
হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি। ক্রুর অট্টহাসি। লাগাতার। অনবরত। দাঁত কেলিয়ে। শয়তানও পারে না এমন হাসি হাসতে। বত্রিশ পাটি দাঁত বের করে এমন জঘন্য হাসির ফোয়ারা বইয়ে দিচ্ছে খুনি ফয়সাল করিম মাসুদ। তাকে ভারত জামাই আদরে আশ্রয় দিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, ভারত কেন খুনিদের আশ্রয়স্থল? বলছি হাদির কথা। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অকুতোভয় যোদ্ধা শরীফ ওসমান বিন হাদি আর আমাদের মাঝে নেই। গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পল্টন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় ভাড়াটে খুনিদের গুলিতে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তিনি গুরুতর আহত হন। সিঙ্গাপুরে উন্নত চিকিৎসা নিলেও ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ রাতে তিনি শহীদ হন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
হাদি ছিলেন ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে অগ্নিঝরা প্রতিবাদের প্রতীক। তাঁর স্বপ্ন ছিল, আধিপত্যবাদ আর গোলামির নাগপাশ ছিন্ন করে বাংলাদেশ একদিন বিশ্ব মানচিত্রে আত্মপরিচয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। কিন্তু আধিপত্যবাদীদের ক্রিড়নকরা তার স্বপ্নকে ধূলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। ফুল হয়ে ফোটার আগে অঙ্কুরেই হাদিকে নিঃশেষ করে দিয়েছে। কিন্তু একজন হাদিকে সরিয়ে দিলে কী লাভ? ভারতের মনে রাখা উচিত, এদেশের লাখো কোটি তরুণের রক্তে জ্বলছে প্রতিবাদের আগুন- ঘরে ঘরে জন্ম নিচ্ছে নতুন হাদি! এদেশের ঘরে ঘরে এমন কোটি কোটি হাদি আজ দেশের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। ভারতের এটাও মনে রাখা উচিত, এটা সিকিম কিংবা ভুটান নয়, এটা বাংলাদেশ। আগ্রাসন আর আধিপত্যবাদ কীভাবে হটিয়ে দিতে হয়, এদেশের মানুষ তা ভালো করেই জানে।
যখনই এদেশের সাহসী সন্তানেরা ভারতের আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে, তখনই তারা খুনিদের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রতিটি কলঙ্কিত অধ্যায়ে ভারতের কালো হাত স্পষ্ট। বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকেও একই কারণে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ভারতীয় আধিপত্যবাদের প্রতিবাদ করলেই নিশ্চিহ্ন করার এই রক্তাক্ত নীতি তাদের পুরনো অভ্যাস। এক্ষেত্রে মজার বিষয় হচ্ছে, একজন খুনিকে আশ্রয় দিয়ে ভারতের অপরাধবোধের চিহ্নমাত্র নেই। লজ্জা-শরমেরও কোনো বালাই নেই! চক্ষুলজ্জা বলতে একটা টার্ম আছে, নির্লজ্জ এই দেশটির অভিধানে এই শব্দটিরও স্থান নেই সম্ভবতঃ। তারা সবসময় বাংলাদেশীদেরকে করদ রাজ্যের গোলাম হিসেবে দেখতে চেয়েছে। হাদির খুনিকে সীমান্ত পার করে আশ্রয় দিয়ে, ভারতে নিরাপদে লুকিয়ে রেখে তারা আবারও প্রমাণ করেছে- তারা এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের শত্রু। হাদি চলছে কবরে, খুনি হাসছে ভারতে!
ভারতের ধারাবাহিক শয়তানির মুখে এদেশের নিপীড়িত মানুষ মুখ খুললেই আওয়ামী লীগ আর ভারতের নিকৃষ্ট ল্যাসপেন্সাররা শেয়ালের মত হুক্কাহুয়া করে ওঠে। এটা এই ব্লগেও প্রায়শই দেখা যায়। তাবেদারি মানসিকতার ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিক্ষিপ্ত আনাগোনা দেখলেই বুঝা যায়, এরা দেশবিরোধী ভারত প্রভূর কেনা দাস। এই শ্রেণির আত্মবিক্রিত অপদার্থদের জন্য করুনা হয়। এই নগ্ন আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ আরও জোরালো হবে। শহীদ হাদির রক্ত বৃথা যাবে না- এই রক্ত থেকেই জন্ম নেবে নতুন বিপ্লব। তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এ লড়াই চলবে, অব্যাহত থাকবে এবং আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জয় এদেশের নিপীড়িত জনতারই হবে, জয় আমাদের হবেই ইনশাআল্লাহ!
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


