somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্মৃতিচারণঃ বাবার গায়ের ঘাম কখনো শুকায় না

০৪ ঠা মে, ২০১৯ দুপুর ১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১৯৮৩ সালে আমার বিয়ের মাত্র এক বছর পর আমার প্রথম পুত্রের জন্ম হয়। তবে দ্বিতীয় পুত্রের জন্ম হয় তার আট বছর পর। আমার এই দুটিই সন্তান। প্রথম পুত্রের জন্মের পর আমি এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে পড়ি, যা জীবনে কোনদিন মোকাবিলা করতে হয়নি। এ সম্পর্কে আমার তেমন ধারনাও ছিল না। এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার সৃষ্টি হয় আমার জীবনে।

গ্রাম থেকে শহরে চলে আসা আমাদের পরিবারে পাঁচ ভাই এক বোনের মধ্যে আমি ছিলাম তৃতীয়। জন্মের প্রায় তিন মাস পর থেকেই আমি শহরে মানুষ হয়েছি। বাবা শহরে সাড়ে পাঁচ কাঠা (আনুমানিক দশ শতাংশ) জমি সহ একটা বাড়ি কিনেছিলেন এবং সেখানে পরে আরও একটা বাড়ি তৈরি করেছিলেন। গ্রামের জমি জমা থেকে প্রাপ্ত আয় এবং আমার বাবার ওকালতি পেশার সূত্রে পাওয়া রোজগারের টাকায় আমাদের সংসার বেশ ভালোভাবেই চলে যেত। আমরা কোনদিন কোন অভাব অনটনে পড়িনি। কিন্তু আমার প্রথম পুত্রের জন্মের পর মুদ্রার এই পিঠটা আমি জীবনে প্রথম দেখতে পেলাম।

সরকারি চাকরি করলেও খুব বেশি বেতন পেতাম না। তখনকার দিনে সরকারি চাকরির বেতনও কম ছিল। কিন্তু সেই টাকা স্বামী স্ত্রীর স্বচ্ছন্দে চলে যাওয়ার জন্য যথেষ্টই ছিল। তা’ ছাড়া একান্নবর্তী সংসারে খাদ্যদ্রব্য থেকে শুরু করে সব কিছুই বাবা জোগান দিতেন। আমরা জমির ধানের ভাত খেতাম এবং বাড়ি ভাড়ার কোন ব্যাপার তো ছিলই না। আমার বিবাহিত বড় ভাই এবং আমার কাছ থেকে তিনি কোনদিন একটি পয়সাও নেননি। বরং আমরা কনট্রিবিউট করতে চাইলে তিনি হাসি মুখে বলতেন, তোমাদের নিজেদের খরচের জন্য পর্যাপ্ত টাকা পয়সা রেখে যদি কিছু বাঁচে তো তোমাদের মায়ের হাতে তুলে দিও। আমি বেঁচে থাকতে সংসার খরচের টাকা নিয়ে তোমাদের ভাবতে হবে না।

তো আমরা প্রতি মাসেই মায়ের হাতে কিছু না কিছু টাকা তুলে দিতাম। আমাদের অর্থ বিত্তের অভাব ছিল না বলে মা সেই টাকা থেকে একটি পয়সাও খরচ করতেন না। তিনি আমাদের দুই ভাইয়ের নামে ব্যাংকে এ্যাকাউন্ট খুলে সেই টাকা জমা করে রাখতেন। আমরা দুই ভাই কেউ সেটা জানতাম না। অনেক দিন পরে আমরা সেটা জানতে পারি। এই টাকা গুলো পরে আমাদের দুজনেরই খুব কাজে লেগেছিল।

