somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নবীর সুপারিশ ছাড়া কেউ কি জান্নাতে যাবে?

২১ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৪:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশিষ্ট ব্লগার কর্ণেল ছামুরাই বলিলেন পৃথিবীর সবাইকেই নবীর সুপারিশ নিতে হইবে। কেহ নবীর সুপারিশ ছাড়া জান্নাতে যাইতে পারিবে না। তিনি দলিলও পেশ করিলেনঃ-

হজরত আমাস (সা.) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূল পাক (সা.) বলেন, যখন কেয়ামত হবে তখন মানুষ জনসমুদ্রের ভিড়ের মধ্যে হুমড়ি খেতে থাকবে। তারা তখন হজরত আদম (আ.)-এর কাছে আরজ করবে, আপনি আমাদের জন্য আল্লাহপাকের কাছে সুপারিশ করুন। তিনি বলবেন, আমি উহার উপযুক্ত নই বরং তোমরা আল্লাহর খলিল হজরত ইব্রাহীম (আ.)-এর কাছে যাও, কেননা তিনি হলেন আল্লাহপাকের অন্তরঙ্গ বন্ধু। তারা ইব্রাহীম (আ.)-এর কাছে হাজির হয়ে এরূপ আরজ করলে তিনিও বলবেন, আমি উহার উপযুক্ত নই। তোমরা ঈসা (আ.) এর কাছে যাও। যিনি হলেন রুহুল্লাহ। অতঃপর তারা হজরত ঈসা (আ.)-এর কাছে গিয়ে ওই কথা বলবে। তিনি বলবেন, আমি এ কাজের লায়েক নই। তোমরা বরং মুহাম্মদ (সা.)-এর খেদমতে যাও। তখন তারা আমার কাছে আসবে এবং আমি বলব, হা, আমি এ জন্য আছি। অতঃপর আমি আল্লাহপাকের কাছে অনুমতি চাইলে আমাকে অনুমতি দেবেন এবং কতগুলো প্রশংসাবাণী আমার অন্তরে ঢেলে দেবেন, যেগুলোর দ্বারা আমি প্রশংসা করব কিন্তু সেগুলো এখন আমার কলবে অনুপস্থিত। অতঃপর আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির জন্য সিজদা করব। তখন বলা হবে, হে মুহাম্মদ আপনি মাথা উঠান এবং যা খুশি বলুন, আজ আপনার কথা শোনা হবে। যা ইচ্ছা প্রার্থনা করুন দেওয়া হবে। আর সুপারিশ করুন। আপনার সুপারিশ কবুল করা হবে। আমি তখন বলব, হে আমার পালনকর্তা, আমার উম্মতকে রক্ষা করুন। তখন বলা হবে_ যান, যার দিলে একটা ভুট্টা পরিমাণও ঈমান আছে তাকে দোজখ হতে বের করে নেন। [বুখারী হাদিস]

=> এখানে উক্ত ব্লগার হয়ত ভালো মতো হাদিসটি লক্ষ করেন নি। হাদিসের শেষের লাইনটা লক্ষ করলেই সেটা বুঝা যায়। সেখানে আছে, দোজখ থেকে বের করে নেন। তার মানে দোজখীদের দোজখ থেকে বের করে নেন। দুনিয়ার জীবনে তাদেরই সুপারিশ দরকার হয় যাদের ত্রুটি বিচ্যুতি আছে। যেমন কারো চাকরীতে মামা-চাচার সুপারিশ লাগে। কারণ সুপারিশ ছাড়া চাকরী পাওয়া তার পক্ষে সম্ভব না।

উপরের হাদিস দিয়ে তিনি বললেন সবাইকেই নবীর সুপারিশ নিতে হবে। কথাটা ভূল।উনার কথা যদি ধরে নেই সঠিক, তাহলে প্রশ্ন জাগে, সাহাবারা কি জাহান্নামে যাবেন?

মোট কথা আল্লাহ কোরআনে বলেছেন,
সূরা ওয়াক্বিয়া-৫৬:

وَكُنتُمْ أَزْوَاجًا ثَلَاثَةً

07 এবং (কিয়ামতে) তোমরা তিনভাবে বিভক্ত হয়ে পড়বে।

فَأَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ

08 যারা ডান দিকে, কত ভাগ্যবান তারা।

وَأَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ
09 এবং যারা বামদিকে, কত হতভাগা তারা।

وَالسَّابِقُونَ السَّابِقُونَ

10 অগ্রবর্তীগণ তো অগ্রবর্তীই।

أُوْلَئِكَ الْمُقَرَّبُونَ

11 তারাই নৈকট্যশীল,

=> এই তিনভাগে বিভক্ত হওয়া দলগুলোর অগ্রবর্তী দলের কি কোন সুপারিশ প্রয়োজন? কখনোই না। বরং তারা ডাইরেক্ট জান্নাতে যাবে। সেই অগ্রবর্তী দলের সাথী হবেন নবীগণ, সাহাবাগণ, শহীদগণ। এরাই হবেন জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী। কিন্তু ছামুরাই সাহেব এই শহীদদের ক্ষেত্রেও সুপারিশ ওয়াজিব করে দিলেন। যখন আমি দলিল সহকারে তার উত্তর দিলাম। কিন্তু বালটায় বুঝারও চেষ্টা করে নাই, জানারও চেষ্টা করে নাই। উল্টা বুঝা শুরু করছে। আল্লাহ এই মিথ্যুকরে হিদায়েত দান করুন। আমীন।

