somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাজল রেখা

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এক
বিভা গভীর মনযোগ দিয়ে পড়ছিল।আফরোজা কখন পাশে এসে বসেছে খেয়াল করেনি।আফরোজা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে।বিভা পড়েই চলেছে।
-কি,বাড়ি যাবিনা?
আফরোজা জানতে চায়।
বিভা ট্যাব থেকে চোখ ফেরায়।
-গাড়ি আসেনি এখনও।
বিভা জানায়।
-আমি নামিয়ে দেবো।আমার সাথে চল।
-ড্রাইভার ফোন দিয়েছিল।আর কিছুক্ষণ লাগবে।
-কি পড়ছিস এতো মনযোগ দিয়ে?
-কাজল রেখা।
-ধুস এখন এগুলি কেউ পড়ে।ও তো বাচ্চাদের জন্যে।রুপকথার গল্প।
বিভা ট্যাব ব্যাগের মধ্যে ভরে রাখে।যখনই সময় পায় তখনই বিভা কিছুনা কিছু পড়ে।আফরোজা এত পড়ুয়া নয়।তারা দুইজন অত্যন্ত ঘনিষ্ট বান্ধবী।বিভার আব্বা একটি প্রাইভেট ব্যংকের ম্যানেজার।আর আফরোজার আব্বা শিল্পপতি।ওরা শান্তিনগর থাকে।দু’জনেই এইচ এস সি ফাস্ট ইয়ারে।

আধাঘন্টা কেটে যায়।বিভার গাড়ি আসেনা।বিভা বিরক্ত হয়ে ফোন দেয়।ড্রাইভারের সাথে কথা শেষ করে আফরোজাকে বলে আজ ওর সাথেই যাবে।
-কি সমস্যা হয়েছে গাড়িতে?
-এক মটর সাইকেল আরোহীকে ধাক্কা মেরে দিয়েছে।
আফরোজার প্রশ্নের জবাবে বিভা জানায়।
-আফা,পোলাপান মটর সাইকেল চালায়নাতো,যেন পঙ্খীরাজ চালায়।দুর্ঘটনা ঘটবেনা কেন?
-তুমি গাড়ি চালাচ্ছো গাড়ি চালাও।তোমারে এর মধ্যে কথা বলতে কে বলেছে?
আফরোজা ওর ড্রাইভারকে ধমকে দেয়।
বাড়ির কাছাকাছি এলে আফরোজা বিভাকে অনুরোধ করে বাসায় যেতে।বিভা রাজি হয়ে যায়।ঘরের দরজা খুলে দেয় আফরোজার আম্মা।
-বিভা মামনি কেমন আছো?তোমার আব্বা-আম্মা ভাল?
আফরোজার আম্মা বলেন।
-সবাই ভাল আছে।আপনি ভাল আছেন।
আফরোজার আম্মার কথার উত্তরে বিভা জানায়।
-আফরোজা তুই বিভাকে নিয়ে তোর ঘরে যা।গেষ্ট রুমে তোর জলি খালাম্মারা এসেছেন।
আফরোজা বিভাকে নিয়ে ওর ঘরে যায়।যাওয়ার সময় জলিকে সালাম দেয়।আফরোজা খেয়াল করে,আজ দীপ্ত ভাইয়াও এসেছে।

বিভার বাড়ি ফিরতে বেশ দেরী হয়।অবশ্য ফোনে আম্মাকে জানিয়ে রেখেছিল।বাসায় ফিরে দেখে আব্বুও ফিরে এসেছে।
-আফরোজাদের বাড়িতে ছিলে আম্মু?
রুবেল সাহেব মেয়েকে প্রশ্ন করেন।
-হ্যাঁ আব্বু।এই ড্রাইভার প্রায়ই কোন না কোন সমস্যা তৈরী করছে।
বিভা জানায়।
-আম্মু ভাল ড্রাইভার পাচ্ছিনা।তবে খোঁজ অব্যাহত রেখেছি।

