somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

অন্যরকম পৃথিবী নতুন করে জাগুক

২৬ শে মার্চ, ২০২০ ভোর ৫:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবী বদলে যাচ্ছে । গত বছর প্রচুর বন্যা হয়েছে। আগুনে পুড়েছে পৃথিবী। বনের প্রাণী পুড়ে গেছে। কিছু মানুষের ঘর বাড়ি নষ্ট হয়েছে তাতে বিশাল অংশ মানুষের বিশেষ ক্ষতি হয়নি। কিছু দূর্যোগ পৃথিবী ব্যাপী হবে এটা স্বাভাবিক।
মানুষ বড় আনন্দে নিমগ্ন ছিল। আজকের পৃথিবীর মানুষের কাছে আনন্দটা মূখ্য। খুব বেশি বানিজ্য আধুনিক ফ্যাশন নির্ভর সমাজ। ভোগ্য পণ্য ব্যাণ্ড নেইম, একটার চেয়ে আরেকটার চাহিদা বিজ্ঞাপণের জৌলুসে আক্রান্ত মানুষ, বাস্তবতার প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস কেনায় ব্যস্ত। উৎপাদন হচ্ছে অজস্র পণ্য যার বেশির ভাগই শৌখিন বস্তু। হেসে খেলে ভোগ বিলাসের জীবন বড় পছন্দের।
সেই মানুষদের কাছে এখন প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে জীবন রক্ষার মাস্ক, গ্লাবস, প্রোটেক্টেড, গাউন। ভ্যান্টিলেটর, ওষুধ, সেনেটাইজার, প্রতিষেধক।
এ্যালকোহল এখন জরুরী পরিচ্ছন্নতার কাজে। সেটা বানাতে পারে ঘরে ঘরে ইউরোপ আমেরিকার মানুষ আর আমাদের দেশে হরিজন।
ব্রোয়ারি গুলো আরেক ধাপ এগিয়ে পরিচ্ছন্নতার এ্যালকোহল বানাচ্ছে এমূহুর্তে। এ্যালকোহল থেকে তৈরি করে সাপ্লাই দি্চ্ছে ম্যাডিকেল টিমকে হ্যাণ্ড সেনিটাইজার। কি দুনিয়া আইল রে। মাতাল আনন্দ নয় প্রয়োজন প্রচুর এ্যালকোহল বেঁচে থাকার জন্য।
ফ্যাশন জগতে যেখানে বিলিয়ন ডলারে ফ্যাশন অনুষ্ঠান হয়। তারা তেমন কেউ এগিয়ে আসেননি মাস্ক, সঠিক সুরক্ষিত গাউন বানানোর জন্য।
মুখে মাস্ক দিয়ে চলাটা এশিয়ানদের মধ্যে খুব প্রচলিত অনেক দিন থেকে। কিন্তু এখন সে প্রচলন সারা পৃথিবী ব্যাপী মানুষের প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে।
অনেকেই খুব গালমন্দ করছেন প্রায় সব দেশের সরকারকে এখনো কেন চিকিৎসার সার্বিক জিনিস পত্র নাই। যে জিনিস গুলো শুধু বিশেষ প্রয়োজনে ডাক্তার নার্সরা পরতেন, বিশেষ টিমের মানুষরা পরতেন তা যে সারা পৃথিবীর মানুষের প্রয়োজন হবে সেটা কেউ কি আগে থেকে ভেবেছেন। ২০০৩ এ ব্যাবহারের পর রেখে দেয়া অব্যবহৃত জিনিসগুলো অনেক ক্লিনিক বের করছেন এখন।
হাসপাতালে রোগীর সংকুলান হবে না অনেক বেশি হাসপাতাল ডাক্তার নার্স প্রয়োজন, ধর্ম উপাসনার চেয়ে তা ক'জন ভেবেছেন আগে। প্রতিটি রাস্তায়, মোড়ে একটি করে হাসপাতাল না গড়ে উপাশনালয় গড়ে তোলা হয়েছে কি সাবধানতার বসে। মরে যাওয়ার পরের হিসাব নিকাশ নিয়ে ব্যস্ত ছিল এক ধরনের মানুষ। আরেক ধরনের মানুষ জীবন উপভোগে অর্থ আর বিলাসী জীবনের খুঁজে।
