বেশ কিছুদিন ধরে ব্লগে আসা হয়না। লগইন তো দূরের কথা। ব্লগে অনেক কিছুই ঘটে যায় খুব একটা কানেও আসেনা। আসার কথাও না। তবে জরুরী কিছু হলে দুইএকজন ব্লগার আমাকে জানানোর তাগিদ অনুভব করেন। এর আগে আমাকে নিয়ে একটা ব্লগ লিখেছিলেন ব্লগার । আমি ব্লগে আসিনা দেখে শূন্যতা অনুভব করেছিলেন। আমাকে খুঁজেছিলেন, পোস্ট দিয়েছিলেন। সেই পোস্ট আমার পড়াই হতো না যদি না দুই ব্লগার আমাকে ম্যাসেজ করে না জানাতেন।
আজ ব্লগে ঢুকে দেখি ১ যুগ ১ চলছে এই ব্লগে।সামহোয়্যার ইন ব্লগে। আসলে আমার তো একটাই ব্লগ। আমার প্রেমিকাও ছিল একটা। ঐ যে ৭ এলিফ্যান্টরোডের মেয়েটা। ভালোবাসার জিনিসগুলো আমার একটাই থাকে। যে যায় হোক, আমার ১২ বছর কাটিয়ে দেয়ার ব্যাপারটা আমি জানতামই না যদি না দুইএকজন ব্লগার আমাকে না জানাতেন। তাঁদেরকে ধন্যবাদ।
এক সময় ভাবতাম ১২ বছর উপলক্ষ্যে খুব দারুণ একটা দেব। ১২ বছরের ভালো লাগা, ভালোবাসা, খারাপ লাগা, অভিমান সবকিছুই লিখে ফেলবো ব্লগে। আসলে তেমন কিছুই লেখা হচ্ছে না।
একসময় অফিসের কাজের ফাঁকে সময় বের করতাম ব্লগিং করার জন্য। ব্যাপারটা খুব ঝামেলা পূর্ণ ছিলো। হাবিজাবি অন্য সাইট সবার খোলা থাকলে সমস্যা ছিলো না কিন্তু ব্লগ পড়তে গেলেই রাজ্যের সমস্যা। আমি সেই সমস্যার মধ্যেই ব্লগিং করেছি। শুনেছিলাম ব্লগার রাজীব নুর চাকুরী হারিয়েছিলেন ব্লগিং করতে গিয়ে। যদিও তেমন তো জটিলতার মধ্যে আমাকে পড়তে হয়নি।
কিছুদিন আগেও অফিসে তেমন কাজের চাপ ছিলো না কিন্তু কেন জানি ব্লগে আসা হয়নি। কি হচ্ছে না হচ্ছে কিছুই জানা হয়নি। ইচ্ছেটা হঠাৎই কমে গেল কেন বুঝলাম । নাকি আমিই দমে গেলাম।
নতুন করে লেখার কিছু মাথায় আসে না। সমসাময়িক, বৈশ্বিক, বৈজ্ঞানিক, ধর্মীয়, অধর্মীয় , রাজনৈতিক কোন কিছুই নিয়েই আমার লেখার ক্ষমতা হয়ে ওঠেনি কোনদিন। আমার লেখার আর জানার গন্ডী ছিল একেবারে ছোট। কবিতা, স্মৃতিচারণ আর আমার শৈশবের রাশিয়ান বই গুলোই ছিলো আমার সীমারেখা। এর বাইরে যাওয়া হয়নি একেবারেই। এই ভেতরেই আমি বিচরণ করেছি। এ ছোট পরিসরে বিচরণ করেও টিকে ছিলাম শুধুমাত্র ভালোবাসার জোরো, আসলে এই ব্লগটাকে আমি ভীষণ ভালোবাসি।
ফেসবুকে আমার নিক ছিল স্বপ্নবাজ সৌরভ। স্বপ্নবাজ নিয়ে আলোচনা করতাম বলে বন্ধুরা ভালোবেসে স্বপ্নবাজ নামটা দিয়েছিল। সেই স্বপ্নগুলো রাতেরবেলা আমাকে মোটেও ঘুমাতে দিতো না। বহুদিন যাবৎ রাতে ঘুম আসেনা সেটা দুঃস্বপ্নের কারণে। আমি সেই দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্ত হতে পারছি না মোটেও।
আমি বেশ ভালোই ক্রিকেট খেলতাম। ইন্টার স্কুল টুর্নামেন্টের জন্য নাম দিলাম। নিয়মিত প্র্যাকটিসে যেতাম। কারণ প্র্যাকটিসে ভালো না করতে পারলে বাছাইয়ে বাদ পড়ে যেতে হবে। স্কুলের অন্য ছেলেরা বলতো হেডস্যারের ছেলের আবার প্র্যাকটিস করার কি দরকার, এমনিতেই চান্স পাবে। এমন অনেক কথা শোনার পর প্র্যাকটিস বাদ দিলাম। ঠিক করলাম নাম দিবো না। আব্বা একদিন শুনে বললেন, পৃথিবীতে হেরে যাওয়া সবচেয়ে সহজ কাজ।
আমি সেই টুর্নামেন্টে বেস্ট প্লেয়ার হয়েছিলাম। টিম চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। মাঝে মাঝে খুব কষ্ট হয়। যখন ভাবি স্কুল লাইফের পর আব্বার সাথে খুব একটা সময় কাটানো হয়নি কিংবা শৈশবই ভালো ছিল। আর দুই বছর ধরে তো আব্বা ঠিকমত কথাই বলতে পারেন না।
১২ বছরের ব্লগটা আব্বার জন্য। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি সময়কালে আব্বা ঠিকই ব্লগিং করতেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৮:০০