somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের পাহাড় বেচে থাকুক তার মতো করে।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৭ দুপুর ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাহাড় পর্বত কথাটা শুনলে আমাদের মনের মধ্যে প্রথম যে ছবিটা ভেসে ওঠে সেটা হলো, একটা বিশাল প্রকৃতি সৃষ্ট মাটির বা বরফের ঢিবি। কিন্তু এর সৌন্দর্য সম্মন্ধে বর্ণনা একেক জনের এক এক রকম। করো কাছে পাহাড় হলো বিধাতার সৃষ্ট এক বিশাল রহস্যের আধার, আবার কারো কাছে পাহাড় হলো শুধুই সৌন্দর্য আবার করো কাছে পাহাড়ে চড়ে উপর থেকে পৃথিবী দেখার মজাটাই আসল। তবে যতো যাই হোক না কেন, একথা কেউই অস্বীকার করবে না যে আমাদের পরিবেশে পাহাড় পর্বতের গুরুত্ব অপরিসীম। আজকে বাংলাদেশ কে যে মৌসুমি বায়ুর দেশ বলা হয়ে থাকে তার কারণ আমাদের দেশের খুব কাছেই হিমালয় পর্বতমালার অবস্থান। থাক সে কথা। আজকে যে কারণে লেখাটার অবতারনা সে প্রসঙ্গে বলি। আমরা অনেকেই পাহাড়ে চড়তে ভালোবাসি। আমরা মানে সমতলের মানুষরা পাহাড়ে চড়ি যার যার নিজের ভালোবাসা নিয়ে, কেউ চায় এর উপরে কি আছে তা জানতে, কেউ বিধাতার সানি্নধ্য লাভের আশায় আবার কেউবা নিছক অ্যাডভেঞ্চারের আশায়।

পৃথিবীতে পাহাড়ের সংখ্যা খুব কম নেই। এবং এর একেকটার সৌন্দর্য একেক রকম। কেউই কারো চেয়ে কম নয়। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো মানুষ নামক পিশাচের হাতে পড়ে আমাদের এই পাহাড় পর্বতের অনেকগুলোর সৌন্দর্যই আজ হুমকির মুখে। আর এই পাহাড় পর্বত আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ তা বলে দেয়ার প্রয়োজন বোধকরি নেই। আমাদের পাহাড়ের গুরুত্ব সম্মন্ধে সচেতন করার জন্যই জাতিসংঘ 2003 সাল থেকে পালন করে আসছে বিশ্ব পর্বত দিবস বা ইন্টারন্যাশনাল মাউন্টেন ডে। শুরুটা হয়েছিলো 2002 সালে যখন জাতিসংঘের সহযোগি প্রতিষ্ঠান FAO (food and agriculture organization) বছরটিকে বিশ্ব্ব পর্বত বছর হিসেবে ঘোষনা দেয় এবং বিশ্বের পর্বত রক্ষা করার জন্য সবাই কে এক হয়ে কাজ করার আহবান জানায়। জাতিসংঘের আহবানে সাড়া দিয়ে 78 টি দেশের পাহাড় রক্ষা সংস্থা 2002 সালের 2রা সেপ্টেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবার্গে একটি চুক্তিপত্রে সই করে, যার মুল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো দেশের পাহাড়ের পরিবেশ রক্ষা করা এবং পাহাড়কে বাচিয়ে রাখার জন্য এক হয়ে কাজ করা। এবং তারই প্রতিফলন হিসেবে প্রতি বছর 11ই ডিসেম্বর পালিত হয়ে থাকে ইন্টারন্যাশনাল মাউন্টেন ডে বা বিশ্ব পর্বত দিবস।

প্রতি বছর এই দিবস একেকটি উদ্দেশ্য নিয়ে পালিত হয়ে থাকে। এবারের দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ম্যানেজিং বায়োডাইভারসিটি ফর বেটার লিভস। অথর্্যাৎ পর্বতের নিজস্ব যে পরিবেশ আছে তা যেনো বজায় থাকে। প্রতিটি স্থানের একটি নিজস্বতা আছে এবং এই নিজস্বতাই একেকটি অঞ্চলের সাথে আরেকটি অঞ্চলের পার্থক্য গড়ে দেয়। এবং এই নিজস্বতাই একটি এলাকার সৌন্দর্যও বটে।কোন স্থান যদি তার নিজস্বতা হারিয়ে ফেলে তবে তার সঙ্গে সঙ্গে সেই স্থানের সৌন্দর্যও আপনা আপনি হারিয়ে যায়। ঠিক তেমনি ভাবে পাহাড়েরও একটি নিজস্ব ইকো সিস্টেম আছে এটি যদি নষ্ট হয়ে যায় তবে সেই পাহাড়টি তার সৌন্দর্য হারায়।

বাংলাদেশে পাহাড় বলতে আছে ওই পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে। আরো ভালো ভাবে বলতে গেলে আছে বান্দরবানে। কিন্তু সেই পাহাড়গুলোতে যে সৌন্দর্য বিদ্যমান তা পৃথিবীর অনেক দেশেই নেই। তার একটি হরো বগালেক। বাংলাদেশের সবচেয়ে উচু লেক। কিন্তু আমাদের দেশের এইসব সৌন্দর্য আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। এমনিতেই পাহাড়ের দিক থেকে আমরা কাঙাল, আবার সেই পাহাড়ে পড়ছে মানুষের হাত। একদিকে পাহাড় কেটে সমতল ভূমি বানানোর প্রচেষ্টা আবার অন্যদিকে নগরায়ন। কেউ কেউ পাহাড়কে সুন্দর করার নামে নির্বিচারে এর সৌন্দর্য ধ্বংস করছে। তাইতো আজ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতে উঠলে চোখে পড়ে বিশ্রামাগার নামক বিশাল ছাউনি। যেটা সরাসরি প্রকৃতি সৃষ্ট একটি সৌন্দর্যকে কৃত্রিমতায় বেধে ফেলার প্রচেষ্টারই নামান্তর। কিন্তু আমরা আমাদের পাহাড় কে দেখতে চাই তার মতো করে। যে সৌন্দর্য দেখে যুগ যুগ ধরে মানুষ এর হাতছানি তে সাড়া দিয়েছে। আমরা চাই আমাদের পাহাড় বাচুক আমাদের মতো করে। কোন আলগা অলঙ্কার দিয়ে এর সৌন্দর্য বৃদ্ধির নামে একে আর কলুুষিত না করি। এবং পাহাড় কে আকড়ে ধরে যে প্রাণীসমাজ আছে তাদের বাঁচতে দেই তাদের মতো করে। তাদের ইকোসিস্টেম যদি নষ্ট করি তাহলে মনে রাখা উচিৎ এর প্রভাব একদিন আমাদের উপরও এসে পড়বে। তাই পাহাড় বাচুক তার মতো করেই।

লেখক: মাসুক আহমেদ

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×