রাতে শোবার আগে ডায়েরী নিয়ে বসে।কোথায় থেকে শুরু করবে একটু ভাবে।তারপর সুন্দর অক্ষরে লেখা শুরু করে।কেন জানিনা দীপ্ত যখন পাশে এসে দাঁড়ালো তখন অচেনা এক আনন্দ মনে চেপে বসলো।যদিও আমার বাহিরের চিরাচরিত শক্ত খোলস ঠিক মতই ছিল।মন চেয়েছিল বিভা খোলস ভেঙ্গে বেরিয়ে আসুক।বিভা সেই খোলস ভাঙ্গতে ব্যর্থ হয়।দীপ্ত খুব চটপটে।আর যেটি ভাল লেগেছ বিভার তা হলো দীপ্তর দুই চোখ।দীপ্ত যখন তাকায় মনে হয় ওর চোখে প্রশংসা ঝরে পড়ছে বিভার শরীরের প্রতিটি অংশের জন্যে।কাজল লতা তুমি যখন সূঁচ কুমারের শরীর হতে একটি একটি করে সূঁচ তুলছিলে তখন তুমি নিশ্চয়ই কুমারের শরীর স্পর্শ করেছো।তখন তোমার কুমারী শরীর কি ঘুমিয়ে ছিল? তুমি বলবেনা জানি তবে আজ আমার শরীর ততবার শিহরিত হয়েছে যতবার দীপ্ত কাছে এসেছে।

আফরোজা আর বিভা থারটি থ্রিতে বসে আছে।ওরা অপেক্ষা করছে মিলির জন্যে।মিলি আজ খাওয়াবে।জানালা দিয়ে বিভা বেইলী রোডের মানুষ দেখে।বেইলী রোডের মানুষগুলিকে বিভার কাছে কেমন অন্যরকম লাগে।ঠিক যেন ডেগী মুরগী।তেল চকচকে চেহারা।রাস্তার যে চা বিক্রেতা,ওর শরীর বেয়েও তেল চুঁইয়ে পড়ে।আশ্চর্য!
-কি ভাবছিস বিভা?
-ধনেশ্বরের কথা?
-সে আবার কি?
আফরোজা আশ্চর্য হয়।
-কাজলরেখার ধনবান পিতা।ঠিক তোর আব্বার মত।
বিভা হাসতে হাসতে উত্তর দেয়।
ঠিক এই সময় মিলি আসে।ওদের দেখে হই হই করে উঠে।
-তোরা কতক্ষণ?
-দাওয়াত দিয়ে বসিয়ে রেখেছিস।এমন দাওয়াত না দিলেই পারতিস?
ক্ষোভের সাথে আফরোজা বলে।
-রাগ করিসনা।চল্লিশা খেতে এলে একটু অপেক্ষা করতেই হয়।
মিলি গরগর করে বলে।
-এইটা কত নম্বর?
বিভা প্রশ্ন করে।
-সাত নম্বর ব্রেকআপ।
মিলি বলে।
-সাত নম্বর!আর কতগুলি প্রেমে পড়তে পাড়িস বলে তোর মনে হয়?
আফরোজা গোলগোল চোখ করে বলে।
-ইচ্ছাতো আছে অনেক।
তিনজনই হো হো করে হেসে উঠে।
বিভার চোখের কোণায় পরিচিত মুখ ধরা পড়ে।আড়চোখে তাকিয়ে দেখে দীপ্ত একজনকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে ঢুকছে।আবার সেই অচেনা আনন্দ চেপে বসে বিভার মনে। বেরুবার সময় আফরোজা দীপ্তকে দেখতে পায়।
-দীপ্ত ভাইয়া?
দীপ্ত এগিয়ে আসে।
-তোরা?
-ব্রেকআপ সেলিব্রেশন করতে এসেছিলাম।
আফরোজা বলে।
-ব্রেকআপ সেলিব্রেশন?কার?
দীপ্তর প্রশ্ন শুনে তিনজনেই এক সাথে হেসে উঠে।তারপর লিফটে গিয়ে উঠে।দীপ্ত বোকার মত চেয়ে থাকে।

