somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী.
আমি সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী জন্ম চট্টগ্রামে। জীবিকার প্রয়োজনে একসময় প্রবাসী ছিলাম।প্রবাসের সেই কঠিন সময়ে লেখেলেখির হাতেখড়ি। গল্প, কবিতা, সাহিত্যের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলা পত্রিকায়ও নিয়মিত কলামও লিখেছি। shakawatarticle.blogspot.com/

জন্মদিন পালন করা কি জায়েজ

২১ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :









আমাদের বর্তমান আধুনিক মুসলিম সমাজে "জন্মদিন" পালন একটি ট্রেন্ড হিসাবে ধরা দিয়েছে। আধুনিক পশ্চাত্য জীবনযাপনের অনুসরণে সাধারণ মুসলমানগণ নিজের অজান্তেই পা দিচ্ছে পাপের গন্তব্যে। কেননা এই জন্মদিন পালন কখনোই ইসলামী সংস্কৃতি নয়। তাই আসুন দেখি কুরআন এবং হাদিসের আলোকে কেন ইসলাম জন্মদিন পালন সমর্থন না।



জন্মদিনের ইতিহাস
লিখিতভাবে জন্মদিনের কথা প্রথম জানা যায় বাইবেলের জেনেসিস অধ্যায় থেকে। মিশরের ফারাওদের জন্মদিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন ছিল মিশরে। বাইবেলে জন্মদিনের কথা বলা থাকলেও সেটি জন্মের দিন নাকি সিংহাসনে বসার দিন সেটি নিয়ে ইজিপ্টোলজিস্টদের মাঝে বিতর্ক রয়েছে।

প্রাচীন মিশরে ফারাওদেরকে ঈশ্বর মনে করা হতো আর সিংহাসনে বসার দিনটিকে মনে করা হতো তাদের মানুষ থেকে ঈশ্বরে রূপান্তরের দিন। তাই ঠিক কোন দিনটির কথা বলা হচ্ছে সেটি পরিষ্কার বোঝা না গেলেও ফারাও এর জন্মের দিন কিংবা ‘ঈশ্বরে রূপান্তরের দিনটিকে’ বেশ ধুমধামের সাথেই পালন করা হতো। বাইবেলে বর্ণিত এই ফারাও ছিলেন ইউসুফ (আ) এর সময়ের ফারাও, যে সময় ইউসুফকে (আ) যৌন নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। বাইবেলের বর্ণনা থেকে জানা যায়,

“তৃতীয় দিনটি ছিল ফারাউনের জন্মদিন। ফেরাউন তার সব কর্মকর্তাদের জন্য ভোজের আয়োজন করেন। ফেরাউন তার মদ-পরিবেশক ও রুটি প্রস্তুতকারককে ক্ষমা করে দিলেন”। [ওল্ড টেস্টামেন্ট, জেনেসিসঃ ৪০-২০]

সে সময়ে সাধারণ মানুষদের জন্মদিন পালনের কোনো তথ্য ধর্মীয় কিংবা সাধারণ ইতিহাসে পাওয়া যায় না। ইউরোপেও জন্মদিন পালন শুরু হয় গ্রীক দেবি আর্টেমিসের জন্মদিনে চাঁদ আকৃতির কেক উৎসর্গ করে। ঠিক কীভাবে জন্মদিনের প্রথা গ্রীসে গিয়েছে সেটা জানা না গেলেও ধারণা করা হয় মিশরীয়দের ফারাওয়ের জন্মদিন পালন করার রীতি অনুসরণ করে গ্রীকরা তাদের দেব-দেবীদের জন্মদিন পালন করা শুরু করে। আসুন আমরা দেখি বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসে কীভাবে জন্মদিন পালন শুরু হয়েছে।


