somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি অশুভ আশংকা

০৩ রা নভেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শুভ মধুপূর্ণিমা । ছেলে মেয়েরা স্মরন করিয়ে দিলেও আমার অক্ষমতার কথা জানালাম। আমার সাথী উপাসক- উপাসিকারা সবাই বৌদ্ধ বিহারে অষ্টম শীল নিতে গেছে। আমি যেতে পারলাম না। আর্থিক সামর্থ যেমন নেই তেমনি শরীর অসুস্থ, উচ্চ রক্ত চাপ। তোফাজ্জল ভায়ের দোকানে একটি ছেলে আমাকে উত্তেজিত করেছিল। আমার এক আত্মীয় ছেলে কম্পিউটার শেখার জন্য এসেছিল। কম্পিউটার প্রশিক্ষন দেয়া আমার কাজ নয়, মালীকের কাজ।তাদের প্রশিক্ষনের সূযোগ দিয়ে আমি অন্যত্র চলে গেলাম। তারা চলে যাবার পর আমি আবার কম্পিউটার খুলে বসেছি।প্রশিক্ষনে সেই দুটো ছেলে আসলে আমি আমার জ্ঞাতী ছেলেটিকে তঞ্চঙ্গ্যাদের ধর্মীয় গান প্রর্দশন করে উদ্ভ’দ্ধ করার চেষ্টা করছিলাম এবং গানে অংশ গ্রহনকারী মডেলরা যে আমার স্বজন তা পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলাম। কিন্তু অপর ছেলেটি সেই সব পাত্তা না দিয়ে মাউস দিয়ে নাড়া চাড়া করা শুরু করে দিয়েছে। মেজাজ গেল বিগড়ে। প্রায় চীৎকার করে উঠলাম, আমি ইডিয়েট ছেলেদের পছন্দ করি না। অতপর কম্পিউটার থেকে উঠে গেলাম। বাড়ীতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে উক্ত আলাপ করে রাতে খাওয়া দাওয়া ও বন্দনা করার পর ঘুমানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু উচ্চ রক্ত চাপের কারনে বুকটা জ্বলছে । তাই মনে মনে “অনিত্য,দুঃখ,অনাত্ম” জপ করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ঠাহর ও করিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠার সাথে সাথে চট্টগ্রাম থেকে খবর পেলাম,রামু,উখিয়া ও পটিয়া বৌদ্ধ বিহার গুলোতে কারা যেন আগুনে পুড়িয়ে ছারকার করে দিয়েছে। মোবাইল অনেক গুলো হারানোর পর ঐসব এলাকার ধর্মগুরুদের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন।উহ! আমার ধর্ম গুরু সত্যপ্রিয় মহাথেরো, জাদিপাড়ার পাঞাসামী মহাথেরো ,অতী প্রাচীন খেজারী বৌদ্ধ বিহার, মিঠাছড়ীর প্রয়াত প্রজ্ঞামিত্র মহাথেরো বৌদ্ধ বিহার,উখিয়া রেবতী মহাথেরো এবং পটিয়ার ডঃ সঙ্গ প্রিয় মহাথেরোরা কেমন আছেন? শ্রমন থাকা অবস্থায় প্রয়াত প্রজ্ঞামিত্র ভন্তের অন্তেষ্ট্রিক্রিয়া প্রয়াত চন্দ্রজ্যোতি মহাথেরোর অন্তেষ্ট্রিক্রিয়ায় রামু ভ্রমন করেছিলাম। আমার জ্ঞাতী জাদি পাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় পাঞাচারা মহাথেরো সহ শ্রদ্ধেয় সত্য প্রিয় মহাথেরোর সাথে পরিচয় হয়েছিল জনৈক বড়–য়া বাবুর বাসায় এক ধর্মীয় অন্নদান আমন্ত্রনে। শ্রদ্ধেয় সত্যপ্রিয় ভন্তে বলেছিলেন,“আমাদের ছেলেমেয়ে নেই বলেই বুড়ো বয়সে দূঃখ পাচ্ছি, তোমার তো সব আছে তথাপি এই দুঃখ পেতে এলে কেন বাপু?”পাতারবাড়ী শ্রদ্ধেয় রেবতী মহাথেরোর বৌদ্ধবিহারে শায়িত বৌদ্ধমুর্তির সাথে থাইল্যান্ড থেকে আগত বৌদ্ধভিক্ষুদের সাথে ছবি তুলেছিলাম। রুমকা পালঙে থাইল্যান্ড থেকে আনীত বৌদ্ধমুর্তি বিতরন উপলক্ষে পিন্ডাচারন করেছিলাম। এদিকে পটিয়ার শ্রদ্ধেয় ডঃসঙ্গপ্রিয় ভন্তেকে মনে পড়ছে বেশী। ইন্টারনেটে ঢাকা আন্তরজাতিক বৌদ্ধ বিহারের যুগ্ম-মহাসচিব সুনন্দ ভিক্ষুর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলাম কিন্তু কম্পিউটার ডিষ্টার্বের কারনে তা সম্ভব হল না। অনলাইন বন্দ যখন পেপারের উপড় তথ্য নির্ভর হয়ে গেল।আজো সঠিক তথ্য খুজে পাইনি।