আমার প্রথম সন্তানের জন্মের পর দুটো সমস্যা দেখা দিল। সে ঠিকমতো মায়ের বুকের দুধ না পাওয়ায় গরুর দুধ কিনে খাওয়ানো শুরু করতে হলো। কিন্তু গরুর দুধ হজম করতে না পারায় বাজার থেকে বিদেশী গুঁড়ো দুধ কিনে খাওয়াতে হতো। উচ্চমূল্যের কারণে এই দুধ কিনে খাওয়ানো আমার জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়ালো। দ্বিতীয় সমস্যা হলো বাচ্চার ঘন ঘন অসুখ বিসুখ। মাসে তিন চারবার তাকে ডাক্তারের কাছে নিতে হতো। কোন কোন মাসে ছয় সাতবারও নিতে হয়েছে। এ ছাড়া বাচ্চার অন্যান্য খরচ তো আছেই। এসব কারণে আমার বেতনের প্রায় পুরো টাকাটাই বাচ্চার জন্য খরচ হয়ে যেত। মাসের দশ পনের দিন যেতে না যেতেই আমার পকেট ফাঁকা হয়ে যেতো। জরুরী প্রয়োজন হলে বাধ্য হয়ে মায়ের কাছে হাত পাততে হতো। তবুও বাচ্চার দুধ ও চিকিৎসার ব্যাপারে আমি কোন অবহেলা করিনি। ওর মায়ের মুখে কখনো অনিশ্চয়তার ছায়া পড়তে দেইনি। কিন্তু এরকম পরিস্থিতির মধ্যে জীবনে এই প্রথম পড়ার কারণে আমি নিজেই সব সময় অনিশ্চয়তা ও দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকতাম।

এইভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর আমার এক বন্ধুর পরামর্শে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিলাম। চাকরির নির্দিষ্ট বেতনের টাকায় যে বেশিদিন এভাবে চলা যাবে না, সেটা বেশ বুঝতে পারছিলাম। কিন্তু ব্যবসার অভিজ্ঞতা না থাকায় ভয় ভয়ও লাগছিল। তবু একদিন সাহস করে মা বাবা দুজনকে আমার ইচ্ছার কথা খুলে বললাম। মা রাজি হলেন না। কিন্তু বাবা কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে দুটো প্রশ্ন করলেন আমাকে। আমি কী ব্যবসা করবো এবং চাকরি ঠিক রেখে ব্যবসা করতে পারবো কী না। আমার উত্তরে বাবা সন্তুষ্ট হয়েছিলেন কী না জানি না। তবে তার তৃতীয় প্রশ্ন শোনার পর মনে হলো নিমরাজি হলেও তিনি রাজি আছেন। তার তৃতীয় প্রশ্নটা ছিল, ব্যবসা শুরু করতে প্রাথমিকভাবে কত টাকার প্রয়োজন?

আমার সেই বন্ধুর সাথে পরামর্শ করে প্লাস্টিক আইটেমের ব্যবসা করার জন্য শহরের কেন্দ্রস্থলে পঞ্চাশ হাজার টাকা অগ্রীম দিয়ে পাঁচ বছরের চুক্তিতে একটা দোকান ভাড়া নিলাম। সেই সময় ঢাকার ইমামগঞ্জ, মিটফোর্ড ও সদরঘাট ছিল প্লাস্টিক আইটেমের পাইকারি মোকাম। বন্ধু নিজে ব্যবসায়ী ছিল বলে এসব তথ্য তার জানা ছিল। প্রথম দফায় তাকে সাথে নিয়ে ঢাকার ইমামগঞ্জ থেকে ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে এক ট্রাক মাল নিয়ে এলাম। চাকরিজীবী মানুষের পক্ষে দোকানে বসা সম্ভব নয় বলে একজন ম্যানেজার ও একজন কর্মচারী নিয়োগ দিলাম। তারা সকাল আটটায় দোকান খুলে সারাদিন বেঁচাকেনা করবে আর আমি বিকেল পাঁচটায় অফিস শেষ করে দোকানে গিয়ে বসবো। রাত নয়টা পর্যন্ত দোকানদারি করে হিসাব নিকাশ শেষে দোকান বন্ধ করে যে যার বাড়ি চলে যাবো।

