ভবিষ্যতে শিশুদের পাঠ্যবইয়ের গল্প নেওয়া হবে ফেসবুক কিংবা ব্লগ থেকে। এখানে কেবল প্রেমের গল্প কিংবা কবিতা ভাসে। এখানের আকাশে বাতাসে প্রেমের গন্ধ।
ভবিষ্যতে শিশুরা আর আমাদের ছোটো নদী পড়বে না, তারা পড়বে "বালিকা তুমি রৌদ্রের খড়তাপে ঝরে যাওয়া এক ফুল!" তারা প্রেমের গল্প পড়বে। চশমার উপর দিয়ে দেখা ভয়ংকর স্যারের হাতে বেত কিংবা স্কেল থাকবে না, থাকবে ভালোবাসায় সিক্ত ফুল।
স্যার বলবেন তোমরা সবাই জোরে জোরে আমার সাথে বলো, " আমি তোমায় ভালোবাসতে চেয়েছিলাম বেণুরেখা, তোমার ছলনা চাইনি! " সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো হা হয়ে শুনবে। আমরা যেমন শুনতাম হাজার বছর ধরে কিংবা পদ্মানদীর মাঝি।
তারা জানবে পৃথিবী কেবল প্রেমময়। পৃথিবীতে যুদ্ধ বলতে কিছু নেই। তারা জানবে পৃথিবী কেবল হিমেলের সাথে রিমঝিমের বিয়ের মাধ্যমেই শেষ হয় অথবা নীলার সাথে শুভ্রের বিচ্ছেদের মাধ্যমে। এখানে কোনো সমস্যা নেই, নেই কোনো অশান্তি। এখানে আকাশ থেকে বৃষ্টি ঝরে কৃষকের হাসির জন্য না। এখানে বৃষ্টি ঝরে প্রেমিকার ভুবন ভোলানো হাসির জন্য।
এ শিশুদের জগত হবে অন্যরকম প্রেমময়। রবীন্দ্রনাথের প্রেমের উপন্যাস আর পুনরায় অনূদিত হবে না। জং ধরবে শরৎচন্দ্রের "দেবদাসে।" তারা আর পয়সা খরচ করে এসব পড়বে না। ফেসবুকে কিংবা ব্লগে এমন ঢের উপন্যাস পড়ে আছে।
জীবনানন্দের "নকশী কাঁথার মাঠ" কবিতা ধোঁয়াটে হবে কবিদের প্রেমের কাব্যে। শিশুরা জানবে পৃথিবী প্রেম দিয়ে শুরু হয়, শেষ হয় প্রেম দিয়ে।
আমাদের সন্তানরা প্রকৃতি উপভোগ করবে প্রেমিকার চোখ দিয়ে। তারা সেই প্রেমের গন্ডি পেরিয়ে আর জীবন উপভোগ করতে পারবে না।
হয়ত তারা একদিন হাসবে যখন তারা শুনবে;
" আমরা একদিন প্রেমের উপন্যাস মা-বাবা চোখের আড়ালে পড়তাম "
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৪৫