দুই
রুবেল সাহেবের একটিই মেয়ে।দীর্ঘ সাধনার পর কন্যা সন্তানের জনক হয়েছেন উনি। অত্যন্ত সুখী একজন মানুষ রুবেল সাহেব।সম্প্রতি উনার বদলীর আদেশ হয়েছে।উনি ঠিক করেছেন আজ খাওয়ার টেবিলে মা-মেয়েকে কথাটি বলবেন।তাই গতকাল উনি প্রচুর বাজার করেছেন।মা-মেয়ের পচ্ছন্দের সব খাবার কিনেছেন।বিভা বড় গলদা চিংড়ি পছন্দ করে। দুই কেজি গলদা চিংড়ী কিনেছেন।লাবু অর্থাৎ বিভার মা গরুর জিহ্বা আর মগজ পছন্দ করেন।উনি তাও কিনেছেন।রাতে খাবারের শেষ পর্যায়ে রুবেল সাহেব কথাটি উথ্থাপন করেন।
-বিভা মা, রান্না কেমন হয়েছে?
রুবেল সাহেব প্রশ্ন করেন।
-ইয়াম্মী ইয়াম্মী আব্বু।
-তুমি কি বিশেষ কোন খবর আমাদের বলবে?
লাবু রুবেল সাহেবের দিকে চেয়ে প্রশ্ন করেন।বিভা অবাক চোখে আম্মুর দিকে চেয়ে থাকে।
-তোমার কি শাস্তিমূলক ট্রান্সফার হয়েছে এবার?
রুবেল সাহেব মাথা নেড়ে সম্মতি জানান।
-আমি তোমাকে বার বার বলেছি লোন সেংশানে সতর্ক হও।সতর্ক হও।তুমি কানে কথা নাওনি।
রুবেল সাহেব মনযোগ সহকারে খেয়ে যান।
-বিভা আম্মু তোমাকে আর কয়েকটি চিংড়িমাছ দেবো?
রুবেল সাহেব প্রশ্ন করেন।
-দাও আব্বু।তুমি কোথায় বদলী হয়েছো আব্বু?
-বগুড়ায়।
-ও আব্বু,আমরা মহাস্থানগড় দেখতে পাবো।
-যেমন মেয়ে তেমনি তার আব্বু।
রাগী স্বরে লাবু বলেন।রুবেল সাহেব মেয়েকে চোখ টিপ মারেন। বিভা মুচকি হাসে।

এক বছর পরের ঘটনা।রুবেল সাহেব খুব উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষা করছেন।মোবাইল ফোনটি টেবিলের উপর, উনার সামনে।এসি আঠারোতে দেওয়া রয়েছে।তবুও উনার অস্বস্তি লাগছে।ঠিক সময় ফোন বেজে উঠে।রুবেল সাহেব মোবাইল ধরেন।
-রুবেল সাহেব,কেমন আছেন?
-জ্বি স্যার ভাল।আপনি ভাল আছেন?
-আমি ভাল আছি।আপনার ব্রাঞ্চের পরিস্থিতি কেমন?
-ভাল স্যার।সবকিছু ঠিক ভাবে চলছে।
-আপনি কি নেশা করে আছেন?
-ছি: ছি: স্যার। এ কি কথা বলছেন? আমি সিগারেট পর্যন্ত খাইনা।
-আপনার কথায় মনে হয়েছে আপনি নেশা করে আছেন।
-কোন কথায় স্যার?
-এই যে বললেন, সবকিছু ঠিক ভাবে চলছে।অথচ আপনার চারটি বড় প্রজেক্টের চারটিই রেড।কোনটা থেকেই কিস্তি আসছেনা।আপনার নির্ধারিত চারটি ক্লায়ন্টিই বিদেশে পাড়ি দিয়েছে।আপনার শেয়ার কত পারসেন্ট ছিল এই ঋণে?
-স্যার এ কি কথা বলছেন?আমি ব্যাখ্যা দিয়েছি।কাগজ-পত্র সব ঠিক আছে।
-আচ্ছা ঠিক আছে।আপনি আগামীকাল ঢাকায় হেড অফিসে সকাল দশটায় আমার রুমে রিপোর্ট করবেন।
-ঠিক আছে স্যার।

বিভা আব্বার কাছে এসে বসে।আব্বাকে খুব বিধস্ত দেখাচ্ছে।সে কোন কথা বলেনা।বুঝতে পারে আব্বা খুব টেনশনে আছেন।
-মা কোচিং কেমন চলছে?রেজাল্ট কবে হবে?
-ভাল আব্বা।আগামী মাসে।
-তুমি কি দই খাবে?বগুড়া থেকে ভাল দই এনেছি।তোমার পছন্দের এশিয়ার দই। বের করে নিয়ে যাও।