অথচ মরে যাওয়ার আগে এখন সময়টা হঠাৎ করে বদলে গেলো। আতংক আতংক। পরকালের সুখের চেয়ে এখন বাঁচার তাগদা মন জুড়ে।
হাজার হাজার কোটি, মিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ধর্মের জন্য ব্যয় হয় অথচ ব্যয় হয় না বেঁচে থাকার রোগ মোকাবেলা করার গবেষণার জন্য। অনেক কাংখিত মেধা অকালে ঝরে যায় সুযোগ না পেয়ে। অনেক ব্রিলিয়ান্ট মেধাকে ধর্মের নামে থামিয়ে দেওয়া হয় কাজ করতে না দিয়ে।
হাজার কোটি টাকার পন্য, দোকানে বন্ধ হয়ে পরে আছে এই মূহুর্তে বিশ্ব জুড়ে। কেউ কিনছে না। মানুষের প্রয়োজন খাদ্য এবং ওষুধ। । হন্যে হয়ে খুঁজছে মানুষ মাস্ক , গ্লাবস জীবানু থেকে নিজেকে ঢেকে বাঁচার জন্য। শত শত রকমের মেকাপ, পারফিউম, কাপড়, জুতা, গহনা আসবাব কিছুই কাজে আসছে না এ মূহুর্তে। সব ধর্মের ধর্মশালাগুলো বন্ধ। অথচ হামলে পরেছে মানুষ হাসপাতালে।
অদ্ভুত এই সময়টা হয় তো সময়কে অতিক্রম করার উন্মাদ হয়ে যাওয়া, খুব জিতে ফেলা ভাবনায় এগিয়ে যাওয়া মানুষদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল। প্রকৃতির নিজস্ব হিসাবে প্রকৃতি মাঝে মাঝেই এমন মহামারী নিয়ে আসে মানুষের জন্য। মানুষ কত অসহায় বিশাল প্রকৃতির নিয়মের কাছে তাই যেন বুঝিয়ে দেয়। সব আবিস্কারের পরও আরো রয়ে গেছে যার জন্য ব্যয় করতে হবে অনেক অর্থ অনেক সময়।
মানুষ যেন এই শিক্ষা নেয় এখন থেকে। পরকালের সুখের জন্য অর্থ ব্যয় না করে বর্তমানের গবেষণায় যারা নিয়োজিত আছে তাদের জন্য সে অর্থ দান করে। আগামী প্রজন্মের জন্য পৃথিবীটাকে সুন্দর রাখার জন্য।
আধুনিক যন্ত্রপাতি যা মানুষের জীবনকে সহযোগীতা করে এগিয়ে আসতে হবে সেই সব কাজে উৎসাহ নিয়ে। ধনীরা বেঁচে থাকলে এই পৃথিবীর তেমন লাভ হবে না। তারা অচিরেই মরে যাবে নিজেদের অপরাগ, অকমণ্য অবস্থার জন্য। কিন্তু কর্মঠো খেটে খাওয়া মানুষ বাঁচলে পৃথিবীতে আবার আবাদ হবে মানুষের। যারা নিজেদের গতর খাটিয়ে কাজ করে সচল রাখে পৃথিবীর বিলাসী মানুষদের জীবন। অর্থনৈতিক চলমান ধারা।
কানাডার বিশাল জমির মালিকরা অনেকে নিরাশ হয়ে গেছেন এবার । সবজী যা এখন কানাডায় উৎপাদন হয় তার জন্য প্রতি বছর প্রায় পঞ্চাশ হাজার শ্রমিক আসেন গরীব দেশগুলো থেকে। তারা খাটেন অল্প অর্থে। এবছর এখন সময় ফসল উৎপাদনের যদি তারা না আসতে পারেন তবে জমি নিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকতে হবে মালিকদের।
অনেক কাজ অনেকে পারেন না ঠিকঠাক ভাবে করতে। আজকাল আবার অনেক কাজ মেশিনে করে ফেলা যায়।
