“আখির” অর্থ “শেষ” আর বুধবারকে “চাহার শোম্বা” বলা হয়। অর্থাৎ ছফর মাসের শেষ বুধবার হচ্ছে আখিরী চাহার শোম্বা। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে এ দিনটি মুসলিম উম্মাহর নিকট অত্যন্ত তাৎপর্যমন্ডিত। এ স্মরণীয় দিনটির সাথে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বরকতময় জীবনের বিশেষ স্মৃতি জড়িত। এ দিনেই তিনি জীবনের শেষ বারের মত সুস্থতা লাভ করেছিলেন। দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর ছফর মাসের শেষ বুধবার সকালে তিনি সাময়িক সুস্থতা লাভ করেন। অতঃপর গোছল করে খাওয়া-দাওয়া করেন। পরে মসজিদে নববী শরীফে তাশরীফ রাখেন। হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সুস্থ পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত হন। আল্লাহ পাক-এর দরবার শরীফে শুকরিয়া জ্ঞাপনার্থে সাধ্যমত গরীব-মিসকীনদের দান-সদকা করেন। সেক্ষেত্রে আফজানুন্ নাছ বা’দল আম্বিয়া হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পাঁচ হাজার দিনার, খলিফাতুল মুসলিমীন হযরত উসমান যুন্ নূরাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু দশ হাজার দিনার, হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিন হাজার দিনার এবং হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু একশত উট ও একশত ঘোড়া আল্লাহ পাক-এর রাস্তায় দান করেন। তবে উক্ত দিনের শেষ প্রান্তে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুনরায় অসুস্থ হন এবং আল্লাহ পাক-এর দীদারে চলে যান।
উল্লেখ্য যে, অনেকে আখিরী চাহার শোম্বা উদ্যাপন করাকে নাজায়িয ও বিদ্য়াত বলে আখ্যায়িত করে থাকে। যা সম্পূর্ণ অশুদ্ধ ও ভুল। বরং হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের অনুসরণে আখিরী চাহার শোম্বা উপলক্ষ্যে সাধ্যমত গরীব-মিসকীনদের দান-সদকা করা এবং হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি অধিক পরিমাণে দরূদ শরীফ পাঠ করা অত্যন্ত ফযীলত ও মর্যাদা লাভের কারণ। আল্লাহ পাক আমাদেরকে আখিরী চাহার শোম্বা যথাযথভাবে পালন করার তৌফিক দান করুন। (আমিন)