কাশ্মীরে এখন যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। যে কোন সময় যে কোন কিছু হয়ে যেতে পারে। এমন অবস্থার সম্মুখীন বাংলাদেশকেও হতে হয়েছিলো কয়েক দশক পূর্বে। ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর শান্তি চুক্তি সই করার পর শেখ হাসিনা'র নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার পুরো বিশ্বের জন্যে এক অসাধারণ উপমার সৃষ্টি করে। বাংলাদেশের জুম্ম জাতি অস্ত্র সমর্পন করে আজ অন্যান্য জেলাগুলোর নাগরিকদের মতোই জীবন অতিবাহিত করছেন। এটা ছিলো শেখ হাসিনার জন্যে একটি বিজয়। তিনি শান্তি স্থাপন করতে পেরেছিলেন। কিন্তু, ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেই পথে গেলেন না। তিনি সংঘাতকেই বেছে নিলেন নিজের পথ হিসেবে।
বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম, বাঙালী ও উপজাতি, এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পরস্পরের রক্তের হোলিখেলায় মত্ত ছিলো কয়েক দশক। অনেক মানুষের জীবন ঝড়েছে সেই সময়। আজ যেমন পাকিস্তান কাশ্মীরের যোদ্ধাদের সমর্থনদাতা, তেমনি ভারত ছিলো শান্তি বাহিনী'র মদদদাতা। আমেরিকার নিউ ইয়র্ক টাইমস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শান্তিবাহিনী'র সদস্যের বক্তব্য এমনই ছিলো।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কি করলেন? তিনি প্রথমে শান্তিচুক্তির মাধ্যমে শান্তিবাহিনী'র সদস্যদের সাধারণ জীবনের স্বাদ কি রকম তা বুঝালেন। আর, তাদের মদদদাতা ভারতের সাথে গড়ে তুললেন কৌশলগত সম্পর্ক।
মোদি কি তা করতে পারতেন না? কাশ্মীরী মোজাহিদদের সাথে একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তি চুক্তি করে তাদের অস্ত্রদাতা পাকিস্তান কিংবা পাকিস্তানের মদদদাতা আমেরিকার সাথে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে কাশ্মীরের সাধারণ জনগণকে হাঁফ ছেড়ে বাঁচার সুযোগ দিতে পারতেন কি? অবশ্যই পারতেন।
অথচ মোদি কি করলেন? তিনি আমেরিকা'র সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে পাকিস্তানকে পঙ্গু করে দিলেন ঠিকই, কিন্তু, নিজের দেশের একটি অংশ কাশ্মীরের জনগণের জীবনকে আরো দুর্বিষহ করে তোলার পাকা বন্দোবস্ত করলেন।
এখানেই, একজন 'নারী' শেখ হাসিনা'র কাছে 'পুরুষ' নরেন্দ্র মোদি হেরে গেলেন। মা জাতি'র স্নেহের কাছে বাবা জাতি'র রাগের এ এক চরম পরাজয়।