somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামুতে কখন যে একটি দশক পেরিয়ে গেল টেরই পাইনি

০৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
সামুতে কখন যে একটি দশক পেরিয়ে গেল টেরই পাইনি

মেলবোর্ণের সূর্যাস্তের দৃশ্যটি গুগল থেকে নেয়া।

দেখতে দেখতে সামুতে কখন যে একটি দশক পেরিয়ে গেল টেরই পাইনি। পাব কি করে? ব্লগে আসলে তো। আসলে সত্যি কথা, এখন আর আগের মত ব্লগে তেমন আসার সুযোগ হয়ে ওঠে না। তার প্রমান এখানেই রয়েছে। ০১ লা জুলাই, ২০২০ এর পরে আর কোন পোস্ট না দেয়াই তার প্রমান। অবশ্য পোস্ট না দিলেও সামুতে একটু আধটু ঢু মেরে যাওয়া একেবারে বন্ধ ছিল না কখনোই। মাঝেমাঝে ঠিকই এসেছি এবং পরিচিত অনেকের লেখাই পড়েছিও। সামুতে লগ ইন করে একটু পূর্বে দেখলাম, বয়স বেড়ে ১০ বছর হয়ে অতিক্রম করছে ৫ম মাস। বাহ, বেশ আনন্দের।

যা হোক, জীবনের নানান চড়াই উৎড়াইয়ে ব্যস্ততার মাঝেই কেটে যায় আমাদের মুঠি মুঠি মুহূর্তগুলো। আর এই মুহূর্তগুলো থেমে থাকে না এক লহমার জন্যও কখনো। গহীন নিরবতায় বরং নিরন্তর ধাবমান মুহূর্তরা। আর নিরন্তর ধাবমান এই মুহূর্তের কাটার সাথে আমাদের বয়সের কাটাও কিন্তু বেগবান একইরকম দূরন্ত গতিতে। কেউ কেউ বলেন, বয়স বাড়ে। আমারও মাঝেমাঝে এমনটা মনে হয়। মন বলে ওঠে, বয়স বেড়ে যাচ্ছে। আসলে বয়স কি আমাদের বাড়ে? না কি, কমে ক্রমান্বয়ে? যত দিনের হায়াত বরাদ্দ দিয়ে মহান মালিক পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন আমাকে, তার আর কতটা হাতে আছে? তার অধিকাংশই যে খরচ হয়ে যায়নি, তার নিশ্চয়তা কি? বেশিরভাগটাই যে শেষ হয়ে যায়নি, সে কথা বলার যৌক্তিকতা কি? তাহলে বয়স বাড়ে- এ কথা বলার সুযোগ কোথায়? অতি সামান্য কিছু সময় যা এখনও সামনে রয়েছে, তাও তো কেটে যাচ্ছে খুবই দ্রুত। ফুরিয়ে যাচ্ছে দেখতে না দেখতেই। আর হায়াতের মূল বরাদ্দ থেকে মুহূর্তদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে ক্রমশঃ। তো, তাহলে বয়স বা হায়াত আমার সত্যিাকারার্থে বাড়ছে, না কি আসলে কমেই যাচ্ছে প্রতিনিয়ত?

বয়স এবং সময় আমাদের ক্রমেই ফুরিয়ে যাচ্ছে অথচ আমরা ডুবে আছি নিত্য উদাসীনতায়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘মানুষের হিসাবের সময় ঘনিয়ে এসেছে, অথচ তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে আছে।’ -সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ০১

জীবন পথের বাঁকে বাঁকে নানা কিছুর সম্মুখীন হতে হয় আমাদের। সুখ-দুঃখের মিশেলেই আমাদের অতিশয় ক্ষুদ্র পার্থিব এই জীবন। ব্যাধি ও জরাগ্রস্ত হয়ে মৃত্যুর পথে এগিয়ে যায় এখানে প্রতিটি প্রাণ। কাজেই আমাদের সময় সচেতন হতে হবে। আল্লাহ তাআ'লা বলেন, ‘তিনি দুর্বল অবস্থায় তোমাদের সৃষ্টি করেন; তারপর দুর্বলতার পর শক্তি দেন, আবার শক্তির পর দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য।’ -সুরা রুম, আয়াত : ৫৪

