এর "উত্তরাধিকার" এ চা বাগানে কাটানো শৈশব ফুটে উঠেছে। এই উত্তরাধিকারেই লেখক নায়ক অনিমেষ কে বড় করে তুলেছেন। সেই সাথে পরিচয় করিয়েছেন দেশের মাতার সাথে, দেশের রাজনীতির সাথে। পুরো বইটা অনিমেষের ছেলেবেলা কৈশোর নিয়ে লেখার আড়ালে লেখক সূক্ষ্মভাবে এক রাজনৈতিক টানাপোড়নের মাঝে অনিমেষ সেই সাথে পাঠককে বিচরণ করিয়েছেন।
উত্তরাধিকার সূত্রে একটা দেশ যে নতুন প্রজন্ম পাচ্ছে সেই নবগঠিত দেশ এর ক্ষমতার লড়াই, আদর্শের দ্বন্দ্ব হচ্ছে এই বই এর পটভূমি। বইটা ভারতের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে লেখা হলেও ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আর আমাদের রাজনৈতিক অবস্থা দুটো প্রায় একই।
আমাদের দেশে যেমন আওয়ামীলীগ তেমনি ভারতে কংগ্রেস। যেই দুইটা দলের আছে অতীত ইতিহাস, একটা স্বাধীন দেশ আদায়ের আন্দোলনে যারা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। সেই অতীত ঐতিহ্য আর ত্যাগ এর বিনিময়েই তারা জনগণের কাছে ভোট চায়। কারন একমাত্র তারাই দেশের মানুষের কষ্টের কথা বুঝে। তারা ১০ টাকায় কেজি চাল খাওয়ানোর মহান ব্রত নিয়ে গদি দখল করতে চায়। দুইটা দলই মুজিব আর নেহেরু-গান্ধী এর ইমেজ নিয়ে জনগণের কাছে হাত পাতে। আর আছে তাদের family line. শুধু মাত্র মেয়ের family line দিয়েই এই দুইটা দল ভোগে চলে যেতে পারবে। ভারতে সোনিয়া গান্ধী থেকে রাহুল গান্ধী আর এইদেশে আছে হাসিনা থেকে সজীব ভাই। বাকিরা আসিতেছে। আমার পোলাপান হওয়ার টাইম অইগুলিও পুতুল প্রিয়াঙ্কা এর পেট থেকে বের হবে। এদের অতীতকে আঁকড়ে ধরে রাখার ঘুণে ধরা গৌরবের কারনেই শান্তির মা মরেও শান্তি পাচ্ছেনা।
আরেকটা নব্য দল। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।যা বাংলাদেশ জিন্দাবাদ এরই প্রতিরুপ।
গল্পের শুরুটা হয়েছে ৪৭ এর ১৫ই আগস্ট এর দিন কয়েক আগে থেকে। স্বর্গছেড়া নামে একটা পাহাড়ি এলাকায় চা বাগান থেকে রিটায়ার্ড করবেন সরিতশেখর। তাঁর ছেলে মহীতোষ, প্রিয়তোষ, ঝারি মেয়ে হেমলতা। মহীতোষ এর স্ত্রী মাধুরী আর ওদেরই ছেলে অনিমেষ।সরিতশেখর চাচ্ছেন ১৫ই আগস্ট উনার ফেয়ারওয়েল হোক।
১৫ ই আগস্ট ব্রিটিশ রা ভারত ছেড়ে চলে যাবে। এই স্বর্গ ছেড়ার একটা স্কুলে "বন্দে মাতরম" গাওয়া হবে।
১৫ ই আগস্ট এর সকাল টা শুরু হল অন্যরকমভাবে। সমগ্র ভারতে আজ সাজ সাজ রব। সকালে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তলনের মাধ্যমে স্বর্গছেড়ার ১৫ই আগস্ট শুরু হবে। কিন্তু উত্তোলনটা কার হাত দিয়ে শুরু হবে। শুরু করা উছিত তাঁর হাত দিয়েই যারা এর উত্তরাধিকার।এই উত্তরাধিকারের প্রতিনিধি হিসাবে অনিমেষ পতাকা উত্তলন করল। যখন পতাকা চূড়ান্ত উচ্চতায় উঠল সেখান থেকে কিছু রঙ্গিন জালর কাগজ নব্য স্বাধীন দেশের উত্তরাধিকারদের সুভেচ্ছা জানাল। সেদিনই অনিমেষ ব্রত নিল ওই পতাকাতাকে শে অনেক উচুতে নিয়ে যাবে।
আজ আর লিখতে মন চাচ্ছে না। এক্সাম এর জন্য গত নির্ঘুম রাতের ক্লান্তি আর লিখতে দিচ্ছে না। পরের পর্বের জন্য অনিমেষ এর কংগ্রেস আর কমিউনিস্ত পার্টি এর সংস্পর্শে আসা তুলে রাখলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৩৩