প্রচণ্ড গরম। তার ওপর লোডশেডিং। ঘুম না আসায় ব্যালকনিতে গিয়ে বসলাম। হঠাৎ গলা খাঁকারি দেয়ার শব্দ। আমি অবাক হয়ে আশেপাশে তাকাতেই কণ্ঠটা ভেসে এলো।
- সূর্য সাহেব...
- কে?
- আমি আপনার বাসার জ্বিন। ভালো আছেন?
- অন্ধকার বলে আপনাকে দেখতে পাচ্ছিনা। মজা নিচ্ছেন? আপনি চোর-টোর না তো?
- না। আমি সত্যিই জ্বিন। প্রমাণ চান?
- হ্যাঁ।
ঠাস!!!
- উফ! চড় মারলেন কেন?
- হাতের সাইজ বোঝালাম। স্বাভাবিকের চেয়ে বড় না?
- হ্যাঁ। তাই বলে চড় মেরে বোঝাতে হবে! আপনি কি মানুষ!
- দুঃখিত। আমি জ্বিন।
- কি চান?
- তেমন কিছুনা। একটু গল্প করতে আসলাম। একা একা বোর লাগছিলো।
- আমার গল্প করার মুড নেই, জ্বিন সাহেব। ঘুমাবো। কাল সকালে ভার্সিটি যেতে হবে।
- ধুর মিয়া! ভার্সিটি পরে হবে। আচ্ছা, আপনার একটা ইচ্ছা আমি পূরণ করবো। বলেন, কি চান আমার কাছে?
- স্কুল লাইফটা ফিরে পেতে চাই। নিজের অসংখ্য ভুলগুলো শোধরানোর সুযোগ চাই। দিতে পারবেন?
- না। এটা অসম্ভব। জীবনের ভুলগুলো মোছার জন্য কোন ইরেজার নেই।
- জানতাম।
- সূর্য সাহেব, মন খারাপ?
- না। বলেন।
- আপনি তো গোল্ড লিফ খান? এই যে, এই প্যাকেটটা আপনাকে দিলাম।
- লাগবেনা।
- আরে, নেন রে ভাই। কিছু একটা দিতে চেয়েছিলাম, আপনার পছন্দের জিনিসটাই দিলাম।
- থ্যাংকস। সিগারেট ড্যাম না তো?
- গিফটের জিনিসেও সন্দেহ? তা-ও যে সে গিফট না, জ্বিনের দেয়া গিফট!
- সরি, জ্বিন সাহেব।
- ইটস ওকে। ধরান তো একটা। খেয়ে হাফ দিয়েন।
- আপনিও স্মোকার? জ্বিন জাতি স্মোক করে!
- কেন ভাই? তাদের কি শখ আহ্লাদ নেই?
- তা তো বটেই।
আমি কালিগোলা অন্ধকারে ঠাসা ব্যালকনিতে বসে সিগারেটের প্যাকেটটা খুলে একটা সিগারেট ধরালাম। লাইটারের আলোয় দেখলাম, আমার আশেপাশে কেউ নেই। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, আছে। শুধু আছেই না, সে আমাকে সাগ্রহে লক্ষ্যও করছে।