somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডাস্টবিনের খাবার!

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হাটতে হাটতে ফার্মগেটের দিকে যাচ্ছিলাম। রোদের কথা কি বলব, কাকেরা মাথা গুরিয়ে পরে আছে কড়ই গাছের নিচে।
নগরী ঠান্ডা পানি খাওয়াই ব্যাস্থ।
বাদলের দেয়া মোবাইলটা অনেক ভাল ,কত ডিগ্রি তাপমাত্রা আছে সহজেই দেখা যায়। সবার এই অবস্থা দেখে খুবই ইচ্ছা হল তাপমাত্রা জানার ।
মোবাইল মেলে দেখলাম আটত্রিশ ড্রিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।
এরকম নানা রকম কথা ভাবতে ভাবতে হাটছিল হিমু। হঠাত করেই ডাক দিল কে যেন "হিমু ভাইজান কই যান?'
দেখে চিনতে পারল না হিমু ,তবে মনে হচ্ছে আগে কোথাও যেন দেখেছে।
কি ভাইজান চিনতে পারলেন? অবশ্য না চেনারই কথা লেবাস পরিবর্তন করছি। রবীন্দনাথের বেশ ধরছিলাম আগে। ঐডা বদলাইয়া এখন পাগলের
লেবাস করছি।
কেমন আছ সামাদ মিয়া?
আল্লাহর রহমতে ভাইজান ভালই আছি।
আগে ভাল ছিলাম না ,যেদিন থেইকা পাগলের লেবাস ধরছি হেদিন থেইকা ভালই আছি।
কি রকম ভাল আছ?
ভাইজান পেট শান্তি দুনিয়া শান্তি । এখন খুব সহজেই পেট শান্তি করা যায়।
কিভাবে কর আমারো খুধা লাগছে ।এই রোদে হাটতে হাটতে অবস্থা কাহিল।
ভাইজান এই কাজ সবাই পারে না। একমাত্র পাগলেরাই পারে।ঐ যে দেখছেন ডাস্টবিন , ঐখানে হাত দিয়া একটা নারা দিলে নানা রকমের খাবারের সন্ধান
পাওয়া যাইব। ভাইজান ,আমাগো বড়লোকেরা ডাস্টবিনে খাবার ফালাই আর আমরা পাগলেরা এই খাবার হাত দিয়া নাড়া দিয়া বাইর কইরা খাই।
বুজলেন ভাইজান ঐখানে হাত দিতে হইলে পাগলের সার্টিফিকেট লাগব।
আখের রস খাবে সামাদ মিয়া?
জ্বী ভাই এইডা খাওয়া যায়। কি গরম পরছে দেখছেন। মনে হইতাছে জাহান্নামে আছি। এইডা আল্লাহর শাস্তি ছাড়া আর কিছুনা ।
আখের রস খেয়ে হিমু আর সামাদ মিয়া রওনা হল মাজেদা খালার বাসার দিকে। মাজেদা খালার বাসার বেইল টিপতেই কাজের মেয়েটা দরজা খুলে বলল ভিক্ষা নাই যান পরে আইসেন।
হিমু খিক করে হাসি দিয়ে রুমে ঢুকে পরল।
মাজেদা খালা হিমুকে দেখে বলল "কিরে তুর এই অবস্থা কেন? কাজের মেয়েটা তো ভুল বলে নাই ঠিকই তো ফকিরের মত লাগছে।
হিমু দাত গুলো বের হাসি দিয়ে বলল 'এসির নিচে বসে থাকলে কি করে বুজবা বাহিরে খবর? বাহিরে আল্লাহর দেওয়া জাহান্নামের শাস্তি প্রদর্শিত হচ্ছে।
কি বলছিস এই পাগল ছাগ্লের কথা?
হ্যা সত্যই বলছি আগামী সাতদিন বাহিরে যেও না তাহলে তুমিও এমন ফকিরে মত লেবাস নিয়ে কলিং বেইল টিপবে আর কাজের মেয়ে বলবে ভিক্ষা নেই মাফ করেন।
বাদ দে তোর মসকরা এখন কিসের জন্য আসছিস সেটা বল।
বাসি খাবার কি ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছ?