রাত্রে খাবার টেবিলে সবাই চুপচাপ খেয়ে নিচ্ছিল।বিভার মনে হয় ঘরে একটা গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে।আম্মা খুব জোড়ে জোড়ে খাচ্ছেন।এর অর্থ উনি অত্যন্ত রেগে আছেন।
-তুমি শেয়ার বাজারে যে ইনভেস্ট করেছো তা কোথায় পেয়েছো?
বিভার আম্মা প্রশ্ন করেন।
-এই প্রশ্ন এতদিন কেন করোনি?
এই কথা বলে রুবেল সাহেব তার খাবারে পানি ঢেলে দিয়ে চলে যান।লাবুও উঠে পরেন।
-তুই খেয়ে তারপর ঘরে যাবি।
এই কথা বলে লাবু বেসিনে হাত ধুয়ে ঘরে চলে যান।বিভা খেতে খেতে আব্বা-আম্মার উত্তেজিত কথা-বার্তা শুনতে থাকে।আস্তে আস্তে ওর কাছে স্পষ্ট হতে থাকে ওর আব্বার সমস্যার ধরণ।সে নিঃস্পৃহভাবে খেয়েই চলে।

পরদিন সন্ধ্যায় কোচিং শেষে বাসায় ফিরে বিভা অবাক হয়।বাসা একদম থমথমে।কাজের মেয়েটি দরজা খুলে দেয়।
-লিসা আব্বা-আম্মা নেই?
-উনারা আছেন।
রাতে খাবার টেবিলে আব্বাকে বেশ ফুরফুরে মনে হয়।
-বিভা একটা ভাল খবর আছে।
-কি খবর আব্বা?
-আমি ঠিক করেছি আর দাসত্ব করবো না।তাই ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দিলাম।
আব্বার কথায় বিভা অবাক হয়।একবার আব্বার দিকে চায়।আর একবার আম্মার দিকে চায়।আম্মার মুখ থমথমে।বিভার মনে পড়ে বিগত কয়েকদিনের প্রথম আলোর হেড লাইন-শেয়ার বাজারে ব্যপক ধ্বস।মাঝ রাতে আব্বার ডাকে বিভার ঘুম ভাঙ্গে।হাসপাতালে নেবার পর লাবু মারা যায়।

বিভার ঘরে ওর বান্ধবীরা বসে আছে।আফরোজাদের সাথে দীপ্তও এসেছে।
-স্ট্রোক করেছিল?
আফরোজা জানতে চায়।
বিভা মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানায়।
শোকের দিনগুলির প্রতিদিনই আফরোজা এসেছে ওর বাসায়।সাথে দীপ্তকেও এনেছে।দীপ্ত এসে শুধু চুপচাপ বসে থাকতো।কোন কথা বলতোনা।

রেজাল্ট হবার পর রুবেল সাহেব খুব খুশি হন।বিভা ভাল রেজাল্ট করেছে।তবে আফরোজা অসম্ভব ভাল রেজাল্ট করেছে।বিভা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।আফরোজা মেডিক্যালে।মিটফোর্ড মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়।

তিন
-কতটা ভালোবাস আমাকে?
বিভা দীপ্তর আঙ্গুল নিয়ে খেলা করতে করতে বলে।
-তোমার সাথে যদি দোযখে যেতে হয় তবুও রাজি।
দীপ্ত সপ্রতিভ উত্তর দেয়।
-আমরা যে প্রেম করছি তা আফরোজাকে কেন জানাচ্ছিনা?
বিভা দীপ্তকে বলে।
-এত তাড়া কিসের।ওকে না হয় সারপ্রাইজ দেবো আমরা।
দীপ্ত বলে।
-আমারনা এখন অদ্ভুত শখ চেপেছে।
-কি শখ?
দীপ্ত জানতে চায়।
-পাস করে প্রাইভেট জব নেবো।আর কোম্পানীর শীর্ষ ব্যক্তি হব।
-সরকারি জব নয় কেন?
-বললামইতো শখ।
আফরোজা গাড়ি থেকে নামার সময় পাশ দিয়ে দীপ্তর গাড়ি চলে যেতে দেখে।গাড়িতে বিভাও বসে আছে।দু’জনে খুব ঘনিষ্টভাবেই বসে আছে।আফরোজার মাথায় প্রচন্ড ক্রোধ জমে।সে শপিং-এ এসেছিল।শপিং না করেই বাসায় ফিরে আসে।সারারাত আফরোজার নিদ্রাহীন কাটে।ভোরের দিকে সে কঠিন এক সিদ্ধান্তে পৌঁছায়।