রামুর জনৈক বন্ধুর মাধ্যমে জানলাম,জনৈক বড়–য়ার ছেলে ফেসবুকে পবিত্র কোরান শরীফের উপড় পা দেয়া অবস্থায় একটি ছবি দেয়ার অপরাধে উগ্র মৌলবাদীরা এই হামলা চালায়। এটা একটা ওজুহাত ছাড়া আর কিছু নয়। যে এমন করতে পারে সে বৌদ্ধ নয়। কোরান শরীফ নয়, যে কোন বইয়ে পা দেয়া কোন ছাত্র-ছাত্রীর বিধানে নেই। তাছাড়া ডিজিটালে কারসাজিতো থাকতে পারে, ফটোসপে অনেক কিছু করা যায়। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বিদেশে তাঁর নাতীকে দেখতে গিয়েছিলেন। তাঁর নাতী কোলের সেই ছবিটি ভারতে প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিংহ এর সাথে সংযুক্ত করে দিয়ে একটা সংসার বানানো হয়েছে, ছবিটি আমি দেখেছি। বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ফরেন্ট লেডি বানিয়ে জামাতের নেতা মতিউর রহমান নিজামীকে জিন্সের পেন্ট পরানো অবস্থায় ছবি আমি দেখেছি। আমি তো “ডিজিটাল ক্রাইম” নামে এই ব্লকে কলাম ও লেখেছি।
থাইল্যান্ডের মহাচূলা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়রত আমার ভাইপো বিশুদ্ধানন্দ থেরো ফেসবুকে বন ভিক্ষুদের নিয়ে কিছু লেখেন। আমি তাঁর লেখা নিয়ে কমেন্ট করি। এটা বোধহয় বান্দরবানে পরম পূজনীয় রাজগুরু ভন্তে এবং রাজবন বিহারের দৃষ্টি আকর্ষন হয়। আমাদের এই চাটিঙে কে যেন এক নেকেট ছবি সংযুক্ত করে দেয়। গুরু দের সামনে এমন ছবি? আমার খুব খারাপ লেগেছে। পরে লক্ষ্য করলাম যে এই ছবি এড করেছে সে মহিলার নামে আমাদের ফেসবুকে সংযুক্ত হয়েছে।কিন্তু মহিলারা কখনো এমন ছবি সংযুক্ত করবে না।
ছোট ছোট বালকেরা আমার কাছে ফটো কপি ডকুমেন্ট চাইতে আছে। আমি কিন্তু তাদের কে তা প্রদান করি না। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা না বুঝে এই ডকুমেন্ট নিয়ে গর্ব করবে এতে অন্যদের প্রতিহীংসা আসতে পারে এবং ক্ষতি করতে পারে।সেই ডকুমেন্ট হচ্ছে জেনেভায় বৌদ্ধধর্ম যে শ্রেষ্ঠ ধর্ম নির্বাচিত হয়েছে তার পেপার কাটিং। আমার দুলাভাই বুলু কার্বারী ( শ্রদ্ধেয় শ্রমন) এর পরামর্শে তারা এই ডকুমেন্ট চাইতে আসে।আমাদের পরম পুজনীয় তথাগত ভগবান বুদ্ধ বলেছেন“আমাকে কেউ গালি দিলে ও কি? আগুন দিলেও কি? প্রশংসা করলেও কি? তাতে আমার কি আছে যায়? উপেক্ষা।
“মৈত্রী,করুনা, মুদিতা,উপেক্ষা,পার্শ্বে.দায়কা”।বৌদ্ধ ধর্ম কে শ্রেষ্ঠ ধর্ম হিসেবে নির্বাচিত করার উদ্দেশ্য কি? সাম্প্রতিক এই ঘটনায় আমার সন্দেহ সত্যে পরিনত হল। এই ঘটনায় আমি কোন ধর্মপ্রান মুসলমানদেরকে দায়ী করব না। যারা এই সব করে তারা কোন ধর্মের অনুসারী নয়।পার্বত্য এলাকা কাপ্ত্ইা থেকে যে সেনা ব্রিগেডটি উইড্র করা হয়েছে তা সেটআপ করা হয়েছে কক্সবাজার জেলায়। যে কোন দূর্যোগ মোকাবেলায় এবং এই হেন ভয়াবহ অগ্নীকান্ড মোকাবেলায় একমাত্র সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষন রয়েছে। রামু,উখিয়া ও পটিয়া বৌদ্ধ বিহার অগ্নীকান্ডে সেনাবাহিনী কিংবা ফায়ার সার্ভিস এর ভ’মিকা নিয়ে আমার যথেষ্ঠ সন্দেহ রয়েছে।তাঁরা “উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে” ছাপানোর চেষ্টা করেছে।সিভিল প্রশাসনের এই দূর্যোগ মোকাবেলার কোন প্রশিক্ষন নেই।
আফগানিস্তানের পাহাড় শৃঙ্গে অনেক বড় বড় বুদ্ধ মুর্র্তি ছিল। এই সব মুর্তি তো কারো ক্ষতি করেনি। তথাপি উগ্রমৌলবাদীরা এই সব ভাংচুর করল। যার পরিনতি আজকের এই ধ্বংসের মুখোমুখি আফগানিস্তান। রামু,উখিয়া ও পটিয়ায় বৌদ্ধ বিহার গুলোতে আগুন দেয়ার ফলে আামাদের দেশে কি ভয়ংকর পরিনতি আসছে তা আমার বোধগম্য নয়।