না কেন?
তাহলে খাবার গুলো টেবিলে দাও খুব খুধা লাগছে। সামাদ মিয়া আবাদত পাগলের বেসে আছে। তবে এখন তোমার বাথরুমে গোসল করলে কিছুটা ভাল হয়ে যাবে।।
সামাদ মিয়া মাথা নিচু করে বলল খালাম্মা আসছালামুওলাইকুম। বাথরুম টা কোনদিকে?
সামাদ মিয়া ঢুকল কমন বাথরুমে আর হিমু গেল বাদলের রুমের টায়।
এই গরমে দিনে চারবার গোসল করতে পারলে বড়ই আরাম পাওয়া যেত।
শীতের দিনে কত শীত বস্র বিতরন কিন্তু গরমের দিনে ঐ লোকেরা কই? এসি বিতরন না করুক একটা তাল পাতার পাখা তো দিতে পারত।
হিমু আর সামাদ মিয়া ডাইনিং বসে খাসির রেজালা আর পোলাও খাচ্ছে।
বুজলেন হিমু ভাইজান ডাস্টবিনে আগে আগে আসতে পারলে অনেক ভাল ভাল খাবার পাওয়া যাই। এই ধরেন মাংসের টুকরা অথবা মাছ আরো কত কি। আমি কিছুদিন আগে দুইটা আস্তা লেগ পিস পাইছিলাম।
আহহ আপনি কত মহান। আপনার খালা মানুষ না ফেরেস্তা ।
সামাদ মিয়া ঐ যে লেগ পিস খাইছিলা ঐগুলা এইসব বাসা থেকে যাই ডাস্টবিনে। আজকে আমরা যদি খেতে না আসতাম তাহলে এগুলাও ডাস্টবিনে যেত।
বহুদিন পরে ভাইজান তৃপ্তি করে খাইতাছি। ডাস্টবিনে তো আমি একলা খাই না ।তার মাজে লিডার আইসা ভাগ বসাই ।এলাকার পাগলদের মধ্যে লিডার নাকি সবার আগে আসছিল তাই সবার ভাগ দিতে হয়।
এখন থেকে প্রত্যেকদিন এই বাসা থেকে এসে খাবার নিয়ে যাবা। চাইলে এই এলাকার ডাস্টবিনের লিডারও হতে পার। এই এলাকার পুরান পাগল আমার চেনা।
মাজেদা খালাকে বলা হয়েছে যেন খাবার ডাস্টবিনে না ফেলা হয়। যা খাবার বাচবে সেগুলো যেন প্যাকেট করে রাখা হয়। অথবা কোন ফকির আসলে তাকে দিয়ে দেওয়া হয়।
মাজেদা খালা বিরক্তি নিয়ে বলল "এগুলা আবার কার জন্য রেখে দেব প্যাক করে? পচা গন্ধ করার জন্য।"
হিমু বলল "সামাদ মিয়ে এসে নিয়ে যাবে" তাছাড়া সে এখন তোমার এলাকার ডাস্টবিনের লিডার হতে চলছে।"
তুই যা ভাল করিস তাই কর।
বুজলা খালা এই যে খাবার গুলা ফেলে দাও এতে কি লাভ হয় ?বরং খাবার গলো লোকসান হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এই শহরে অনেক লোক আছে যারা না খেয়ে থাকে,একবেলা খাবার জুটাতে পারে না। তাহলে অসংখ্য সামাদ মিয়ারা পাগল হয় না।
তাদের কে সাহায্য করা তোমার কর্তব্য ।
এই যে অতিরিক্ত গরম দেখছ তা আসলেই আল্লাহর গজব। কারন তোমার আজ মানুষ হয়েও মানুষের কষ্ট বুজ না।
এরপর মাজেদা খালা সংকল্প করলেন আর খাবার নষ্ট করবে না।
নুটঃআসুন আমরা খাবার নষ্ট না করে ,ফেলে না দিয়ে আমাদের আশেপাশের এই খুধার্ত মানুষদের দিয়ে দেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:১৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

কওমী মাদ্রাসায় আলেম তৈরী হয় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×