ইহুদি ধর্মে জন্মদিন
ইহুদি ধর্মে মানুষকে উৎসাহিত করা হয়েছে বন্ধু-বান্ধব আত্মীয় সজনদের জমায়েত করে ধর্মীয়ভাবে আনন্দ উদযাপনের সাথে জন্মদিন পালনের জন্য। ইহুদিদের অনেক রাবায়ি (আলেম) মনে করেন কোন ব্যক্তির জন্য তার জন্মদিনটি তার জন্য দোয়া কবুলের একটি বিশেষ দিন। আধুনিক জন্মদিনে ধর্মনিরপেক্ষ অনেক বিষয় থাকলেও এটা ধর্মীয় আচারেরই সার নির্যাস।


হিন্দুধর্মে জন্মদিন
হিন্দু ধর্মের শাস্ত্রীয় বিবরণ ও জ্যোতিষ গণনার ভিত্তিতে লোক বিশ্বাস অনুযায়ী শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল ৩২২৮ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের ১৮ অথবা ২১ জুলাই। এ দিনটি জন্মাষ্টমী নামে পরিচিত। হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। উৎসবটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে, প্রতি বছর মধ্য-আগস্ট থেকে মধ্য-সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো এক সময়ে পড়ে। ভাদ্র ও মাঘ মাসের শুক্লা চতুর্থীকে গণেশ চতুর্থী বলা হয়। গণেশ চতুর্থী বা গণেশোৎসব যা হিন্দু দেবতা গণেশের বাৎসরিক পূজা-উৎসব। হিন্দু বিশ্বাসে এই দিনটি গণেশের জন্মদিন।

হিন্দু ধর্মে দ্বাদশ অথবা ত্রয়োদশ বছরে জন্মদিন পালিত হয় ‘পৈত পরিধান উৎসব’ হিসেবে। বয়স পূর্তিতে শিশু একটি বড় সূতার কুণ্ডলী কাঁধের একপার্শ্বে ঝুলিয়ে রেখে পরিধান করে। এছাড়াও, এই উৎসবটি উপনয়ণ নামে স্বীকৃত। হিন্দুদের বর্ণপ্রথায় উচ্চতর বর্ণ হিসেবে ব্রাহ্মণ পরিবারের সংস্কৃতিতে এ উৎসবটি মূলতঃ বালকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।



বৌদ্ধধর্মে জন্মদিন
আমরা সবাই বুদ্ধ পূর্ণিমার কথা জানি। বুদ্ধ পূর্ণিমা বা বৈশাখী পূর্ণিমা হল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্রতম উৎসব। এই পুণ্যোৎসব বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে উদযাপিত হয়। বৌদ্ধধর্ম মতে এই পবিত্র তিথিতে বুদ্ধজন্মগ্রহণ করেছিল, বোধি বা সিদ্ধিলাভ করেছিল এবং মহাপরিনির্বাণ লাভ করেছিল।

এই দিনে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা স্নান করে, শুচিবস্ত্র পরিধান করে মন্দিরে বুদ্ধের বন্দনায় রত থাকে। ভক্তরা প্রতিটি মন্দিরে বহু প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করে, ফুলের মালা দিয়ে মন্দিরগৃহ সুশোভিত করে বুদ্ধের আরাধনায় নিমগ্ন হয়। এছাড়া বুদ্ধরা এই দিনে বুদ্ধ পূজার পাশাপাশি পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ, সমবেদ প্রার্থণাও করে থাকে।



খৃষ্টানধর্মে জন্মদিন
ক্রিস্টমাস খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। প্রতিবছর ২৫ ডিসেম্বর রোমান ক্যাথলিক ও প্রটেস্টান্ট চার্চের অনুসারীরা যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে এ উৎসব পালন করে। খ্রিস্টিয় ২০০ সাল থেকে এ উৎসব পালন শুরু হয়। ৩৫৪ সালে দিনটিকে যিশুর জন্মদিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং এ ঘোষণা ৪৪০ সালে পোপ স্বীকার করেন। মূলত পৌত্তলিক রোমানদের উৎসবের বিপরীতে ক্রিস্টমাস পালন শুরু হয়। মূলকথা বলতে গেলে জন্মদিনের ব্যাপক প্রচলন খৃষ্টানদের মাধ্যমেই ছড়িয়েছে।


