আজ সিলেটে আসলাম। জয়ন্তিকা ট্রেনের যে কেবিনে এসেছি, সেটার এসি খারাপ ছিলো। সারা রাস্তা গরমে হাঁসফাঁস করতে করতে এক পর্যায়ে ভাবতে শুরু করলাম, এভাবে আর চলা যায় না। একটা বিহিত করা দরকার। সেটা কি?... ঢাকায় সিলেটের জন্যে একটি আলাদা ট্রেন স্টেশন স্থাপন করে, উন্নত দেশের মতো সেবা দিয়েও দশ বছরে ট্রেনের পিছনে ব্যয়কৃত অর্থ কিভাবে উঠিয়ে নিয়ে আসা যায় সেই পরিকল্পনা তৈরী করা।... কিভাবে সেটা সম্ভব?
আসুন, প্রথমে এই রুটের জন্যে কয়টি ট্রেন আছে সেটা বের করি। এই রুটে সকাল, দুপুর ও রাতে ঢাকা থেকে সি্লেটে তিনটি আর সিলেট থেকে ঢাকায় তিনটি, এভাবে প্রতিদিন মোট ছয়বার ট্রেন আসা যাওয়া করে...
আয়ের হিসাবঃ
এখন, প্রতিটি ট্রেনে যদি ১000 জন চড়ে আর গড়ে ৩00 টাকা করে টিকেট হয়... ছয় বারে মোট আঠারো লক্ষ টাকা আয় হবে... সপ্তাহে ছয়বার ট্রেন চললে মাসে হবে ২৪ দিন... তাহলে, মোট আয় হবে = চার কোটি বত্রিশ লক্ষ টাকা... বছরে যা গিয়ে দাঁড়াবে একান্ন কোটি চৌরাশি লক্ষ টাকা!
এবারে আসি ব্যায়ের হিসাবে...ঢাকা সিলেট রুটে, নিম্ন লিখিত ব্যয় হবে:
Fixed cost:
১. ট্রেন লাইনের জন্যে ভূমি অধিগ্রহণ,
২. ট্রেন লাইন স্থাপন,
৩. ট্রেন স্টেশন ও কম্পিউটার সরঞ্জামাদি'র জন্যে খরচ,
৪. ছয়টি ট্রেন ইঞ্জিন এবং একশো বিশটি বগি ক্রয় (প্রতিটি ইঞ্জিনের জন্যে বিশটি বগি)
৫. ক্লিনিং মেশিন।
Variable cost:
১. স্টেশনের ইলেক্ট্রিক বিল,
২. ছয়জন ড্রাইভার, একশো বিশজন এটেন্ডেন্ট, টিকেট কাউন্টারম্যান, ক্লিনারের সেলারি,
৩. ট্রেনগুলোর ডেপ্রিশিয়েসন,
৪. ডিজেল খর্চ।
এখানে উল্লেখ্য যে, একটি ইঞ্জিনের দাম ১৮ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা। সেই হিসাবে, ৬টি ইঞ্জিনের দাম পড়বে প্রায় ১২০ কোটি টাকা। একেকটি বগির মূল্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা হলে, ১২০টি বগির মূল্য হবে ৮৪ কোটি টাকা। এইভাবে, ৬টি ট্রেনের জন্যে সর্বমোট খরচ পড়বে ২০৪ কোটি টাকা।
অন্যান্য খরচের জন্য যদি আরো ৩০০ কোটি টাকা ধরা হয়, এই টাকা উঠে আসতে ১০ বছর সময় লাগার কথা। তবে, বলা বাহুল্য, এজন্যে রেলওয়েতে প্রয়োজন একজন বুদ্ধিমান, সিলেটের প্রতি সদয় ব্যক্তিত্ব।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১১:১৮