মোটামুটি এই নিয়মে তিন চার মাস ব্যবসা করার পর একদিন চূড়ান্ত হিসাব করে দেখলাম, দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ও কর্মচারী খরচ বাদ দিয়ে আমার নিট ১৭ হাজার টাকা মুনাফা হয়েছে। মনটা আনন্দে নেচে উঠলো। তখনকার সময়ে এই মুনাফা যথেষ্ট সন্তোষজনক ছিল। বিশেষ করে নতুন দোকানের পক্ষে। কিন্তু আমার শরীর খারাপ হয়ে গেল। অফিস ও দোকান মিলিয়ে প্রতিদিন সকাল সাতটা আটটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত একটানা পরিশ্রমে কাহিল হয়ে পড়লাম। তখন সরকারি অফিসে একদিন সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। নিজে দেখে শুনে মাল না কিনলে সমস্যা হয় বলে মাসে দুই তিনবার আমাকে ঢাকা যেতে হতো। কিন্তু প্রতি মাসে তো অফিস আমাকে দুই তিনবার ছুটি দিবে না। তাই সাপ্তাহিক ছুটির আগের দিন সরাসরি অফিস থেকে দোকান হয়ে বাস স্ট্যান্ডে চলে যেতাম এবং নাইট কোচে ঢাকা রওনা হয়ে যেতাম। পরদিন মোকাম থেকে মাল কিনে ট্রান্সপোর্টে বুকিং দিয়ে আবার নাইট কোচে ফিরে আসতাম। সকালে বাস থেকে নেমে আর বাড়ি যাওয়ার সময় থাকতো না। তাই রেস্টুরেন্টে নাস্তা খেয়ে সরাসরি অফিসে চলে যেতাম। এভাবে দীর্ঘদিন ব্যবসা ও চাকরি করার ফলে শরীর খারাপ হয়ে গেল। শরীরে শক্তি পেতাম না। কিন্তু বাচ্চার চেহারাটা চোখের সামনে ভেসে ওঠার সাথে সাথে নতুন করে এনার্জি পেয়ে যেতাম। ব্যবসাটাও ভালো চলছিল। পরিশ্রমকে আর পরিশ্রম মনে হতো না।

এইভাবে দুই বছর যাওয়ার পর আল্লাহর রহমতে আমার সামনে আরও একটা দারুন অফার এলো। আমার খালু শশুর অত্যন্ত ধনী মানুষ ছিলেন। উত্তর বঙ্গের প্রথম ও বৃহত্তম কোল্ড স্টোরেজ ‘উত্তরা কোল্ড স্টোরেজ’ ও ‘উত্তরা সিমেন্ট ফ্যাক্টরি’র মালিক ছিলেন তিনি। এ ছাড়াও তার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজে আরও অনেক ব্যবসা ছিল। তিনি একদিন আমাকে একটা প্রস্তাব দিলেন। বললেন, ‘তুমি যদি আলুর ব্যবসা কর, তাহলে আমি তোমাকে হেল্প করতে পারি।’ বিস্তারিত আলোচনার পর তিনি বললেন, ‘বর্তমানে তুমি যে ব্যবসা করছো, সেটা বন্ধ করতে হবে না। চাকরিও ছাড়তে হবে না। তুমি আলু কিনে আমার কোল্ড স্টোরেজে রেখে দেবে। বিক্রির সময় হলে আমার ম্যানেজার তোমাকে ফোন করে জানিয়ে দেবে। তখন তুমি একটু সময় করে এসে আলু বিক্রি করে দিও। এতে তোমার লাভ হবে।’ তিনি আরও বললেন যে, ‘তুমি যেহেতু এই ব্যবসা করনি, তাই আলু চিনতে পারবে না। তোমার হয়ে আমার ম্যানেজারই হাট থেকে আলু কিনে দেবে। সেই আলু পরিস্কার করা, শুকানো এবং মেডিসিন দিয়ে বস্তাবন্দী করে ষ্টোরে রাখা এই সমস্ত কাজ লেবার দিয়ে আমার ম্যানেজারই করে দেবে। আমার এ্যাকাউন্টেন্ট তোমাকে ফোন দিলে তুমি স্টোরের অফিসে এসে আলুর দাম, বস্তার দাম, মেডিসিন ও লেবার খরচ বাবদ যা হবে সেই টাকাটা দিয়ে দিও। আর স্টোরের ভাড়া তুমি আলু বিক্রি হবার পরে দিও। আশা করি এতে তোমার চাকরি ও প্লাস্টিকের ব্যবসার কোন ক্ষতি হবে না।’ খালু শশুর আন্তরিকভাবেই চাইছিলেন যে আমার আয় রোজগার আরও বৃদ্ধি পাক। আমি রাজি হয়ে গেলাম এবং আলুর ব্যবসায় এক লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করলাম।

