somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অলি আউলিয়ার ব্যাপারে মানুষের ভূল আকিদাহ এবং কোরআনের আলোকে অলি আউলিয়ার প্রকারভেদ

২৮ শে মে, ২০১১ রাত ৮:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(পীর অলি পুজারী সকল মুসলমান নামধারীদের ধর্মব্যবসায়ীদের জন্য)

আসসালামু আলাইকুম,
সকলের উপর আল্লাহর শান্তি রহমত বরকত বর্ষিত হোক। শান্তি বর্ষিত হোক সেই ব্যক্তির উপর যে হেদায়েতের অনুসরণ করে কাফেরদের মধ্য থেকে, মুশরিকদের মধ্যথেকে, মুনাফিকদের মধ্যথেকে এবং নাস্তিকদের মধ্যথেকে।

আল্লাহ বলেছেন,
সূরা আল ইমরান-৬৪> এসো সেই কথায় যা তোমাদের ও আমাদের মধ্যে এক
১। আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদত করি না।
অর্থ্যাৎ আল্লাহর আইনকানুন মানাও যেমন আল্লাহর ইবাদত তেমনি আল্লাহর কোরআনের আইন উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও মানব রচিত আইন মানা মানুষের ইবাদত। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।

২। তার সাথে কোন কিছু শরীক করি না।
অর্থ্যাৎ তার আদেশ সবার উপরে। তার আদেশের বা কোন আইন কানুন বিধিবিধান এর সাথে মানবরচিত আইন কানুন বা বিধি বিধানকে শরীক করিনা।

৩। আমাদের মধ্যে কাউকে আল্লাহ ছাড়া রব (আদেশদাতা বিধানদাতা ইলাহ হিসাবে) মানি না।

যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে বলে দাও, তোমরা স্বাক্ষী থাক আমরা মুসলিম (আত্মসমর্পণকারী আল্লাহর কাছে হোক সেটা নিজের ইচ্ছার পক্ষে হোক বা বিপক্ষে)।

সূরা বাকারাহ-১৩২> তোমরা মুসলিম না হইয়া মৃতু্বরণ করো না।
=============================================
অনেক মানুষ মনে করে অলি আউলিয়া, পীরগণ মৃতু্ বরণ করে না।
সূরা আল ইমরান-১৮৫> প্রত্যেক প্রাণীই মৃতু্র স্বাদ ভোগ করবে।
---------------------------------------------------------------------------------
অনেকে বলে অলি আউলিয়া গণ
মরার পরেও মানুষের কথা শুনে যখন মানুষ কবরের সামনে গিয়ে তাদের পুজা করে বা তাদের কাছে কিছু চায়।

আল্লাহ বলেন-
সূরা নমল-৮০> হে নবী আপনি মৃতুদের কথা শোনাতে সক্ষম নন।
একই কথা সূরা রুম এর ৫২ নং আয়াতেও বলা হইছে।
---------------------------------------------------------------------------------
অনেকে বলেন অলি আউলিয়াগণ মৃতু্র পর কথা না শুনলেও কবরে শোয়ানোর পর এবং মাজার বানানো পর কথা শুনেন।

আল্লাহ বলেন-
সূরা ফাতির -২২> হে নবী আপনি "কবরে" শোয়া ব্যক্তিকে শুনাতে সক্ষম নন।
---------------------------------------------------------------------------------
অনেকে বলে কবরবাসী অলি আউলিয়া সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে।
কবরবাসী সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-
সূরা নাহল-২১ > তারা মৃত, প্রাণহীন। কবে পুনরুত্থিত হবে জানে না।
---------------------------------------------------------------------------------
এই আকিদাহ বা বিশ্বাসগুলো আসে ফাজায়েলে আমল এবং কিছু রাস্তার পাশের গল্পের বই থেকে যেগুলোর সাথে কোরআন ও সহীহ হাদিসের কোন সম্পর্ক নেই।
---------------------------------------------------------------------------------

মানুষের মধ্যে একটা ভূল আক্বিদাহ আছে অলি আউলিয়ার ব্যাপারে। এই ভূল আক্বিদাহর মূলে আছে অজ্ঞতা, বাপ দাদাদের অনুসরণ এবং অন্ধ বিশ্বাস বা তাকলীদ।