সামগ্রিকভাবে জন্মদিন পালনের ইতিহাস
ধর্মীয় বেড়াজালের বাইরে প্রথম জন্মদিনের কথা জানা যায় রোমে। রোমে সাধারণ জনগণ পরিবার ও বন্ধুদের জন্য জন্মদিনের পার্টি শুরু করে। এমনকি বিশেষ ক্ষমতাশালী ও সম্মানিত ব্যক্তিদের জন্মদিনে সরকারিভাবে ছুটিও চালু হয়। তবে জন্মদিন পালন শুধুমাত্র পুরুষদের জন্যই ছিল। নারীদের জন্মদিন পালনের কোনো রীতি তখনো চালু হয়নি।


প্যাগান সমাজে জন্মদিন পালনের রীতি থাকলেও সেমেটিক সমাজে জন্মদিন মোটেও স্বাভাবিক নিয়ম ছিল না। বরং প্যাগানদের থেকে উৎপত্তি হবার কারণে ইহুদী ও খ্রিস্টানরা প্রথমদিকে জন্মদিন পালনকে শয়তানের রীতি হিসেবে মনে করতো।


তবে খ্রিস্টানদের ধ্যানধারণা পাল্টাতে থাকে চতুর্থ শতাব্দীর পর থেকে। প্রথমদিকে কোনো নিয়ম না থাকলেও চতুর্থ শতাব্দীর পর থেকে ঈসা (আ.) এর জন্মদিন পালন শুরু করে খ্রিস্টানরা। এর ফলে খ্রিস্টান চার্চগুলো জন্মদিন পালনে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে থাকে। প্রথমদিকে ধর্মীয় চরিত্রগুলোর মাঝে সীমাবদ্ধ থাকলেও ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষেরাও কেউ কেউ জন্মদিন পালন শুরু করে। বর্তমানে ক্রিসমাস পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে।


এটা কাদের সংস্কৃতি
উপরোক্ত জন্মদিনের ইতিহাস থেকে আমরা এটা সুস্পষ্টভাবে জানতে পারলাম যে, এই সংস্কৃতির আশেপাশে ইসলামের নাম গন্ধও নেই। অর্থাৎ এটা স্পষ্টতই বিধর্মীদের আচার অনুষ্ঠান। যা তাদের মূলত ধর্মীয় অনুষ্ঠানই। পরবর্তীতে তাদের এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

যারফলে এই সংস্কৃতি বিশ্বের সব দেশ এবং জাতির মধ্যে তারা খুব সুক্ষ্মভাবে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে। এতে করে তাদের দুটি লাভ সাধিত হয়েছে। এক হচ্ছে আর্থিক। অর্থাৎ জন্মদিন পালন নিয়ে যাবতীয় সামগ্রীর ব্যবসা। দুই হচ্ছে তাদের ধর্মীয় আচার এবং ধর্মবিশ্বাসকে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছে।

ইসলামের ইতিহাসে জন্মদিন
ইসলামে জন্মদিন বা জন্মবার্ষিকী পালন বলতে কিছু নেই। বছরের যে দিনটিতে কেউ জন্ম গ্রহণ করেছে, সেই দিনকে তার জন্য বিশেষ কোন দিন মনে করা বা এই উপলক্ষ্যে আনন্দ-ফুর্তি করা অথবা ইবাদতের উদ্দেশ্যে কোন আমল করার কথা কুরআন-সুন্নায় কোথাও কিছু পাওয়া যায়না।

খাইরুল কুরূনেও (সাহাবী ও তাবেঈন রা. এর স্বর্ণযুগ) জন্মদিন পালনের কোন অস্তিত্ব ছিল না। যদি জন্মদিন বলতে ইসলামে কোন কিছু থাকত তাহলে হাদীস ও ইতিহাসের কিতাব গুলোতে সাহাবী ও তাবেঈন রা. এর জন্মদিন পালনের কোন না কোন ঘটনা থাকত। অথচ তাদের জন্মদিন পালনের কোন প্রমাণ কোন সূত্রেই পাওয়া যায়না।


