somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মৌতাত গোস্বামী শন্তু
একজন মানুষ হিশেবে সৎ, নির্লোভ, সত্যান্বেষী, সত্যবাদী হওয়াটা জরুরী হয়ে পরে বিশ্বমানবতার জন্য, সমাজের জন্য।একজন মানুষ হিশেবে সৎ, নির্লোভ, সত্যান্বেষী, সত্যবাদী হওয়াটা জরুরী হয়ে পরে বিশ্বমানবতার জন্য, সমাজের জন্য।

রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন: রাগ কমানোর উপায়

১২ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন’-
এটি শুধু কথার কথা নয়। দৈনন্দিন জীবনে এভাবেই আমরা হেরে যাই। আমরা নানান সময় নানান বিষয় নিয়ে রেগে যাই। কখনো কারো কথায় রেগে যাই আবার কখনো বা কারো আচরণে রেগে যাই। কিন্তু বিষয়টা নিয়ে কখনো ভেবে দেখেছেন কি? আজ হয়তো আপনাকে কেউ ধাক্কা দিয়েছে কিংবা আপনার সাথে খারাপ আচরণ করেছে সেজন্য আপনি রেগে গেলেন। রেগে গিয়ে তাকে অনেক কথা শোনালেন কিংবা মারতে চাইলেন! এতে আপনার সম্মান বাড়বে? নাকি এতে করে সবাই আপনাকে শ্রদ্ধা করবে? এবার নিশ্চয়ই ভাবছেন রাগ কমাবেন কি করে? না ভেবে দেখে নিন রাগ কমানোর ১০টি উপায়ঃ

১। থামুনঃ
কেউ ইচ্ছে করে রাগ করে না। তবে সে রাগ যদি প্রিয়জনের প্রতি অভিমানের না হয়ে থাকে তবে নিজেকে বলুন থামতে। জি হ্যাঁ আপনি ঠিক পড়ছেন। যখনই কোনো বিষয় আপনার ভালো লাগবে না কিংবা আপনি বোঝাতে পারবেন না তখন থেমে যান। কেউ যদি আপনার সাথে খারাপ আচরণ করে তবে তার সাথে কথা বাড়িয়ে লাভ কি বলুন?? আবার কেউ যদি আপনাকে ধাক্কা দেয় তবে তার চেয়ে অন্ধই বা কে আছে এই পৃথিবীতে? তাই থেমে যান। এমন অনেক বিষয় আসবে যা আপনাকে করবে রাগান্বিত। তবে সেসব বিষয়ের জন্য প্রস্তুত রাখুন একটি শব্দ – ‘থামুন’ ।

২। লক্ষ্য করুনঃ
আপনার রেগে যাবার কারণ জানেন? ভালো করে লক্ষ্য করুণ তো। যদি শুধু শুধু রেগে যান তবে তা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কি? আর যদি তা না হয় তবে অবশ্যই কোনো বিষয় আপনার পছন্দ হয়নি। ভুল তো হতেই পারে। এবার লক্ষ্য করুণ তো পছন্দ না হওয়া বিষয়টা কিভাবে পছন্দের করে নেয়া যায়। রেগে গিয়ে নয় নিশ্চয়ই!!

৩। বুঝিয়ে দিনঃ
কেউ জুতা পরে আপনার ঘরে ঢুকলে আপনার ভীষণ রাগ হয়। মনে হয় সাথে সাথে তাকে একটা চড় মারতে। তবে তা না করে কখনো বুঝিয়ে বলেছেন কি? দেখুন না সে কি বলে। হয়তো সে খালি পায়ে হাঁটতে অভ্যস্ত নয়। আপনি চাইলে বিষয়টি দরজায় লিখে রাখতে পারেন। আবার বিকল্প হিসেবে সবার জন্য একটি পরিষ্কার স্যান্ডেলের ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে এসব না করে আপনি রেগে গিয়ে আপনার ঘর নোংরা হতেও দেখতে পারেন!

৪। চিন্তা করুনঃ
আপনি অতি দ্রুত রেগে যান এবং রেগে গিয়ে হাতে যা থাকে ছুড়ে ফেলে দেন। সেটা আপনার মুঠোফোনও হতে পারে আবার হতে পারে কাচের গ্লাস। তবে ছুড়ে ফেলার আগে একবার চিন্তা করে দেখুন তো। আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন সেই সময় চিন্তা করা যায় না। তবে আপনার চিন্তা ভুল। আমাদের মস্তিস্ক চিন্তা ছাড়া থাকে না। আপনি হাত থেকে ছুড়ে ফেলার আগেও আপনার মস্তিস্ক তা নিয়ে চিন্তা করে দেখে যে তা ছুড়ে ফেলা যাবে কিনা! আরও নিশ্চিত হবার জন্য বলতে পারি কাউকে দেখবেন না রেগে গিয়ে পানিতে ঝাপ দিতে কিংবা দলিল আগুনে ফেলে দিতে! তাই রাগান্বিত হলেও আপনার সব সময় সক্রিয় মস্তিস্ক দিয়ে চিন্তা করুণ!