দুই সিজন ব্যবসা করার পর আমার মনে হলো বিনিয়োগ অনুপাতে যথেষ্ট মুনাফা হচ্ছে না। কিছুটা সংকোচের সাথে খালুকে কথাটা বলতেই তিনি হেসে বললেন, ‘তুমি ভুল বলনি। আমি যাচাই করে দেখলাম তোমার ধৈর্য কেমন এবং তুমি ব্যবসা করতে পারবে কী না। এখন আলুর আসল ব্যবসার কথা বলি। মোকাম (হাট) থেকে আলু কিনে স্টোরে রাখলে খুব বেশি লাভ হয় না। কখনো কখনো লসও যায়। তোমাকে আলুর আবাদ করে সেই আলু স্টোরে রাখতে হবে।’ আমি বললাম, ‘এটা তো আমার পক্ষে সম্ভব নয় খালু। চাকরি ও দোকানদারি করে এই চাষাবাদের কাজ করবো কখন? তা’ ছাড়া আমার তো সেরকম জমি জমা নেই (যদিও গ্রামে বিঘা পাঁচেক জমি ছিল। কিন্তু সে জমি অনেক দূরে এবং ধান চাষের জন্য বর্গা দেওয়া ছিল)।’ খালু বললেন, ‘এসব নিয়ে ভেবো না। কোল্ড স্টোরের কাছাকাছি আমার তিনশো বিঘা জমি আছে, যেখানে আলুর আবাদ হয়। আমার জমির আশেপাশে কুড়ি পঁচিশ বিঘা জমি তোমাকে লিজ নিয়ে দেব। এই এলাকার মানুষ খুব অলস। তারা নিজেরা পরিশ্রম না করে তাদের জমি বিঘাপ্রতি এক হাজার টাকায় লিজ দিয়ে দেয়। তুমি জমি লিজ নিয়ে আমার ম্যানেজারকে বুঝিয়ে দেবে। তারপর যা করার আমার ম্যানেজারই করবে। জমি চাষ করানো থেকে শুরু করে আলু বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ সমস্ত কাজ লেবার দিয়ে সে করিয়ে দেবে। শুধু আলু উঠার সময় তুমি একবার এসে কত বস্তা আলু স্টোরে উঠলো সেটা দেখে স্টোর থেকে শ্লিপ নিয়ে যাবে। বীজ, সার কীটনাশক, পানি সেচ, লেবার খরচ ইত্যাদি বাবদ যত টাকা খরচ হবে, তা’ এ্যাকাউন্টেন্ট সাহেবকে পেমেন্ট দিয়ে একটা পেইড ভাউচার নিয়ে যাবে। হয়তো একদিনে কাজগুলো হবে না। তুমি দুই দিন সময় হাতে নিয়ে এসো। ঠিক আছে?’