অন্যত্র তিনি বলেন, ‘তিনি তোমাদের মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, পরে শুক্রবিন্দু থেকে, তারপর জমাট রক্ত থেকে, তারপর তোমাদের শিশুরূপে বের করেন, তারপর হও যৌবনপ্রাপ্ত, তারপর উপনীত হও বার্ধক্যে। তোমাদের কারো বা আগেই মৃত্যু হয়ে যায়।’ -সুরা মুমিন, আয়াত : ৬৭-৬৮

এক হাদিসে নবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

‘পাঁচটি বিষয়কে অপর পাঁচটি বিষয় আগমনের আগে গনিমত মনে করো। বার্ধক্যের আগে যৌবনকে, অসুস্থতার আগে সুস্থতাকে, দরিদ্রতার আগে সচ্ছলতাকে, কর্মব্যস্ততার আগে অবকাশকে এবং মৃত্যুর আগে জীবনকে।’ -মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ৩৫৪৬০

অন্য এক হাদিসে তিনি বলেন, ‘দুটি নেয়ামতের মাধ্যমে যথাযথ উপকৃত হতে অনেক মানুষই ব্যর্থ হয়। তা হচ্ছে- সুস্থতা ও অবসর সম।’ -বুখারি, হাদিস : ৬০৪৯

খলিফাতুল মুমিনীন হযরত ওমর (রা.) তার কোনো এক বক্তব্যে একটি অসাধারণ এবং শিক্ষণীয় উক্তি করেছিলেন। তিনি বলেন,

‘তোমার কাছে হিসাব চাওয়ার আগে নিজের হিসাব করে নাও, তোমার কাজ পরিমাপ করার আগে নিজেই নিজের কাজের পরিমাপ করে নাও।’ -তিরমিজি, হাদিস : ৪/৬৩৮

এমনটাই হওয়া উচিত প্রকৃত বিশ্বাসী ব্যক্তির শান। প্রকৃত বিশ্বাসী নিজের কথা, কাজে স্বচ্ছ থাকবেন, এটাই সত্য। অপরের অধিকারে হস্তক্ষেপ করবেন না। অন্যকে হেয় করবেন না। কাউকে কষ্ট দিবেন না। ঠকাবেন না। মহান স্রষ্টা আল্লাহ তাআ'লার হক এবং অধিকারসমূহও যথাযথভাবে আদায় করতে সচেষ্ট থাকবেন।

অতএব, অতি সংক্ষিপ্ত আমাদের এই মানব জীবনে সময়ের সদ্ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। সামনের দিনগুলোতে পরিশুদ্ধ আমল এবং নিষ্ঠাপূর্ণ ইবাদতের প্রতিশ্রুতির সাথে সাথে জীবনকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর দৃপ্ত অঙ্গীকারে আবদ্ধ হই আমরা।

ঝঞ্জা বিক্ষুব্ধ আগুন সময় পাড়ি দিয়ে ব্লগের সুদিন দুর্দিনে এই কমিউনিটির সাথেই যারা ছিলেন, আছেন আজও পুরাতন সেইসব ব্লগারদের অভিনন্দন জানাই। পাশাপাশি নতুন নতুন অনেক ব্লগার যুক্ত হয়েছেন, হচ্ছেন এবং হবেন এখানে- তাদেরকেও আন্তরিক অভিবাদন। নতুন পুরাতন সকলের পদচারনায় মুখর হোক বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ অনলাইন পাঠশালা সামহোয়্যার ইন ব্লগ- এই প্রত্যাশাই আজকের এই দিনে। ব্লগ মডারেটর, ব্লগ পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভকামনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:২৬
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×