১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লাইকা লেন্সে তোলা ক’টি ছবি

লিখেছেন অর্ক, ১৭ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৩০




ঢাকার বিমানবন্দর রেল স্টেশনে ট্রেন ঢোকার সময়, ক্রসিংয়ে তোলা। ফ্ল্যাস ছাড়া তোলায় ছবিটি ঠিক স্থির আসেনি। ব্লার আছে। অবশ্য এরও একরকম আবেদন আছে।




এটাও রেল ক্রসিংয়ে তোলা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কার গল্প জানেন ও কার গল্প শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩১



গতকাল সন্ধ্যায়, আমরা কিছু বাংগালী ঈদের বিকালে একসাথে বসে গল্পগুজব করছিলাম, সাথে খাওয়াদাওয়া চলছিলো; শুরুতে আলোচনা চলছিলো বাইডেন ও ট্রাম্পের পোল পজিশন নিয়ে ও ডিবেইট নিয়ে; আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাবাকে আমার পড়ে মনে!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৭ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২

বাবাকে আমার পড়ে মনে
ঈদের রাতে ঈদের দিনে
কেনা কাটায় চলার পথে
ঈদগাহে প্রার্থনায় ..
বাবা হীন পৃথিবী আমার
নিষ্ঠুর যে লাগে প্রাণে।
কেন চলে গেলো বাবা
কোথায় যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×