আজ হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যু বার্ষিকী। যেহেতু তিনি একজন লেখক তাই তার মৃত্যু বার্ষিকীর এই দিনে তার কিছু ভালো রচনা নিয়ে আজ আলোচনা করবো।
হুমায়ুন, আমাদের প্রজন্মের কাছে যে কতটা জনপ্রিয় তাকে নিয়ে মানুষের আবেগ দেখলেই সেটা বুঝা যায়। যদিও হিমু আর মিসির আলীর ভীরে তার অন্য রচনাগুলো অনেকটাই আড়ালে পড়ে যায়।
হুমায়ুন আহমেদ বাংলা সাহিত্তের জন্য বেশ কিছু ভালো সায়েন্স ফিকশন রচনা করে গেছেন। অন্য কিছু না লিখে তিনি যদি শুধু সায়েন্স ফিকশনই লিখতেন সেটাও একজন লেখকের জন্য যথেষ্ট ছিল। তার সায়েন্স ফিকশন গুলোর মধ্যে, তোমাদের জন্য ভালোবাসা, তারা তিনজন, ইরিনা, কুহক, ফিহা সমীকরন, শূন্য, ইমা, অনন্ত নক্ষত্র বীথি, ওমেগা পয়েন্ট, নিশাদ, অন্য ভ্যবন, দ্বিতীয় মানব উল্লেখযোগ্য।
ভুত প্রেত নিয়েও তার বেশ কিছু মজার বই আছে, বোতল ভূত, ভূত ভূতং ভূতৌ, ভয়, একি কান্ড, চেরাগের দৈত্য এবং বাবলু, বোকাভু, কানী ডাইনী, ভূতসমগ্র, মজার ভূত, ভয়ংকর ভূতুড়ে, অতিপ্রাকৃত, নির্বাচিত ভূতের গল্প, ভূতমন্ত্র প্রভৃতি।
ছোটদের জন্য হুমায়ুন আহমেদ রচনা করেছেন বেশ কিছু ভালো মানের শিক্ষণীয় বই, যেমন- নুহাশ এবং আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগ, ছোটদের সেরা গল্প, পরীর মেয়ে মেঘবতী, তোমাদের জন্য রূপকথা, কালো জাদুকর, কাক ও কাঠগোলাম, ছোটদের জন্য এক ব্যাগ হুমায়ূন, বোকা রাজার সোনার সিংহাসন, নীল মানুষ, কুহুরানী , হলুদ পরী , বনের রাজা প্রভৃতি।
যদিও মুক্তিজুদ্ধ নিয়ে তার লেখা সেরা উপন্যাস জোছনা ও জননীর গল্প। তবুও আগুনের পরশমনি, সৌরভ, শ্যামল ছায়া, অনিল বাগচীর একদিন, ১৯৭১ এই উপন্যাস গুলিও কম ভালো না।
হুমায়ুন অসংখ্য প্রেমের উপন্যাস লিখেছেন, যারমধ্যে প্রথমেই হয়তো আসবে, “নবনী”, “তুমি আমায় ডেকেছিলে এক ছুটির নিমন্ত্রনে” আর “আয়না ঘর” এর নাম। হুমায়ুনের উপন্যাস নিয়ে এতো চলচিত্র হয় অথচ এই গল্পগুলি কারো নজরে পরেনা!
ক্লাসিক্যাল লেখা হুমায়ুন আহমেদ লিখেন নি যারা এই অপবাদ দিতে পছন্দ করেন, তাদের বলবো অচিনপুর, নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার উপন্যাস গুলি একটু পড়ে দেখতে।
ছোট গল্পে হুমায়ুনের দক্ষতা সম্পর্কে যারা অবগত নন তারা “প্রিয়তমেসু”, “চোখ”, “আয়না” অন্তত এই তিনটি গল্প পড়ে দেখতে পারেন যদি ভালো লাগে তাহলে, একটি নীল বোতাম, রুপা, বুড়ী, পিপড়া, কুকুর, একজন সুখি মানুষ, জুয়া, জীবন জাপন, সে, খেলা, কল্যাণীয়াসু, নিমধ্যমা, শিকার, অসুখ, খালক, ফেরা, সাদা গাড়ি, অসময়, পাপ ইত্যাদি গল্প গুলি পড়ে দেখতে পারেন।
পরিশেষে হুমায়ুন আহমেদের সেরা উপন্যাস “কবি” নিয়ে দুটি কথা বলি, বাংলা সাহিত্তের শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক তারাশঙ্কর “কবি” নামে তার বিখ্যাত উপন্যাসটি লিখেছেন। এরপরেও হুমায়ুন আহমেদ সাহস করে একই নামে তার সেরা লেখা লিখতে সাহস করেছেন, এথেকেই বোঝা যায় তিনি কবির ব্যাপারে কতটা আত্তবিশ্বাসী ছিলেন !
হুমায়ুন তার লেখার মাধ্যমে বেচে থাকুন আরো বহুদিন এই কামনা করি…
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:২৬