=============================================

দ্বিতীয়ত তাবলীগ জামাতের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে তিনি বললেন,
কর্ণেল সামুরাই বলেছেন: আমার এলাকায় যারা দাওয়াত দিতে এসেছিল তারা তো, আমাকে সুন্দর করে বোঝালো, লা ইলাহার দাওয়াত মানে রিজিকদাতা, আরোগ্যকারী সবকিছূর মালিক হিসাবে আমি যেন আল্লাহকে মেনে নিই। এবং তারা বেশভালো করেই ব্যাখ্যা করলো, কোন ওষুধের ক্ষমতা নেই, আরোগ্য করার বরং আরোগ্যের মালিক স্বয়ং আল্লাহ। এর অর্থ- তারা সত্যিকার অর্থেই কালিমার প্রচারণা করছে।

এ পর্যায়ে আমি তাকে বলছিলাম লা ইলাহার ব্যাখ্যা যদি এই হয় যে
=> আল্লাহ রিজিকদাতা,
=> আরোগ্যকারী এবং
=> সবকিছুর মালিক। তাহলে আপনি লা ইলাহার সঠিক মানেই বুঝেন নাই।

এ পর্যায়ে তিনি যেন আকাশ থেকে পড়লেন। পরে আমি দলিল দিলাম যে এগুলো মক্কার কাফেররাও বিশ্বাস করত।


শুনে অবাক হলেও দেখেন আল্লাহ কি বলেন,
কাফেরা বিশ্বাস করতো আসমান জমিনের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ।
সূরা লোকমান-৩১:২৫> আপনি যদি তাদেরকে (কাফের মুশরিকদের) জিজ্ঞেস করেন, নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল কে সৃষ্টি করেছে? তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ।

মক্কার কাফেরাও সৃষ্টিকর্তা হিসেবে আল্লাহকেই মানতঃ-
সূরা যুখরুখ-৪৩:৮৭> যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তবে অবশ্যই তারা বলবে আল্লাহ।

মক্কার কাফেরা বিশ্বাস করত রিজিকদাতা আল্লাহ
সূরা সাবা-৩৪:২৪> বলুন, নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল থেকে কে তোমাদের কে রিযিক দেয়। বলুন, আল্লাহ।

মক্কার কাফেরা বিশ্বাস করতো আকাশ থেকে পানি দেন মাটিকে সঞ্জীবিত করেন আল্লাহ
সূরা আনকাবুত-২৯:৬৩> যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করে, অতঃপর তা দ্বারা মৃত্তিকাকে উহার মৃত হওয়ার পর সঞ্জীবিত করে? তবে তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ।


উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, আবু জেহেল আল্লাহ রিজিকদাতা হিসেবে আল্লাহকে মানত, সৃষ্টিকর্তা হিসেবে আল্লাহকে মানত, আকাশ থেকে বৃষ্টিবর্ষণকারী হলেন আল্লাহ মানত, নভোমন্ডল-ভূমন্ডল এর মালিক হিসেবে আল্লাহকে মানত। তাহলে কেন নবীজি সাঃ এর সাথে কাফেরদের এত বিরোধ?

লা ইলাহার মানে যদি এইগুলাই হতো তাহলে নবীর সাথে তো কাফেরদের বিরোধ হওয়ার কোন কারণই থাকে না। তাই আমি বলেছি সামুরাই সাহেব আপনি, লা ইলাহার মানে বুঝার চেষ্টা করেন। লা ইলাহার মানে বুঝেছে আবু লাহাব, আবু জেহেলরা। তাই ডাইরেক্ট এত প্রিয় ব্যক্তি আল আমিন উপাধি প্রাপ্ত ব্যক্তি শত্রুতে পরিণত হয়ে গেছে। এটাই যুগে যুগে চলে আসতেছে।

লা ইলাহার মানে জানার চেষ্টা করার আহবান করায় তিনি আমার উপর ক্ষেপে গেলেন। জ্ঞানও খাটাইলেন না। বুঝার চেষ্টাও করলেন না। দলিলও দিতে পারলেন না। পারলেন শুধু একটা পোষ্ট দিতে আমাকে নিয়ে যেখানে তিনি মিথ্যুকের মতো ছাগু ট্যাগ দিয়ে নাস্তিকদের নিকট কান্দাকাটি শূরু করলেন। নাস্তিকরাও তাকে স্বান্তনা দিল। পিচ্চি বাবুদের মুখে ফিডার দিলে যেমন চুপ হয়, তেমনি নাস্তিকের আদরেও তিনি চুপ খেয়ে গেলেন। আর নাস্তিকদের অবস্থা হলো এরকম যে যদি ছাগু শব্দ শুনে তাহলে তেমন ভাবে লাফায়া পড়ে যেমন ভাবে কয়েকটি ক্ষুদার্থ কুকুরের সামনে একটি মাংশের টুকরো ফেলে দেওয়া হয়। যাই হোক ছাগু শব্দের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করা উচিত। ছাগুদের বিচার হোক, তাদের ছাল তুইলা লবন লাগাইয়া দেওয়া হোক সেটা আজ এই প্রধান দাবী।

তবে আজ সন্ধায় আসতেছে আমার "প্রচলিত তাবলীগ জামাত ও আমাদের ইসলামের ৩য় পর্ব"।

আল্লাহ আমাদের সত্য বলার ও আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×