এমন কি জন্মদিনের বিশেষ কোন গুরুত্বই তাদের কাছে ছিল না। এর প্রমাণ মেলে তাদের জীবনী পর্যালোচনা করলে। সাহাবা ও তাবেঈন রা. এর জীবনী দিকে লক্ষ্য করলে এটা স্পষ্ট হয় যে, তারা কে কোন সনে জন্মগ্রহণ করেছেন তা কারো কারোটা জানা গেলেও কোন মাসের কোন তারিখে জন্ম করেছেন তা জানা খুবই দুস্কর।

এমনকি আমাদের প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রবিউল আওয়াল মাসের কত তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন এটা নিশ্চিত ভাবে জানা না থাকায় সীরাতপ্রণেতাদের মধ্যে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়।

ইসলামে জন্মদিন পালন গুরুত্ববহন করলে কমপক্ষে সে সময় সাহাবিদের সন্তান সন্তুতি জন্মগ্রহণ করেছেন তাদের জন্মতারিখ সংরক্ষিত থাকত। তারা জন্মদিন ঘটা করে পালন করতেন। অথচ জন্মদিন পালন তো দূরের কথা তাদের জন্মতারিখই ঠিকমতো সংরক্ষণ করা হয়নি।

এটা যদি ইসলামে পালনীয় বিষয় হতো বা গুরুত্ব বহন করত তাহলে অবশ্যই তারা তদাদের সন্তানদের জন্ম তারিখ সংরক্ষণ করতেন। এর মাধ্যমে এ কথা প্রমাণিত হয় জন্মদিন বলতে বর্তমানে যা বুঝায় তার অস্তিত্ব কখনোই ইসলামে ছিল না।


কেন জন্মদিন জায়েজ নয়
ইতিমধ্যে আমরা তথ্য প্রমাণাদি দ্বারা এটা বুঝতে পেরেছি যে, জন্মদিন পালন কখনোই ইসলামী সংস্কৃতি নয়। সুতরাং এটা যেকোনো মুসলিমের জন্য হারাম। কেননা ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার ধর্ম। ইসলামে অপূর্ণ বলতে কোনো শব্দ নেই। আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুল সা. মানব জীবনের এমন কোনো দিক পরবর্তীতের জন্য বাকি রেখে যাননি। ঠিক এই জন্মদিন নিয়েও ইসলামের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন,

"আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম"।[ সুরা মায়েদা ৫:৩ ]

অর্থাৎ আল্লাহ যখন দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলেন সেখানে নতুন করে কোনো কিছু (যা মূল নীতির সাথে সাংঘর্ষিক) যুক্ত হওয়ার অবকাশ নেই। আল্লাহ আরো বলেন,

"তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষথেকে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তার অনুসরণ কর। তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য সাথিদের অনুসরণ করনা। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর"। (সূরা আ’রাফঃ৩)


এখানে আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন যে, যা তিনি আমাদের অর্থাৎ মুসলিমদের নির্ধারণ করে দিয়েছেন তারই শুধুমাত্র অনুসরণ করা যাবে। তা বাদ দিয়ে অন্য কোনো জাতি ধর্ম গোষ্ঠীকে অনুসরণ করা যাবে না। আল্লাহ আরো উল্লেখ করেন,

"এরপর আমি আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি দ্বীনের বিশেষ বিধানের উপরঃ সুতরাং আপনি এর অনুসরণ করুন, মূর্খদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করবেননা"।(সূরা যাসিয়াঃ১৮)


সুতরাং আল্লাহ আমাদের যে নির্দিষ্ট নিয়মকানুনের মধ্যে একটি জীবনবিধান দিয়েছেন সেই বিধানেরই অনুসরণ করাই একজন মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব। যেহেতু জন্মদিন পালন বা বার্ষিক কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের ইসলামের ইতিহাসে নেই। সেহেতু এটা পালন করা জায়েজ নয়। তারপরও আমরা যারা উদারপন্থী মুসলমান তাদের এটা মেনে নিতে কষ্ট হবে। তাই তাদের জন্য রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শিক মহামানব রাসুলসাঃ এর প্রসিদ্ধ হাদীস।