অলি এক বচন বহুবচন আউলিয়া।

আউলিয়া মানে পরামর্শদাতা, রক্ষাকারী, সাহায্যকারী, দিকনির্দেশনাদানকারী ইত্যাদি।
---------------------------------------------------------------------------------
=> সূরা আরাফ এর ৩ নং আয়াতে বলা হইছে

اتَّبِعُواْ مَا أُنزِلَ إِلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ وَلاَ تَتَّبِعُواْ مِن دُونِهِ أَوْلِيَاء قَلِيلاً مَّا تَذَكَّرُونَ (3
তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের প্রতি পালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে অন্য আউলিয়াদের অনুসরণ করো না। "

তাফসির অনুযায়ী এখানে বহুবচন আউলিয়া মানে কোরআন হাদিস বাদ দিয়ে পরামর্শ দানকারী ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে।
---------------------------------------------------------------------------------
=> সূরা হামিম আস সিজদা এর ৩১ নং আয়াতে ফেরেশতারা বলে "নাহনু আউলিয়া উকুম ফিল ফায়াতিদ দুনিয়া" অর্থ্যাৎ আমরাই (ফেরেশতারাই) তোমাদের আউলিয়া দুনিয়াতে এবং আখিরাতে।

এখানে আউলিয়া মানে সাহায্যকারী।

---------------------------------------------------------------------------------

=> সূরা আরাফ এর ৩০ নং আয়াতে বলা হয়েছে

তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে শয়তানকে আউলিয়া বানিয়ে নিয়েছে।

এখানে আউলিয়া মানে বন্ধু।
---------------------------------------------------------------------------------

=> সূরা আনকাবুত এর ৪১ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন

"যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্য কে আউলিয়ারূপে গ্রহণ করে তাদের দৃষ্টান্ত মাকড়সা"

এখানে আউলিয়া মানে সাহায্যকারী।

---------------------------------------------------------------------------------

সূরা বাকারা-২৫৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন

যারা ঈমান এনেছে তাদের অলি (অভিভাবক) আল্লাহ। তিনি তাদেরকে বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। আর যারা কুফুরী করে তাদের আউলিয়া (অভিভাবক) তাগুত (আল্লাহর বিদ্রোহী হোক সেটা আদেশের মাধ্যমে বা আইন কানুন এর মাধ্যমে)। সে তাদের কে আলো থেকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়।

এখানে আউলিয়া মানে অভিভাবক।
---------------------------------------------------------------------------------

=> সূরা নিসা-৭৫ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, "তোমাদের কি হলো তোমরা আল্লাহর জন্য যুদ্ধ করছ না দুর্বল সেই পুরুষ নারী ও শিশুদের পক্ষে যারা বলে হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর, জালিম জাতি থেকে আমাদের রক্ষা কর। আমাদের নিকট তুমি তোমার অলি পাঠাও।

এখানে কি বাবে রহমতের পেট মোটা কোন পীর, বুজুর্গের কথা বলা হচ্ছে নাকি একে-৪৭ ধারী সেই যুদ্ধার কথা বলা হচ্ছে। এখানে অলি আউলিয়া বলতে বলা হচ্ছে মুজাহিদদের কথা। কোন পেট মোটা পীর এর কথা না। না শাহজালাল না শাহপরান। মানুষ যখন সন্ত্রাসীদের কবলে পড়ে তখন বলে বাঁচাও বাঁচাও মানে যদিও সে বাঁচতে চায় তবুও সে চায় কোন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে রক্ষা করুক।

অর্থ্যাৎ আউলিয়া মানে যারা জিহাদ করে তারা।

=========================================

সর্বশেষ আল্লাহর ওয়ালি বা অলি হতে হলে যা লাগে তা হল

সূরা ইউনুস-৬২-৬৩> মনে রেখো যারা আল্লাহর অলি, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে, না তারা চিন্তিত হবে। (অলি তারাই) যারা ঈমান এনেছে এবং ভয় করতে রয়েছে। তাদের জন্য সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে।

সূতরাং আল্লাহর অলী হতে হলে জাস্ট ঈমান আনতে হবে এবং আল্লাহকে ভয় করতে হবে। যেই আল্লাহর উপর ঈমান আনবে এবং আল্লাহ কে ভয় করবে মূলত তারাই আল্লাহর অলী।

এছাড়াও আরো অনেক কিছু আছে।

Allah know the best.
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×