ইতিমধ্যে আমার দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়েছে। বড় ছেলেটাকে স্কুলে পৌঁছানো, অফিস ও দোকানে যাওয়া, কোল্ড স্টোরেজে যাওয়া ইত্যাদি কাজে সময় বাঁচানোর জন্য একটা মোটর সাইকেলও কিনে ফেলেছি। দোকানে একটা ল্যান্ডফোনও নিয়েছি (তখন মোবাইল ফোন ছিল না)। খরচ ও দায়িত্ববোধ আরও বেড়েছে। বিশ্রামের কোন সুযোগ নাই। সাপ্তাহিক ছুটির একটা দিনও বাড়িতে থাকতে পারি না। কারণ, ঢাকায় মাল কিনে ট্রান্সপোর্টে এমনভাবে বুকিং দেই যে ছুটির দিনে যেন ট্রাক এসে পৌঁছায়। তাতে সুবিধা হয় এই যে ট্রান্সপোর্ট থেকে মাল ছাড়িয়ে নিয়ে ভ্যান যোগে আমার গোডাউনে তুলে (ব্যবসা ভালো চলায় দোকানের কাছাকাছি একটা গোডাউন ভাড়া নিয়েছিলাম) চালান অনুযায়ী মিলিয়ে নিতে পারি। আমার দোকানের ম্যানেজারকেও এ জন্য কষ্ট করতে হতো।

যাই হোক, খালু শশুরের পরামর্শ অনুযায়ী আল্লাহর নামে ২৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ফেললাম। আর উনি যেভাবে বলেছিলেন, সেভাবে আলুর ব্যবসা শুরু করে দিলাম। সেই দিনগুলোতে আমার গায়ের ঘাম কখনো শুকাতো না। বাড়িতে আরাম করে বসে এক বেলা ভাতও ঠিকমতো খেতে পারিনি। গায়ে ১০২ ডিগ্রী জ্বর নিয়ে সময়ের অভাবে ডাক্তারের কাছেও যেতে পারিনি। এ জন্য আমার স্ত্রী ও মা যে কত বকাঝকা করেছেন আমাকে ভাবলে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। আমি শুধু ভাবতাম, আমার বাবা কোনদিন আমাদেরকে ভাড়া বাসায় রাখেননি। আমাকেও আমার সন্তানদের জন্য নিজের বাড়ি করতে হবে, যেন ওদেরকে অন্যের বাসায় ভাড়া থাকতে না হয়। আমার বাবা কোনদিন আমাদেরকে বাজার থেকে চাল কিনে খাওয়াননি। আমাকেও আমার সন্তানদের জন্য জমি কিনে রেখে যেতে হবে। পড়াশুনা, পোশাক আশাক ও চিকিৎসার জন্য আমার বাবা কোনদিন আমাদেরকে অসুবিধায় পড়তে দেননি। আমি কেন আমার সন্তানদেরকে অসুবিধায় ফেলবো।

পরম করুণাময় আল্লাহর অসীম অনুগ্রহে আমি উপরের সবগুলো কর্তব্য ও দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পেরেছি। আমার দুই পুত্রের একজন এ্যাকাউন্টিং-এ মাস্টার্স ও এমবিএ করে এখন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা পদে চাকরি করে। আর এক পুত্র ইংলিশে মাস্টার্স করার পর ঢাকার একটি ইউএসএ-কানাডিয়ান ফার্মে চাকরি করে। শুধু আমি নিজে অত্যাধিক পরিশ্রমের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ২০০৬ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিয়েছি। দোকানের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছি। শুধু আলুর ব্যবসাটা এখনো সীমিত আকারে চালু আছে। একবার স্ট্রোক আর একবার হার্ট এ্যাটাক হওয়ায় ডাক্তার মোটর সাইকেল চালানো নিষেধ করে দিয়েছেন। জমির আয়, পেনশন এবং ছয়টি এক হাজার স্কয়ার ফুটের বাসা থেকে প্রাপ্ত ভাড়া দিয়ে আমার সংসার বেশ ভালোভাবেই চলে যায়। কষ্ট শুধু একটাই। মোটর সাইকেল চালাতে পারি না। হাঃ হাঃ হাঃ।


ছবিঃ নেট।
********************************************************************************************************************
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৫৫
৪১টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×