৫। সমাধান করুনঃ

আপনার রাগ হবার যদি কারণ থাকে তবে তার সমাধানও থাকবে। তাই সমাধান খুঁজে বের করে রাগ পরিহার করুন। আপনি বা আমি কেউই বেশি দিন এই পৃথিবীতে নেই। তাই ক্ষণিকের এই যাত্রায় রেগে গিয়ে সময় নষ্ট করে লাভ কি বলুন?? তাই চেষ্টা করবেন দ্রুত এর সমাধান করতে।

৬। মনোযোগ সরিয়ে নিনঃ

যে সব বিষয় নিয়ে আপনি রেগে যান সেই সব বিষয় থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিন। যেমন কেউ চিৎকার করছে বলে আপনার ভীষণ রাগ হচ্ছে, তাহলে আপনি চাইলেই স্থানটি ত্যাগ করে রাগ কমাতে পারেন। আবার কারো কোনো কাজ আপনার পছন্দ হচ্ছে না কিংবা কারো কথায় আপনি বিরক্ত তথা রেগে যাচ্ছেন, তবে সেই ক্ষেত্রে অন্য কাজে মনোযোগ দিন। এমন কিছু করুন যা আপনার ভালো লাগে। প্রিয়জনের সাথে কথা বলতে পারেন কিংবা চলচ্চিত্র দেখতে পারেন। দেখবেন রাগ কমে যাবে।

৭। ক্ষমা করুনঃ
মানুষ যেমনি মরণশীল তেমনি ভুলশীল। যদিও এরকম কোনো শব্দ ডিকশনারি’তে নেই তবুও মানুষ ভুল করতে ভোলে না। মানুষ সব সময়ই কিছু না কিছু ভুল করে। তাই বলে সব ভুলের জন্য রেগে যাওয়া মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ না। রেগে না গিয়ে তাকে ক্ষমা করে দিন। দেখবেন তৎক্ষণাৎ না হলেও পরবর্তীতে আপনার ভালো লাগবে। আর তাছাড়া রেগে গিয়ে কি আপনি তার ভুল শুধরে দিতে পারবেন? ধরুন একজন রিক্সাচালক আপনার গাড়িতে স্ক্রাচ ফেলে দিয়েছে। এবার আপনি তার সাথে রাগ করলেই কি তা ঠিক হবে? তা না করে আপনি যদি তাকে ক্ষমা করে দেন তাহলে পরবর্তীতে সে সতর্ক থাকবে।

৮। পরিস্থিতিঃ
সবার পরিস্থিতি সব সময় এক রকম হয় না। আজ আপনি যার উপর রেগে যাচ্ছেন কাল হয়তো তার জায়গায় আপনি থাকবেন! তাই রাগ উঠলে পরিস্থিতিটা একটু বুঝে নিন। কেউ আপনাকে ইচ্ছে করে রাগিয়ে তুলবে না। তাই পরিস্থিতির কথা ভেবে দেখুন। দেখবেন আপনার রাগ কমে যাবে এবং আপনি বিষয়টা দ্রুত বুঝে যাবেন।

৯। স্থির থাকুনঃ

আমরা যখন স্থির থাকতে পারি না তখন যেকোনো বিষয় নিয়েই আমরা রেগে যাই। তবে রাগ ওঠার জন্য তখন পারিপার্শ্বিক অবস্থার চেয়ে বেশি দায়ি থাকি আমরা। কেননা মানসিক অস্থিরতার কারণে সব কিছু আমাদের ভুল মনে হয়। যার ফলে আমরা রেগে যাই। তাই আমাদের উচিত স্থির থাকা। আপনি যদি মানসিকভাবে স্থির থাকেন তাহলে মানসিক ভারসাম্যের বিপর্যয় ঘটবে না। ফলে আপনার রাগ কমে যাবে।

১০। যোগ-ব্যায়াম করুনঃ

যদি রাগ আপনার নিত্য সাথী হয় এবং যদি আপনি কিছুতেই তা কমিয়ে আনতে না পারেন তাহলে যোগ-ব্যায়াম করুন। দেখবেন কিছু দিনের মধ্যেই আপনার আচরণে পরিবর্তন আসবে এবং আপনি রাগ কমাতে পারবেন। ষড়রিপুর একটি এই রাগ এর কারণে আপনি সবার থেকে দূরে সরে যেতে পারেন। আবার এই একই কারণে অনেকেই আপনাকে পছন্দ করবে না। পরে যখন আপনি বুঝতে পারবেন তখন হয়তো আর সময় থাকবে না। তাই এখনই চেষ্টা করুন রাগ কমাতে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৪৫
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×