আমি খুব আনন্দিত কিছু জিনিস এই মূহুর্তে ব্যবহার করতে পারছি যা জীবনটাকে সহজ করে দিয়েছে। আধুনিক চিন্তাধারা সেই সব আবিস্কারকদের ধন্যবাদ।
যদি ইন্টারনেট, কম্পিউটার মোবাইল না থাকত কত পিছনে পরে থাকতে হতো আমাদের। আমরা অনেকে ঘরে বসে কাজ করতে পারছি। পারছি যোগাযোগ রাখতে পৃথিবীর সাথে।
অনলাইনে ওর্ডার করে ঘরে বসে পেয়ে যাচ্ছি বাজার সদাই। টাচ না করে পাওয়া যায় পানি, সাবান টয়লেট ফ্ল্যাস, দরজা খোলা। বাতি জ্বালানো। ময়লার পিছনে দৌঁড়াতে হচ্ছে না রোবট পরিস্কার করে দিচ্ছে ঘর। ফোন স্পর্শ না করেও কমান্ড দিয়ে কাজ করা যায়। ক্যামেরার সাথে কথা বললে ছবি তুলে দেয়। এমন কি টাকা পয়সা হাতে না ধরে চলে যাচ্ছে কত জীবন। নিজের কার্ড নিজে ধরে মেশিনে না ছূঁইয়ে ট্যাপ করেই কেমন পরিশোধ করা যায় ব্যয়। সুবিধা গুলি খুবই কার্যকরি।
এত আধুনিক সুযোগ সুবিধা ব্যবহার করতে পারব ভাবতেই পারিনি কখনো। অথচ এই জীবনে সে সব দেখার সুযোগ হয়ে গেল। যে জীবন শুরু হয়েছিল হারিকেনের আলোয়। কুপির আলোয় অন্ধকার দূর হওয়া দিয়ে। হাত পাখার বাতাসে শীতল হওয়া। খোলা প্রকৃতির সাথে মোহময় থাকা। সে সময়ে খুব বেশি চাওয়া পাওয়ার ছিল না। তাই হয় তো এ সময়েও অনেক ভীড় যাবতিয় জিনিসের উপচে পরা আবেদন কখনোই টানে না আমাকে। সহজ প্রয়োজনেই চলে যায় আমার।
মনে পরছে বাবা মায়ের কাছে শুনেছিলাম গ্রামের পর গ্রাম শহর মানুষ শূন্য হয়ে যাচ্ছে । মহামারী কলেরা, বসন্ত, প্ল্যাগের ঘটনাগুলি গল্পের মতনই মনে হতো। মা বলতেন একজন কে কবর দিয়ে এসে আরেকজনের মৃত্ দেহ পেতো ঘরে মানুষ। কান্নার রোল থামত না। কবর দেয়ার মানুষ ছিল না। আজ ইতালী, চীনের দিকে চেয়ে বুঝতে পারি গল্প নয় কতটা সত্য ছিল সময়। এখন আতংক গ্রস্ত সব মানুষ।
চীন থেকেই সেই প্রাচীন সময়েও ইতালীতে আসে প্লেগ। এক সময় ইতালীর লোকজন আবিস্কার করে জাহাজের মাঝে ইঁঁদুর আর ইঁদুর চলে আসছে প্লেগ নিয়ে দেশে। তাই নিয়ম করা হয় জাহাজ চল্লিশ দিন বন্দর থেকে দূরে থাকবে। এই চল্লিশ কে কোয়ারান্তা বলে ইতালিতে সেই কোয়ান্তাই এখন কোয়ারান্টাইন । চল্লিশ দিনের জায়গায় চৌদ্দদিন করা হয়েছে।
পৃথিবীর এই রোগ ভালো হয়ে যাক। হাসুক মানুষ আবার আনন্দে। শিখে রাখুক কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ব্যাস্ত হোক আরো বেশি বিজ্ঞান চর্চায় সবার প্রয়োজনে। নতুন ভাবে নতুন করে ভাবুক মানুষ জীবনের পথে চলার কথা।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৫৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×