ঠিক এক মাস পর এক ছুটির দিনে আফরোজা বিভার বাসায় যায়।বিভাদের বাসায় এসে আফরোজা বুঝতে পারে আসলে সে বিভাকে খুব ভালবাসে।
-আমার কথাতো তোর আর মনে নেই।তুই এখন হবু ডাক্তার।
বিভা উষ্মার সাথে আফরোজাকে বলে।
আফরোজা হেসে ফেলে।বিভাকে জড়িয়ে ধরে।
-কবে থেকে ডুবে ডুবে জল খাচ্ছে আমার প্রাণ প্রিয় বান্ধবী?
বিভার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে উঠে।
-দীপ্ত ভাই আর তুই যে প্রেম করছিস তা জানালি না কেন?
বিভা মাথা নীচু করে থাকে।
-এর জন্যে তোকে শাস্তি পেতে হবে।
-কি শাস্তি দিবি দে।
বিভা বলে।
-শাস্তি হলো আমি যে জেনেছি তা দীপ্ত ভাইকে বলবিনা।কথা দে।
বিভা কথা দেয়।আফরোজা অনেকক্ষণ গল্প করে বিভার সাথে।তারপর বাসায় চলে যায়।

বিভাদের বাড়ি হতে ফিরে এসে আফরোজা তার পরবর্তি কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে।আর সেইমত সে এক দুপুরে দীপ্তদের বাড়িতে যায়।কাজের মেয়ে দরজা খুলে দেয়।
-খালাম্মা আছেন?
-না আপা।
-বাসায় কে কে আছে?
-শুধু দীপ্ত ভাইয়া।
আফরোজা চুপিসারে দীপ্তর ঘরে ঢোকে।দীপ্ত ওর টেবিলে।কিছু লিখছিল।আফরোজা পিছন থেকে গিয়ে দীপ্তকে জড়িয়ে ধরে।
-তুই আর সেই ছোট আফরোজা নস।
দীপ্ত হাসতে হাসতে বলে।
-সেই ছোটবেলা হতে দেখছি আমি পিছনে এলেই তুমি টের পেয়ে যাও।
-তোর গায়ে মিষ্টি একটি গন্ধ আছে।আমার অতি পরিচিত।
আফরোজা দীপ্তর বিছানায় গিয়ে বসে।দীপ্ত ভাল ভাবে আফরোজাকে দেখে।কেমন যেন অপরিচিত লাগেছে আফরোজাকে।আফরোজা গল্প করতে করতে আচমকা বলে ওয়াস রুমে যাবে।
-কে নিষেধ করেছে যা।
কিছুক্ষণ পর ওয়াসরুমের দরজা সামাণ্য ফাঁক করে আফরোজা দীপ্তকে ডাক দেয়।
-এদিকে এসোতো।সমস্যায় পড়েছি।
-কি সমস্যা হলো তোর?
দীপ্ত ওয়াসরুমের দিকে এগিয়ে যায়।আফরোজা দরজা খুলে দীপ্তর সামনে দাঁড়ায়।দীপ্ত বিস্ময় নিয়ে আফরোজাকে দেখতে থাকে।আফরোজার শরীর সম্পূর্ণ বস্ত্রহীন।দীপ্ত তার রক্তে মাদলের শব্দ শুনতে পায়।


এক মাস পরের ঘটনা।বিভা জানালায় বসে আছে।গভীর রাত।ঢাকা শহরকে নীরবতা গ্রাস করেছে।বিভা জানালা দিয়ে রাতের আকাশ দেখছে।কিছুক্ষণ পর উঠে আসে।বিছানার সামনে দাঁড়ায়।বিছানায় একটি বিয়ের চিঠি।চিঠির উপরে আফরোজা আর দীপ্তর নাম ।মোবাইলে ম্যাসেজ আসে।বিভা ম্যাসেজ দেখে।ম্যাসেজে লিখা-আমার সাথে দোযখে যেতে রাজি আছো?বিভা মোবাইল রেখে দেয়।আবার জানালার কাছে যায়।রাতের আকাশে কত তারা। কত ক্ষুদ্র দেখতে।বাস্তবে নয়।জানালার পাশ হতে ফিরে আসে।মোবাইল তুলে নেয়।তারপর লেখে-রাজি।ম্যাসেজ পাঠিয়ে দেয়।কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি গোলাপ ফুলের ছবি ম্যাসেজ বক্সে পৌঁছায়।বিভা ডায়েরীতে লিখে চলে-আমি কাজলরেখা নই।আমি বিভা।আমি নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নেবো।

১৮/০৪/২০১৯
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১২:৪৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×