হযরত ইবনে উমার রাযি. হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুরূপ অবলম্বন করে, সে তাঁদেরই দলভুক্ত। (সুনানে আবূ দাঊদঃ ৪০৩১)

অর্থাৎ কেউ ইসলামের আদর্শের বাইরে গিয়ে অন্য কোনো আদর্শ বা সংস্কৃতিকে পছন্দ করে লালন করে তাদের অনুসরণ অনুকরণে চলে। তবে সে ঐ দলের বা গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হলো।


এখন যদি কেউ বলে আমি জন্মদিন হিসেবে শুকরিয়া স্বরূপ কিছু আমল (হুজুরদের দিয়ে দোয়া, একটি নির্দিষ্ট দিনে মানুষকে খাওয়ানো, কেক কাটা ইত্যাদি) করবো তাহলে এই ব্যাপারে কথা হলো, ইসলামে যে বিষয়টি নেই তা ইসলামের অন্তর্ভুক্ত করা বিদআত। যা আল্লাহ্ ও রাসূল সা. কতৃক সরাসরি প্রত্যাখ্যাত। হাদীস শরীফে এসেছে –হযরত আয়েশা রাযি. হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেউ আমাদের এ শরীয়তে সংগত নয় এমন কিছুর অনুপ্রবেশ ঘটালে তা প্রত্যাখ্যান করা হবে। (বুখারী, হাদীস ২৬৯৭)

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এমন কোন কর্ম করলো যাতে আমাদের নির্দেশনা নেই, তা প্রত্যাখ্যাত হবে। (মুসলিম হাদিস ৪৩৮৫)



হযরত যাবের ইব্ন আব্দুল্লাহ রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুতবার মাঝে বলতেন, যাকে আল্লাহ হেদায়াত দেন তাকে ভ্রষ্টকারী কেউ নেই। আর যাকে পথভ্রষ্টকরেন তার জন্য হেদায়াত কারী কেউ নাই। নিশ্চয়ই সবচেয়ে খাটি কথা হল আল্লাহর কিতাব ও সর্বোত্তম দিশারী হল মুহাম্মাদ সা এর সুন্নাত এবং সর্ব নিকৃষ্ট কর্মহল (দ্বীনের মাঝে) নতুন কিছু উদ্ভাবন করা। প্রত্যেক নতুন উদ্ভাবিত বিষয়ই বিদআত; প্রত্যেক বিদআতই ভ্রষ্টতা আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতাই জাহান্নামী। (সুনানে নাসাঈঃ১৫৭৭)



সুতরাং নিজ থেকে শুকরিয়ার ইবাদতের জন্যও কেউ কিছু করলে সেটা ইসলাম সমর্থন করে না। যা ইসলাম সমর্থন করে না তা পালন করলে আমরা বিদআত করছি। আর এই বিদআত ধীরে ধীরে একজন মুসলমানকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়। আল্লাহ আমাদের বিদআত সম্পর্কে জানার বোঝার সুযোগ দিন এবং সঠিক আমল করার তৌফিক দান করুন আমিন।







তথ্য সংগ্রহ এবং কৃতজ্ঞতা স্বীকার
https://www.google.com/url?sa=t&source=web&rct=j&url=https://roar.media/bangla/main/history/history-of-birthday/amp&ved=2ahUKEwijr5e6pr77AhVI2DgGHZOLBDgQFnoECBAQAQ&usg=AOvVaw3pDv566QzSh5GtLWiH1vCU

মাওলানা মুহাম্মাদ আরমান সাদিক
ইফতা বিভাগ
জামিয়াতুল আসআদ আল ইসলামিয়া




সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
১৯ অক্টোবর, ২০২১ ইংরেজী
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।



সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:২১
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×