somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"বল, কোন পাড়ে ভিড়িবে তোমার উন্নতির তরী?"

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বিক উন্নতির বাস্তবিকতা বুক ফুলিয়ে প্রশংসা করার মত। সেদিক বিবেচনায় প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির আকাশ ছোঁয়া দাম আমাদের জন্য কোন ব্যাপার না। গোটা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দারিদ্র্যরেখার নিচে বাস করা মানুষের অনুপাতে বাংলাদেশ এখনও শীর্ষস্থানে। মোটাদাগে আমাদের দারিদ্র্যসীমার নিচের অনুপাত সংখ্যা ২১ দশমিক ৮ শতাংশ দেখালেও আমাদের আঞ্চলিক বৈষম্যতার কারণে কোন কোন জেলায় তা ৬০ শতাংশেরও বেশি। জাতীয় গড় ২৪ হলেও প্রচলিত দারিদ্র্যসীমার নিচেই কুড়িগ্রামে প্রায় ৭১ শতাংশ মানুষ বাস করে। অন্যদিক দিয়ে দেখলে বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশ গ্রামাঞ্চলে বাস করে। এই ৭৫ শতাংশের মধ্যে শতকরা ৬০ শতাংশেরও বেশি রয়েছে দারিদ্র্যসীমার নিচে। আর ৩০ শতাংশ দরিদ্র, বাদবাকি মধ্যবিত্ত ও ধনীদের মধ্যে বিভক্ত।

গত ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয়েছিল। বাড়িতে অবস্থানকালীন প্রতিদিনই আমি হাটে যাওয়ার চেষ্টা করি। নিত্যদিনকার মত একদিন হাটে যাওয়ার পথে পরিচিত একজন ভদ্রলোককে দেখলাম তিন বস্তা ধান নিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে হাটে যাচ্ছে। আমি তাকে ধানের বাজারদর জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তরে বলেছিলেন প্রতি মন (চল্লিশ সেরা) ৬০০ টাকা মাত্র। হাটে যাওয়ার পর ঐদিনের দ্রব্যাদির বাজারদর দেখে বড্ড অবাক হলাম। এই ভদ্রলোক একমন ধানের টাকা দিয়ে বড়জোর একসাপ্তাহ চলতে পারবেন; যদি তার ফ্যামেলির সদস্য সংখ্যা চার-পাঁচ জন হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানের মান বাজারদর বিবেচনায় থাকে সাপ্তাহে দু'মন ধান বিক্রি করতে হবে। সবাই কিন্তু আবার এরকম ধানের উপর নির্ভরশীল হতেও পারে না। হতে হয় অভাবের উপর নির্ভরশীল।

বছর কতেক আগে সিএনজি ওয়ালা কথা প্রসঙ্গে বলেছিল, 'এখন গ্যাসের দাম বাড়ানো হল, বাড়লো রাস্তার ভাড়া খরচ। পাঁচ টাকার জায়গায় আমরা নিচ্ছি সাত টাকা। কিন্তু কেউ কিছু বলে না। কিছুদিন পর এভাবে দাম বাড়তে বাড়তে ৫ থেকে ১৫ টাকা হলেও কেউ কিছু বলবে না। এটাই আমাদের কপাল, আর আপনাদের কাছে আপনাদের ভাগ্য বলুন আর উন্নয়ন।'
বর্তমান চড়া বাজারদর নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে আমাদের অনেকেই ব্যাতিক্রমী আলোচনা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু ঐ গণমাধ্যমের মতই আমরা নিরব হতে খুব বেশি সময় নেইনি। দুএকদিন আগে একজন ব্লগারকে দেখেছিলাম এ নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট দিয়েছেন। ভালো লেগেছে অনেক।


চড়া বাজারদরের কারণে আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্রাইসিসের মধ্যে পড়েছে আমাদের সমাজের দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষগুলো তাদের সাথে দরিদ্র ও মধ্যবিত্তদের সকলেই। কিন্তু আমাদের জনগণের মধ্যে ঐক্যের অভাব ও আমাদের শিক্ষিত সমাজের অন্ধত্বতার কারণে এই ক্রাইসিস আমাদের থেকে দূর হয় না। ভৌগোলিক দিক বিবেচনা করলে আমাদের রাষ্ট্রের জন্য এরকম চড়া বাজারদর সম্পূর্ণভাবেই একটা মুর্খ সমাজব্যবস্থাপনার ফলাফল বলা যেতে পারে। এরকম কৃষির ক্ষেত্রে উত্তম উপযোগী রাষ্ট্রের জন্য এমন চড়া বাজারদর কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য না হলেও আমরা তা গ্রহণযোগ্যতার উর্ধে বসিয়ে অভ্যাসে পরিণত করে নিয়েছি। আফসোস নয়, তবু ভালবাসাটুকুই রাখি এই দেশের জন্য।



১ম ছবি : ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত একটি পত্রিকার প্রতিবেদন।
২য় ছবি : আজ জুম'আ থেকে আসার পথে তুলা ।

সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৪০
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×