বেড রুম থেকে একটা বিটকেলে গন্ধ ধাক্কা মারলো নাজনীনের নাকে। ওয়াক থুহ! কোথা থেকে আসছে এসব! আজও বোধহয় তার স্বামী টয়লেটে ফ্লাস করে আসেননি। তেলাপোকাগুলোকে পেটের ময়লা খাবার সুযোগ করে দিতে প্রায়ই এটা করে থাকেন ঘরের কর্তা মহাশয়।
কথাটা সত্যি। বারেক সাহেবের বাসার টয়লেটে কয়েকটা তেলাপোকা বসবাস করে। সেগুলো কি খেয়ে বেঁচে থাকে তা নিয়ে বিস্তর চিন্তা তার। একদিন আবিস্কার করলেন, কমোডে মলত্যাগ করার পর পেট থেকে বের হওয়া ময়লাগুলোর উপর কিলবিল করছে সেগুলো।
ইউরেকা! এগুলোই তাহলে তেলাপোকাগুলোর খাবার! সেই দিন থেকে নিয়মিত টয়লেট করার পর ফ্লাস করেন না বারেক সাহেব, যাতে করে তেলাপোকাগুলোর ঐ ময়লা খেতে অসুবিধা না হয়।
টয়লেটে ঢুকে কমোডে উঁকি দিয়ে কিছু দেখতে পেলো না নাজনীন। তাহলে, গন্ধ আসছে কোথা থেকে! গা গুলানো গন্ধের উৎস যে এখান থেকেই সে ব্যাপারে নিশ্চিৎ সে।
'এই শুনছো। ঘরের গন্ধটা কোথা থেকে আসছে একটু দেখবে?'
বারেক সাহেব বিছানায় শুয়ে বই পড়ছিলেন। স্ত্রী'র কথা শুনে বই-এর আড়ালে মুখ লুকালেন, যেন কথা শুনতেই পাননি। আজকে একটি কান্ড ঘটিয়েছেন তিনি।
টয়লেটের ময়লাগুলোর উপর তেলাপোকাগুলোকে রোজকার মত আজকেও দেখতে পেয়ে বেশ মায়া হয় তার। আহা! কি হয় তাদেরকে একটু শান্তিতে পায়খানা খেতে দিলে!
অথচ, উনার স্ত্রী সেটা বুঝেন না। তিনি টয়লেট থেকে বেরুলেই ছুটে গিয়ে ফ্লাস করে দেন। তখন আর সেগুলো খেতে পারে না তেলাপোকারা। সেই জন্যে আজ একটা বুদ্ধি করেছেন। পেট থেকে বের হওয়া ময়লাগুলো নিজের হাত দিয়ে উঠিয়ে কমোডের উপরের দিকের ফাঁকে ফাঁকে ভরে দিয়েছেন। যা ব্যাটা তেলাপোকারা, আজ তোদের দিন। পেট ভরে রাজখাবার খা। কেউ তোদের ডিস্টার্ব করবে না।
একটা উটকো গন্ধ তাঁর নাকে এসে লাগলো। ঐ চটকে দেওয়া মলগুলোরই হবে। বারেক সাহেব ব্যাপারটা পুরোপুরি উপেক্ষা করে গেলেন। কয়েকটি প্রাণের সুখের জন্যে একদিন না হয় একটু গন্ধ সহ্য করতেই হলো। তাতে কি আর ক্ষতি বৃদ্ধি হবে!
নাজনীনের চিল্লাচিল্লি কানে না তুলে বইয়ে মনোনিবেশ করলেন বারেক সাহেব।
====
২য় প্রকাশ
========
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:২৬